শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫, ০৮:৩০ অপরাহ্ন




সচিবালয়ে ছয় সেবায় ফি নির্ধারণের প্রস্তাব

সচিবালয়ে ছয় সেবায় ফি নির্ধারণের প্রস্তাব: সচিবালয়ে ছয় সেবায় ফি নির্ধারণের প্রস্তাব

আউটলুক বাংলা রিপোর্ট
  • প্রকাশের সময়: বৃহস্পতিবার, ১৭ নভেম্বর, ২০২২ ৭:৩২ am
Govt মন্ত্রণালয় Bangladesh Secretariat সচিবালয়
file pic

বেসরকারি যানবাহন ও ব্যক্তির প্রবেশ এবং ইস্যু করা সব ধরনের কার্ডসহ বাংলাদেশ সচিবালয়ের ছয় সেবায় সুনির্দিষ্ট ফি আরোপের প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।

যার সর্বনিু অঙ্ক হচ্ছে ২ হাজার ও সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা। সম্প্রতি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে ফি আদায়ের সম্মতি চাওয়া হয়েছে অর্থ বিভাগের কাছে।

বিদ্যমান বৈশ্বিক সংকট মোকাবিলায় এ ধরনের উদ্যোগ রাজস্ব বাড়াতে সহায়তা করবে-এমনটি মনে করছেন সরকারসংশ্লিষ্টরা।

সূত্রমতে, ফি আরোপের জন্য যে ছয়টি ক্যাটাগরি নির্ধারণ করা হয়েছে সেগুলোর মধ্যে প্রথম ক্যাটাগরিতে রয়েছেন মন্ত্রণালয়, বিভাগ, দপ্তর ও সংস্থার প্রাধিকারভুক্ত ব্যক্তি ছাড়া অন্যান্য বক্তি বা এরূপ অন্য প্রতিষ্ঠানের ব্যক্তি।

দ্বিতীয় ক্যাটাগরিতে রয়েছেন জেলা ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেয়র। তৃতীয় ক্যাটাগরিতে আছেন বেসরকারি ব্যক্তি এবং চতুর্থ ক্যাটাগরিতে বেসরকারি যানবাহন। বাকি দুটি ক্যাটাগরি নির্ধারণ করা হয় সব ধরনের কার্ড ইস্যু ও হারানোর ওপর।

জননিরাপত্তা বিভাগের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, কয়েকটি খাতে ফি নির্ধারণের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তবে এ প্রস্তাব দেওয়ার আগে এ সংক্রান্ত একটি বৈঠক হয়েছে জননিরাপত্তা বিভাগে। ওই বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর এখন সম্মতি চাওয়া হয়েছে অর্থ বিভাগের কাছে।

সূত্রমতে, প্রথম ক্যাটাগরির জন্য এক বছর মেয়াদি সচিবালয়ে প্রবেশের জন্য ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ হাজার টাকা। এক্ষেত্রে মন্ত্রণালয়, বিভাগ, দপ্তর ও সংস্থার প্রাধিকারভুক্ত ব্যক্তি ছাড়া অন্যান্য বক্তি বা এরূপ অন্য প্রতিষ্ঠানের ব্যক্তি ব্যতীত অন্যান্য ব্যক্তি বা এরূপ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের ব্যক্তিরা এই সুবিধা নিয়ে কার্ড গ্রহণ করতে পারবেন।

দ্বিতীয় ক্যাটাগরির জন্য ফি আরোপ করা হয়েছে ২৫০০ টাকা। এই ফি দিয়ে জেলা ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেয়ররা পুরো বছর সচিবালয়ে প্রবেশ করতে পারবেন।

তৃতীয় ক্যাটাগরি ফি নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছে ৫ হাজার টাকা। এ ক্যাটাগরিতে বেসরকারি ব্যক্তিরা রয়েছেন। তারা এ সুনির্দিষ্ট ফি দিয়ে এক বছরের কার্ড নিতে পারবেন। তবে এ ক্যাটাগরির আওতায় কার্ড অনুমোদনের আগে শর্ত দেওয়া হবে। বিশেষ করে এ কার্ড হস্তান্তরযোগ্য হবে না।

এছাড়া বেসরকারি গাড়ি সচিবালয়ের ভেতরে প্রবেশের জন্য বছরে গুনতে হবে ১০ হাজার টাকা। নির্ধারিত ফি পরিশোধ সাপেক্ষে এক বছরের জন্য সচিবালয়ে গাড়ি প্রবেশের অনুমোদন পাওয়া যাবে।

তবে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ব্যবহৃত সব ধরনের কার্ড হারানো, নষ্ট বা অন্য কোনো কারণে ব্যবহার অনুপযোগী হলে পুনরায় কার্ড পাওয়ার জন্য ফি গুনতে হবে ২ হাজার টাকা। বর্তমান এক্ষেত্রে কোনো ধরনের ফি নেই।

সর্বশেষ ক্যাটাগরিতে বলা হয়-বেসরকারি পর্যায়ে সব ধরনের কার্ড হারানো, নষ্ট বা অন্য কোনো কারণে ব্যবহারের অনুপযোগী হলে পুনরায় কার্ড পাওয়ার জন্য ফি গুনতে হবে ৫ হাজার টাকা।

এ ধরনের ফি আরোপের পেছনে যৌক্তিকতা তুলে ধরা হয় জননিরাপত্তা বিভাগের প্রস্তাবে। সেখানে বলা হয়, সচিবালয়ে কঠোরভাবে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সচিবালয়ের প্রবেশপথে ডিজিটাল পদ্ধতিতে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। এজন্য দর্শনার্থী গেটে আধুনিক যন্ত্রপাতি স্থাপন করা হয়েছে। পাশাপশি পরিবহণের জন্য ভেহিক্যাল স্ক্যানারের মাধ্যমে আইডেন্টিফিকেশন করা হচ্ছে। এছাড়া ডিজিটাল কার্ড, ভেহিক্যাল স্টিকার, মনিটরিং ব্যবস্থা, অপারেশন ও ব্যাকআপরুপ স্থাপনসহ অনান্য আনুষঙ্গিক বিষয়ে অর্থ ব্যয় হচ্ছে। এই ব্যয় মেটানো এবং পরিচালনার জন্য এ ধরনের ফি আরোপ করা হবে। পাশাপাশি এ খাত থেকে সরকারের রাজস্ব আসবে।

অর্থ বিভাগের কাছে পাঠানো প্রস্তাবে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ সচিবালয় দেশের প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র এবং সংরক্ষিত, স্পর্শকাতর ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। এখানে প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপ-মন্ত্রীসহ সিনিয়র সচিব ও সচিবের কার্যালয় অবস্থিত। এখানে সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং গুরুত্বপূর্ণ বেসরকারি ব্যক্তি বিভিন্ন মেয়াদে পাশ নিয়ে প্রবেশ করেন। এছাড়া সচিবালয়ের ভেতরে অনুষ্ঠেয় বিভিন্ন সভায় অংশগ্রহণকারী ও দর্শনার্থীরাও প্রতিদিনই প্রবেশ করছেন।

ফলে সচিবালয়ে প্রবেশ পাশ গ্রহণের পূর্বে এক বছর মেয়াদি (সরকারি ব্যতীত) উল্লিখিত হারে প্রতি কার্ডের জন্য নির্ধারিত ফি গ্রহণ করা যেতে পারে।

অর্থ বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, প্রথমত সচিবালয়ে যানবাহন ও ব্যক্তি প্রবেশের ক্ষেত্রে রাজস্ব বাড়ানোর সিদ্ধান্ত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নিতে পারে কিনা সেটি পর্যালোচনা করা হবে। পাশাপাশি এ বিষয়টির সঙ্গে নিরাপত্তা জড়িত। একটি নির্দিষ্ট ফি নিয়ে জনসাধারণের জন্য সচিবালয় প্রবেশ উন্মুক্ত করা হলে নিরাপত্তার বিঘ্ন ঘটার আশঙ্কা থাকে। সে বিষয়টিও বিবেচনা নিতে হবে। এছাড়া এ ধরনের কার্ড ইস্যুর পর এর অপব্যহার হবে না এটিও নিশ্চিত করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, সচিবালয়ে বিদ্যমান অবস্থায় গাড়ি পার্কিং করার স্থান কম আছে। ফলে এ অবস্থায় বেসরকারি গাড়ি ফির মাধ্যমে প্রবেশ করার সুযোগ দিলে শেষপর্যন্ত গাড়ির চাপ সামাল দেওয়া সম্ভব হবে কিনা সেটিও ভাবতে হবে। যে কারণে বিষয়টি পর্যালোচনা করে মতামত দেওয়া হবে।




আরো






© All rights reserved © outlookbangla

Developer Design Host BD