আগামী ২৯ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাপান সফরে যাওয়ার যে কথা ছিল তা পিছিয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম। তবে শিগগির এই সফর হবে এবং সফরে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ সমঝোতা স্মরক সই (এমওইউ) হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
ঢাকা সফররত জাপানের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তাকেই শুনসুকের সঙ্গে বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) অনুষ্ঠিত এক বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান তিনি।
মো. শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর সফরের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আমরা এখনো দেইনি। আপনারা জানেন ডিপ্লোম্যাসিতে অনেক কিছু থাকে, সুবিধা-অসুবিধা থাকে, যে কারণে লাস্ট মোমেন্টেও চেঞ্জ হয়। সে কারণে সবসময় যে কার্টেইন রেইজারটি হয়, সেটা আমরা একেবারে যথাযথসম্ভব সর্বশেষ মুহূর্তে করি। এ সফরটি শিগগির হবে, তবে নতুন তারিখে হবে।’
তিনি বলেন, ‘একটি তারিখ অবশ্য আপনারা বিভিন্ন জায়গা থেকে শুনেছেন, সেই তারিখে বর্তমান প্রেক্ষিতে হচ্ছে না। তবে খুব শিগগির হবে। আমাদের বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের এমওইউ আছে। আশা করছি এগুলো প্রধানমন্ত্রীর সফরের সময় (সই) হবে।’
জাপানের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকের বিষয়ে শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘সব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। তিনি এর আগেও বাংলাদেশ সফর করেছেন। তিনি আমাদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন, হলি আর্টিজানের সময় পুরো বিষয়টা আমরা যেভাবে মোকাবিলা করেছি। আমি সে সময়ের স্মৃতি উল্লেখ করে আমাদের অব্যাহতভাবে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ দমনের প্রচেষ্ট, শেখ হাসিনার সরকারের জিরো টলারেন্স তাকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি মেগা প্রজেক্ট জাপানের সহযোগিতায় হচ্ছে। আমাদের দ্বিপাক্ষীক সম্পর্ক যে উচ্চতায় গেছে, তা আরও গভীরে নিতে চাই। এটার জন্য আমাদের উচ্চ পর্যায়ের এনগেজমেন্ট এবং ভিজিট খুবই জরুরি।’
এমআরটি ৬ এর কিছু অংশের চলাচল শিগগির শুরু হবে জানিয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আর একটি সুখবর আছে। তা হলো আড়াইহাজারে জাপান সরকার যে অবকাঠামো করছে, শিল্প নগরীর একটি স্পেশাল জোন। একাধিক বিনিয়োগকারী এরইমধ্যে সেখানে চুক্তিবদ্ধ হওয়ার বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটা খুব শিগগির উদ্বোধন হবে। যথাযথ কর্তৃপক্ষ শিগগির তারিখ জানিয়ে দেবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘মিয়ানমার ও রোহিঙ্গা ইস্যুতে আলোচনা হয়েছে। মিয়ানমার সরকারের সদিচ্ছা আদৌ আছে কি না এবং আমাদের পার্শ্ববর্তী মিয়ানমারের যে রাখাইন রাজ্য আছে, সেখানে প্রতিনিয়ত আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি হচ্ছে। সেখানে নিয়ন্ত্রণ না থাকার ফলে আমাদের র্যাবের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জীবন দিয়েছেন।’
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘মাতারবাড়িতে জাপানের সহায়তায় একটি কয়লা ভিত্তিক পাওয়ার প্লান্ট হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তাদের নীতিগত অবস্থান পরিবর্তনের কারণে, তারা সেখান থেকে সরে গেছে। তবে মাতারবাড়ির একই জায়গায় তারা জ্বালানি খাতের অন্য বিকল্প কী করা যায়, সে জন্য আমাদের কাছ থেকে একটা মাস্টার প্ল্যান চেয়েছে এবং আমাদের প্রেফারেন্স চয়েজগুলো চেয়েছে। আমরা যথাযথ মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করে এগুলো দেবো। তারা সে অনুযায়ী সামনে ব্যবস্থা নেবে।’