গত ২৫-২৭ জুলাই অনুষ্ঠিত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় ন্যূনতম পাস নম্বর ছিল ৪০। কিন্তু পাস নম্বর তুলতে ব্যর্থ হয়েও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের ৬০ জন সন্তানকে পোষ্য কোটার অধীনে ভর্তি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
রোববার (৬ নভেম্বর) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. গোলাম সাব্বির সাত্তারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ভর্তি পরীক্ষা উপ-কমিটির সভায় ন্যূনতম পাস নম্বর ৪০ থেকে কমিয়ে ৩০ করে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানান জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক ড. প্রদীপ কুমার পান্ডে।
অধ্যাপক প্রদীপ কুমার পান্ডে বলেন, মোট আসনের ৫ শতাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তাদের সন্তানদের জন্য সংরক্ষিত। নতুন সিদ্ধান্ত মোতাবেক ভর্তি পরীক্ষায় ন্যূনতম ৩০ নম্বর প্রাপ্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তাদের সন্তানরা পোষ্য কোটায় ভর্তি হতে পারবেন।
তিনি আরো বলেন, এবছর পোষ্য কোটার ২০১টি সংরক্ষিত আসনের মধ্যে ন্যূনতম পাস নম্বর পেয়ে কৃতকার্য হয়েছে মাত্র ৬৫ জন শিক্ষার্থী। তাই ন্যূনতম পাস নম্বর ৪০ থেকে কমিয়ে ৩০ করে আরো ৬০ জন শিক্ষার্থীকে পোষ্য কোটায় ভর্তি করানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সংরক্ষিত আসনের মধ্যে বাকি ৭৬ টি আসনে কাউকে ভর্তি না করেই ফাঁকা রাখা হবে।
এর আগে, ২৪ অক্টোবর উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তারের সভাপতিত্বে ভর্তি উপকমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় পোষ্য কোটায় ভর্তির ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ন্যূনতম পাস নম্বর ৪০ থেকে কমিয়ে ৩০ করার প্রস্তাব দেয়। ‘সি’ ইউনিটে আবশ্যিকে ২৫ ও ঐচ্ছিকে ১০ নম্বর পাওয়ার শর্ত পূরণ করতে পারেননি এমন পোষ্য কোটার শিক্ষার্থীদেরও ভর্তি করার প্রস্তাব দিলে বেশির ভাগ সদস্য এতে অসম্মতি জানালে প্রস্তাবটি সভায় নাকচ করে দেয় কর্তৃপক্ষ।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, কোটার আওতায় থাকা শিক্ষার্থীরা এমনিতেই নানাবিধ সুযোগ-সুবিধা পেয়ে থাকেন। যেখানে পোষ্য কোটা রাখাটায় বিতর্কের বিষয় সেখানে পাস নম্বর কমানোর মধ্য দিয়ে তাদের আরো সুযোগ দেওয়ার কোনো যৌক্তিকতা পাওয়ায় যায় না। এমন সুযোগ দেওয়া মানে মেধাবী শিক্ষার্থীদের প্রতি অবিচার করা হবে বলে জানান শিক্ষার্থীরা।
প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী বকুল হোসেন বলেন, ঠিক কোন যুক্তিতে, কোন আইনের বলে রাবি প্রশাসন চাকরিরত শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তানদের এই ‘অনৈতিক’ সুযোগ দেওয়ার মনবাসনা নিলো, তা আমার বুঝে আসে না। তারা পাস না করলেও পাস নম্বর কমিয়ে কেন সুযোগ দেওয়া হবে? ধিক্কার জানায় এসব সুবিধা ভোগিদের,যারা সরকারি বেতন ভাতা পেয়েও সন্তানের উপযুক্ত করতে পারে না আবার কুঠিলতার সুযোগ নেয়।
যদি বিশ্ববিদ্যালয়ে এত বড় অনিয়ম হয়, তাহলে ভর্তিচ্ছু সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রতারণা করা হবে।’