দেশের বেসরকারি নতুন এয়ারলাইনস এয়ার অ্যাস্ট্রা আগামী ২৪শে নভেম্বর বাণিজ্যিক ফ্লাইট শুরু করতে যাচ্ছে। মঙ্গলবার ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের অভ্যন্তরীণ টার্মিনালে এক অনুষ্ঠানে এয়ার অ্যাস্টার উদ্বোধন করেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী এম মাহবুব আলী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান।
বাংলাদেশে এখন দুটি বেসরকারি এয়ারলাইনস অভ্যান্তরীণ রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করছে। আগামী ২৪শে নভেম্বর থেকে কক্সবাজারে ফ্লাইটের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করবে তৃতীয় এই এয়ারলাইনস।
বিমান প্রতিমন্ত্রী বলেন, এয়ার অ্যাস্ট্রা তাদের যাত্রা শুরু করার ফলে অভ্যন্তরীণ রুটের যাত্রীদের পছন্দের সুযোগ আরও বৃদ্ধি পেলো। দেশীয় এয়ারলাইন্সগুলোর ইতিবাচক প্রতিযোগিতায় ও সহযোগিতার ক্ষেত্র প্রতিষ্ঠিত হবে যা যাত্রীদের জন্য সহায়ক হবে বলে আমি মনে করি। আশা করি এয়ার অ্যাস্ট্রা যাত্রীসেবার মান ও নিরপত্তা বজায় রেখে তাদের ফ্লাইট পরিচালনা করবে।
এয়ার অ্যাস্ট্রা’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরান আসিফ বলেন, প্রায় ৯ বছর পর বাংলাদেশে একটি নতুন এয়ারলাইন্স হিসাবে আত্মপ্রকাশ করতে পেরে এয়ার অ্যাস্ট্রা গর্বিত। আমরা নিরাপদ যাত্রীসেবা ও সময়ানুবর্তীতার মাধ্যমে যাত্রীদের সবেচয়ে পছন্দের ও নির্ভরযোগ্য এয়ারলাইন হিসাবে নিজের প্রতিষ্ঠিত করতে দৃঢ়প্রতিবদ্ধ।
আগামী ২৪ নভেম্বর ঢাকা-কক্সবাজার রুটের মধ্য দিয়ে কমার্শিয়াল ফ্লাইট অপারেশন শুরু করবে এয়ার এ্যাস্ট্রা। শুরুতে ঢাকা-কক্সবাজার-ঢাকা রুটে ৩টি ও ঢাকা-চট্টগ্রাম-ঢাকা রুটে ২টি ফ্লাইট পরিচালনা করবে এয়ার অ্যাস্ট্রা। পর্যায়ক্রমে দেশের সব অভ্যন্তরীণ রুটেই ফ্লাইট পরিচালনা করবে এয়ার অ্যাস্ট্রা। ঢাকা থেকে কক্সবাজার এর ওয়ান ওয়ে সর্বনিন্ম ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৭৯৯ টাকা এবং ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম এর ওয়ান ওয়ে সর্বনিন্ম ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৬৯৪ টাকা।
এয়ার অ্যাস্ট্রা এরই মধ্যে ঢাকায় দুটি এটিআর ৭২-৬০০ এয়ারক্রাফট ডেলিভারি নিয়েছে এবং আরও দুটি এয়ারক্রাফট চলতি বছরের মধ্যেই ডেলিভারি নেবে। ২০২৩ সালের মধ্যে এয়ার অ্যাস্ট্রা’র এয়ারক্রাফট এর বহর ১০ টিতে উন্নিত হবে। ফ্রান্সে নির্মিত এটিআর ৭২-৬০০ বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে আধুনিক টার্বোপ্রপ প্রযুক্তির নির্ভরযোগ্য এয়ারক্রাফট। এয়ারক্রাফটির আরামদায়ক কেবিন ৭০ জন যাত্রী বহন করার জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে।
এয়ারলাইনসটিতে বিনিয়োগ করছেন জাপান প্রবাসী বাংলাদেশি ব্যবসায়ী হারুন অর রশিদ। আর কারিগরি সহায়তা দিচ্ছে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনস।
বর্তমানে বেসরকারি খাতের ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনস ও নভো এয়ার অভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিক রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করছে। অন্যদিকে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসও অভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিক রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করছে।
বেবিচকের তথ্য অনুযায়ী, দেশে করোনা মহামারি শুরুর আগে অর্থাৎ ২০১৯ সালে আকাশপথে অভ্যন্তরীণ রুটের যাত্রীসংখ্যা ছিল প্রায় ৪৫ লাখ। ২০২১ সালে অভ্যন্তরীণ রুটে যাতায়াতকারী যাত্রী ছিল প্রায় ৫০ লাখ। এ বছর তা আরও বাড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এয়ার অ্যাস্ট্রার প্রাথমিক পার্কিং স্টেশন হবে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। তবে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরকে বিকল্প স্টেশন হিসেবে রাখা হয়েছে।
ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনসের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) মো. কামরুল ইসলাম বলেন, আমরা এয়ার অ্যাস্ট্রাকে পরিচালনা সংক্রান্ত বিভিন্ন সহযোগিতা দিচ্ছি। আমাদের সঙ্গে তাদের অপারেশনাল, ইঞ্জিনিয়ারিং, গ্রাউন্ড সার্ভিস অ্যাগ্রিমেন্ট হয়েছে।