বাংলাদেশ থেকে এক লাখ জনশক্তি নেবে ইউরোপীয় দেশ রোমানিয়া। দেশটিতে দায়িত্বরত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের কাছ থেকে এই তথ্য পেয়ে গণমাধ্যমকে সেটি জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।
বাংলাদেশ থেকে বিপুলসংখ্যক মানুষ নিতে চাইলেও ঢাকায় দেশটির কোনো দূতাবাস না থাকায় সরকার ইউরোপের দেশটিকে একটি দূতাবাস স্থাপনের অনুরোধও করেছে। তবে সেই অনুরোধ রাখছে না দেশটি।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছিলেন মন্ত্রী। এ সময় এই তথ্য জানানো হয়। মোমেন বলেন, ‘তারা আপাতত এক লাখ লোক নিতে চায়।’
তিনি বলেন, ‘চলতি বছরের শুরুতে পাঁচ হাজার ভিসা ইস্যু করতে রোমানিয়ার একটি কনস্যুলার টিম ঢাকা আসে। মার্চ থেকে ঢাকায় তিন মাসের অস্থায়ী কনস্যুলেট খুলে তারা এ সেবা দেয়। যার মধ্যে ৩ হাজার ৪০০ ঝুলে থাকা (প্যান্ডিং) ভিসার আবেদন ছিল।’
২০২১ সালের অক্টোবরে বাংলাদেশ ও রোমানিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে ঢাকায় মিশন পাঠিয়ে অস্থায়ী কনস্যুলার সেবা প্রদানের আলোচনা হয়।
মন্ত্রী জানান, তারা অনুরোধ করলেও খরচের কথা ভেবে ঢাকায় দূতাবাস চালু করছে না রোমানিয়া। তিনি বলেন, ‘এমনিতেই বাংলাদেশ থেকে কিছু মানুষ রোমানিয়ায় যায়। কিন্তু তাদের দিল্লিতে গিয়ে ভিসা করতে হয়। এটা অনেকটা কষ্ট ও খরচের বিষয়। আমি তাদের বলেছিলাম ঢাকায় দূতাবাস চালু করতে। কিন্তু এটা খুব খরচের বিষয়। তারা কনস্যুলেটও খুলতে রাজি নয়। তাদের অত পয়সা নেই। তাই তারা কনস্যুলার পাঠিয়ে ভিসা দেবে।’
গত ২৬ জুন রোমানিয়ার সোনোমা স্পোর্টসওয়্যার কারখানা পরিদর্শন করেন সে দেশে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত দাউদ আলি। সেখানে ৩২০ বাংলাদেশি কর্মী কাজ করেন। একই দিন রোমানিয়ার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (বাকাউ) প্রেসিডেন্ট ডরু সিমোভিচির সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন তিনি।
সোনোমা স্পোর্টসওয়্যারের সিইও আন্তোনেলা গাম্বা সেদিন রাষ্ট্রদূতকে জানান, তার কোম্পানি পোশাক কারখানা চালানোর জন্য টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার, মেশিন অপারেটর, কাটিং মাস্টার, ম্যানেজারসহ ৩২০ জন বাংলাদেশি দক্ষ পোশাককর্মীকে বেছে নিয়েছে।
দাউদ আলী জানান, আন্তোনেলা তার পোশাক কারখানার জন্য আরও ১২০ জন এবং জুতার কারখানার জন্য ২০০ বাংলাদেশি কর্মী নেবেন। যদি সবকিছু ঠিকঠাক থাকে এবং শ্রমিকরা তার কারখানা ছেড়ে ইউরোপের অন্য দেশে না যান, তাহলে তিনি নতুন কারখানা স্থাপনের জন্য আরও ১ হাজার বাংলাদেশিকে নিয়োগ দেবেন।
মাইগ্রেশন খরচ কমানোর জন্য কোনো এজেন্টকে যুক্ত না করে এটি সরাসরি সরকারি মাধ্যমে করা প্রয়োজন বলেও মত দেন আন্তোনেলা।
রাষ্ট্রদূতকে তিনি জানান, অভিবাসন ব্যয় কমাতে শুধু বিমানের টিকিট এবং ভিসা ফি দিতে হবে বাংলাদেশি কর্মীদের।
সে সময় রাষ্ট্রদূত আন্তোনেলাকে কর্মীদের এয়ার টিকিট দেয়ার জন্য অনুরোধ করেন।