সোমবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:৩৪ অপরাহ্ন




তেল, গ্যাস, বিদ্যুৎ ব্যবহার সীমিত করুন: প্রধানমন্ত্রী

তেল, গ্যাস, বিদ্যুৎ ব্যবহার সীমিত করুন: প্রধানমন্ত্রী: তেল, গ্যাস, বিদ্যুৎ ব্যবহার সীমিত করুন: প্রধানমন্ত্রী

আউটলুক বাংলা রিপোর্ট
  • প্রকাশের সময়: সোমবার, ৭ নভেম্বর, ২০২২ ৬:১৯ am
প্রধানমন্ত্রী সফর pm hasina un হাসিনা ইউএন হাসিনা শেখ প্রধানমন্ত্রী পিএম
file pic

করোনাভাইরাস মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে বিশ্বে যে অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিচ্ছে, তার প্রভাব বাংলাদেশেও পড়বে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এমন বাস্তবতায় দেশবাসীকে সতর্ক থাকার পাশাপাশি মিতব্যয়ী, সঞ্চয়ী ও খাদ্য উৎপাদন বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছেন সরকারপ্রধান।

নিজস্ব অর্থায়নে দেশের ২৫টি জেলায় নবনির্মিত ১০০টি সেতুর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

গণভবন প্রান্ত থেকে সোমবার সকালে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী। সুনামগঞ্জ, বরিশাল, খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রাম জেলা প্রান্ত থেকেও যুক্ত হয়েছিলেন জনপ্রতিনিধি ও সরকারি কর্মকর্তারাও।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘করোনাভাইরাস ও ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে যে সারা বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিচ্ছে, সেখানে আপনাদের সবাইকে একটু সতর্ক হতে হবে, সাশ্রয়ী হতে হবে এবং মিতব্যয়ী হতে হবে। নিজেদের সঞ্চয় বাড়াতে হবে। তেল, গ্যাস, পানি, বিদ্যুৎ যা ব্যবহার, সেই ব্যবহার সীমিত করতে হবে, যাতে অল্প খরচ করা যায়।’

খাদ্য উৎপাদনের ওপর গুরুত্বারোপ করে সরকারপ্রধান বলেন, ‘আপনাদের প্রতিটি এলাকায় যেখানে খালি জমি আছে, যত বেশি পারবেন খাদ্য উৎপাদন করবেন। ফলমূল, তরি-তরকারি যেটাই পারেন, যে যা পারেন উৎপাদন করবেন। হাঁস, মুরগি, ছাগল, গরু, ভেড়া মানে যা কিছু পান, পালন করতে হবে। নিজেদের উপার্জন নিজেদের করার চেষ্টা করতে হবে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী যে অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিচ্ছে, তার ধাক্কা যেন বাংলাদেশকে খুব বেশি ক্ষতি করতে না পারে। আঘাতটা লাগবেই, কারণ পৃথিবী একটা গ্লোবাল ভিলেজ, আমরা একই সঙ্গে। কাজেই একটা জায়গায় যদি এ রকম হয়, সারা বিশ্বে দেখা দেয়। সেই অভিঘাতটা বাংলাদেশেও আসে।

‘…আমাদের বাংলাদেশে আমরা আজকে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি করেছি, বিদ্যুৎ দিয়েছি। যদিও প্রতিটি জিনিসের দাম বেড়ে যাওয়ায় আমাদের বিদ্যুতে খুবই সাশ্রয়ী হতে হবে, অপচয় করা যাবে না, কিন্তু উৎপাদন বাড়িয়ে কোনো রকম আন্তর্জাতিকভাবে যে খাদ্যের অভাব দেখা দিচ্ছে, নানা সমস্যা দেখা দিচ্ছে, সেই সমস্যা থেকে বাংলাদেশের মানুষ যাতে মুক্ত থাকে, সেটাই আমাদের প্রচেষ্টা।

‘সেই সঙ্গে আমি মনে করি প্রতিটি পরিবার, তাদের নিজেদেরও সেই চেষ্টা করতে হবে। আজকে বাংলাদেশের মানুষের উন্নয়নের যে ধারাটা আমরা সৃষ্টি করেছি, সেটা যেন অব্যাহত থাকে। উৎপাদন বাড়ানো, নিজেরা সাশ্রয়ী হন, নিরাপদ থাকেন।’

‘ডেঙ্গুতে সতর্ক হোন’

ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় জনগণকে সচেতন করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘যেখানে যেখানে ডেঙ্গুর প্রভাব যাচ্ছে। নিশ্চয়ই নিজেদের সতর্ক থাকতে হবে। মশারি টানিয়ে শোয়ার ব্যবস্থা করা, কোথাও যেন পানি জমে না থাকে, মশার প্রজনন কেন্দ্রগুলো ধ্বংস করে দেয়া, নিজেদের সুরক্ষার ব্যবস্থা নিজেদের করতে হবে।

‘সরকারের পক্ষ থেকে যা করার, সেটা আমরা করব। আমরা আছি আপনাদের পাশে। সারা বাংলাদেশের উন্নয়ন আমাদের লক্ষ্য।’

১০০ সেতুর উদ্বোধনে উচ্ছ্বসিত প্রধানমন্ত্রী

দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে ২৫টি জেলায় নির্মাণ করা ১০০টি সেতুর নাম পড়ে শোনান প্রধানমন্ত্রী। এ সময় দেশবাসীকেও শুভেচ্ছা জানান তিনি।

উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘শত সেতু উদ্বোধন করা একটা ঐতিহাসিক ব্যাপার। এ রকম ঘটনা কিন্তু হয়নি।’

জনগণের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সেতুর রক্ষণাবেক্ষণ, সুন্দরভাবে ব্যবহার করা, এটার নিরাপত্তা দেয়া আপনাদের নিজ নিজ দায়িত্ব। আমি মনে করি এই সেতু নির্মাণের ফলে প্রতিটি অঞ্চলে আর্থ-সামাজিক উন্নতি আরও ঘটবে।’

সরকারের আমলে নেয়া নানা পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে টানা তিন মেয়াদের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দ্বিতীয়বার সরকারে আসার পর বিভিন্ন সড়কে প্রায় ১ লাখ ১৩ হাজার ৩০৩ মিটার সেতু পুননির্মাণ, ২১ হাজার ২৬৭ মিটার কালভার্ট নির্মাণ করেছি। বহু সড়ক আজকে আমরা মহাসড়কে রূপান্তর করে দিচ্ছি, যাতে যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও উন্নত হয়। চার লেন বা ছয় লেন করেও আমরা সেতু করে দিচ্ছি। কারণ আমরা চাই যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও উন্নত হোক।’

নিজস্ব অর্থায়নের পদ্মা সেতু নির্মাণের গৌরবগাঁথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা এমনভাবে করে দিচ্ছি যেন বাংলাদেশ শুধু দেশের অভ্যন্তরে না এশিয়ান হাইওয়ে ও এশিয়ান রেলওয়ের সঙ্গেও যেন যুক্ত হতে পারি। ট্রান্স এশিয়ান হাইওয়ের সঙ্গে যুক্ত হয়ে আন্তর্জাতিক যোগাযোগ যেন আমাদের এগিয়ে যেতে পারে সেদিকে বিশেষ দৃষ্টি দিয়ে বিভিন্ন সড়ক ও রেল ব্রিজ করে দিচ্ছি।’

এই সেতুগুলো নির্মাণের ফলে শুধু যোগাযোগ ব্যবস্থাই নয়, অর্থনৈতিক উন্নয়নও ত্বরান্বিত হবে বলে মনে করেন সরকারপ্রধান।

তিনি বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা, তাদের পক্ষে সহজ হবে প্রতিটি এলাকায় দ্রুত যাওয়া এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করা এবং মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, অথবা কোনো দুর্ঘটনা-দুর্বিপাক দেখা দিলে মানুষের সাহায্য করা। সেই দিক থেকে বিরাট একটা সুবিধা সবাই পেয়ে যাবেন। পাশাপাশি অর্থনৈতিক উন্নয়ন হবে, উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে, বাজারজাতকরণ সহজ হবে, পণ্য পরিবহন সহজ হবে।’

নৌপথ সচল রাখতে নদীগুলো নিয়মিত ড্রেজিং করা হচ্ছে বলেও জানান সরকারপ্রধান।

তিনি বলেন, ‘অনেকে অনেক কথা বলতে পারে, কিন্তু যে কাজগুলো করে দিয়েছি আমরা, তার সুফল পাচ্ছে দেশের মানুষ। আমাদের উন্নয়ন হচ্ছে একেবারে তৃণমূল পর্যায়ের মানুষের জন্য।




আরো






© All rights reserved © outlookbangla

Developer Design Host BD