মহাসড়কে থ্রি-হুইলার ও মোটরসাইকেল বন্ধ না করে সেগুলো নিয়ন্ত্রণের ওপর সরকার জোর দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, “দেশে আপাতত পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কে মোটরসাইকেল ও থ্রি-হুইলার চলাচল নিবিড়ভাবে পর্যবক্ষণ করা হবে। সে লক্ষ্যে একটি নীতিমালাও তৈরি করা হচ্ছে; যা চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।”
মঙ্গলবার রাজধানীর বনানীতে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তপক্ষের (বিআরটিএ) কার্যালয়ে জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা কাউন্সিলের সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সেতুমন্ত্রী এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, “মহাসড়কে মোটরসাইকেল নিষিদ্ধ করার চেয়ে নিয়ন্ত্রণটা কীভাবে করা যায়, আমরা সে ব্যাপারে গুরুত্বটা বেশি দিচ্ছি। জনবহুল দেশে এটি বহু বেকারের কর্মসংস্থান। আমরা নীতিমালা করার কথা অলরেডি বলেছি। নীতিমালা হচ্ছে।”
কীভাবে ‘মনিটরিং’ হবে– এ প্রশ্নে সেতুমন্ত্রী বলেন, “আমরা অতটা ক্লোজলি পারব না। বাস্তবতাটা আমাদের দেখতে হবে। আগেই বলে রেখেছি জনবল নেই। তারপর আমাদের মনিটরিং চলছে। এটা চলমান আছে।”
চাপের তুলনায় মহাসড়কে বিআরটিএ এবং হাইওয়ে পুলিশের জনবল বাড়েনি মন্তব্য করে তিনি বলেন, “আমরা চেষ্টায় আছি, জনবলটা বাড়াতে পারলে আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারব এবং চলাচল বন্ধ রেখে সেটিও কার্যকর করতে পারব।”
কাদের বলেন, “আমরা ঠিক করেছি ঢাকা-আরিচা, ঢাকা-ময়মনসিংহ, ঢাকা-টাঙ্গাইল, ঢাকা- সিলেট ও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও ইজিবাইক চলাচল আমরা ক্লোজলি মনিটরিং করব। যেহেতু হাই কোর্টের একটি নির্দেশনা আছে মহাসড়কগুলোতে এসব তিন চাকার যানবাহন চলাচল করতে পারবে না, তাই এই পাঁচ মহাসড়কে আমরা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করব।”
দেশে বাইশটি মহাসড়কের মধ্যে শুধু পাঁচটিতে কেন মনিটর করা হবে এমন প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, “পুলিশ এবং ম্যানপাওয়ার (জনবল) অত বেশি নেই যে সারাদেশে এটা মনিটর করবে। আপাতত গুরুত্বপূর্ণ পাঁচটি সড়কে মনিটর করা হবে। ধীরে ধীরে বাড়বে। এর উপরে একটা নীতিমালা করা হচ্ছে।”
গত কয়েক বছর ধরে সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহতের তালিকায় উপরের দিকে থাকছে মোটর সাইকেল এবং নসিমন, করিমন, অটোরিকশার মত তিন চাকার বাহন।
দুর্ঘটনা বেড়ে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে ২০১৫ সালের অগাস্ট মাসে দেশের ২২টি মহাসড়কে থ্রি-হুইলার ও অযান্ত্রিক যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ ঘোষণা করে সরকার। হাই কোর্টও এ ধরনের বাহন বন্ধের বিষয়ে একাধিকার নির্দেশ দিয়েছে।
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের নিজে সে সময় দেশের বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে মহাসড়ক থেকে তিন চাকার বাহনের উচ্ছেদ অভিযানে অংশ নেন। কিন্তু মহাসড়কে এসব বাহনের চলাচল থামেনি।
এখন থেকে ঘরে বসে ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়া যাবে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, “আগামীকাল থেকে যারা ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন করবেন তারা ঘরে বসেই আবেদন করতে পারবেন। শুধুমাত্র একবার তাকে পরীক্ষার জন্য বিআরটিএ কার্যালয়ে আসতে হবে।”
বিশ্ব ব্যাংকের সঙ্গে একটি ঋণের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে সড়কমন্ত্রী বলেন, “রোড সেইফটি বিষয়ে আমরা একটি প্রজেক্ট দেখছি বিশ্ব ব্যাংকের আর্থিক সহায়তায়। প্রপোজাল প্রস্তুত। শিগগিরই একনেক সভায় যাবে। এটা একনেক থেকে আসলে তারপর আমরা ইম্পিলিমেন্টে যাব।
“প্রজেক্টের বাজেট ৪ হাজার ৮০ কোটি টাকা। কারণ রোড সেইফটি আমাদের খুবই প্রয়োজন। সড়কের নিরাপত্তা সবচেয়ে বড় চিন্তার বিষয়।”