ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ক্যাম্পাসে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের আবরার ফাহাদ স্মরণসভা কর্মসূচিতে হামলা চালিয়েছে ছাত্রলীগ। এতে ছাত্র অধিকার পরিষদের অনন্ত ১০ নেতাকর্মী আহত হয়েছে। ছাত্রলীগের আক্রমণাত্মক অবস্থানের মুখে পণ্ড হয়ে যায় পূর্ব নির্ধারিত সমাবেশটি।
শুক্রবার বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে করা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।
হামলায় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি এম. এম মহিন উদ্দিন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব খান, সাংগঠনিক নাজিম উদ্দীন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সম্পাদক আল আমিন রহমান, উপ-দপ্তর সম্পাদক শিমুল খান, আব্দুর রাহিম, জুহুরুল হক হল ছাত্রলীগের সভাপতি কামাল উদ্দীন রানা, সাধারণ সম্পাদক রুবেল হোসেনসহ কেন্দ্রীয়, বিশ্ববিদ্যালয় ও হল শাখা ছাত্রলীগের শতাধিক ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা অংশ নেয়।
হামলায় ছাত্র অধিকার পরিষদের কর্মসূচির জন্য আনা চেয়ার ও মাইক ভেঙ্গে দেয়া হয়, পুড়িয়ে দেয়া হয় ব্যানারসহ কর্মসূচির আনুষাঙ্গিক কিছু জিনিসপত্র। ছাত্র অধিকারের নেতাকর্মীরা বাধা দেয়ার চেষ্টা করলে ছাত্রলীগের কর্মীরা তাদের উপর চড়াও হয়। এতে সমাবেশে যোগ দেয়া সংগঠনটির বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হন। এর মধ্যে ছাত্র অধিকার পরিষদের ঢাবি শাখার সাহিত্য সম্পাদক জাহিদ আহসানও ছিলেন। ঘটনার সময় পাটকেলের আঘাতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক নাজিম উদ্দীন আহত হয়।
ছাত্রলীগের অনুষ্ঠানে হামলার ঘটনায় জড়িত ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব খান বলেন, তারা (ছাত্র অধিকার) ক্যাম্পাসে বহিরাগত, মৌলবাদীদের নিয়ে কর্মসূচি পালন করে। আমরা তাদের জিজ্ঞাসা করতে আসি তারা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র কিনা। এ সময় তারা কিছু না দেখিয়ে আমাদের ওপর হামলা করে। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাদের প্রতিরোধ করে।
তবে আবরার ফাহাদ স্মৃতি সংসদের আহবায়ক আখতার হোসেন বিষয়টি পুরোপুরি অস্বীকার করে বলেন, আমাদের পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী স্মরণ সভা শুরু করার পরপরই প্রক্টরিয়াল টিমের উপস্থিতে আমাদের ওপর বিনা উসকানিতে হামলা চালায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। হামলায় আমাদের অন্তত ১০ জন আহত, দুইজন গুরুতর আহত হয়েছে। একজন রিক্সা চালকেরও মাথা ফেটে গেছে। আহতদের ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসা হয়েছে। আমরা কোনো দলীয় ব্যানারেও এই প্রোগ্রাম করিনি, আমরা প্রোগ্রাম করেছি আবরার ফাহাদ স্মৃতি সংসদের ব্যানারে। আমরা এই ন্যাক্কারজনক হামলায় ধিক্কার জানাই।
আমলার ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব খানের নেতৃত্বে শতাধিক নেতাকর্মী হামলা চালায়। ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা প্রথমে এসে কর্মসূচিতে অংশ নেয়া সবাই ঢাবি শিক্ষার্থী কিনা জানতে চায়। এ নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। পরে তারা অতর্কিত হামলা চালায়। এ সময় ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। স্মরণ সভার জন্য আনা অর্ধশতাধিক চেয়ার ভাঙচুর করা হয় ও ব্যানার জ্বালিয়ে দেয়া হয়।