নির্ধারিত সময়ে শুরু হয়েছে বিএনপি’র ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ। এই সমাবেশকে ঘিরে কানায় কানায় পূর্ণ গোলাপবাগ মাঠ। জনতার ঢল নেমেছে সড়কে। মাঠ পেরিয়ে কমলাপুর ও মুগদা সড়কে জনস্রোত সৃষ্টি হয়েছে। খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলের দিকে অগ্রসর হচ্ছেন নেতাকর্মীরা। ঢাকা বিভাগের পাশাপাশি সারা দেশ থেকে ব্যানার ও মিছিল নিয়ে এখনো আসছেন তারা।
সাতক্ষীরা থেকে আসা সাবেক এমপি কাজী আলাউদ্দিন বলেন, আমাদের দাবি আদায়ের জন্য সকাল থেকেই সমাবেশস্থলের পাশে মানিকনগর এলাকায় অবস্থান নিয়েছি। আমার নির্বাচনী এলাকা থেকে ১০ হাজারের অধিক নেতাকর্মী ঢাকার বিভাগীয় সমাবেশে যোগ দিয়েছেন। অংশ নিয়েছেন খেটে খাওয়া মানুষরা। অনেকেই গতকাল রাতে গোলাপবাগ মাঠে রাত্রি যাপন করেছেন। এই স্বৈরাচার সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত আমরা ঘরে ফিরে যাবো না। আমাদের আন্দোলন থামবে না। আমাদের নেতাকর্মীদের মুক্তি দিতে হবে। এই সরকারকে বিদায় নিতে হবে।
ভোলার মনপুরা থেকে আসা আব্দুল মান্নান চেয়ারম্যান বলেন, ঢাকার সমাবেশে কেন্দ্রীয় নেতারা ডাক দিয়েছেন। সেই ডাকে সারা দিয়ে আমরা পদ্মা-মেঘনা পাড়ি দিয়ে সমাবেশে উপস্থিত হয়েছি। আমরা এই সরকারের পতন চাই। দলীয় নেতাকর্মীদের মুক্তি চাই। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন চাই।
কমলাপুর সড়কে কয়েক শতাধিক নেতাকর্মী নিয়ে বিক্ষোভ করেন অ্যাডভোকেট সালাউদ্দিন আহমেদ পিন্স। তিনি বলেন, এই অবৈধ সরকার গত ১৪টি বছর মানুষের উপর জুলুম নির্যাতন অত্যাচার চালিয়ে যাচ্ছেন। দেশে একদলীয় শাসনব্যবস্থা কায়েম করেছেন। বিচার বিভাগকে ধ্বংস করেছন। এই সরকারকে দেশের মানুষ আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না। আমরা অনতিবিলম্বে শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগ চাই। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন চাই।
দ্রব্যমূল্য, তেলের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদ এবং খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবিতে বিএনপি সারা দেশে গণসমাবেশ শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় শনিবার ঢাকায় গণসমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নেয় বিএনপি। দলটি নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশের জন্য পুলিশের কাছে অনুমতি চায়। তবে পুলিশ নয়াপল্টনে বিএনপিকে সমাবেশের অনুমতি দেয়নি।
এ নিয়ে প্রায় দুই সপ্তাহের উত্তেজনার পর গতকাল বিকালে গোলাপবাগ মাঠে সমাবেশের অনুমতি পায় দলটি। এর পর থেকেই সেখানে সমবেত হতে শুরু করেছেন নেতাকর্মীরা।
এর আগে শুক্রবার রাজধানী গোলাপবাগ মাঠে গণসমাবেশ আয়োজনের পুলিশি অনুমতি পাওয়ার পরই ভেন্যুতে আসতে শুরু করেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। শুক্রবার বিকাল থেকেই দলটির বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মী গোলাপবাগ মাঠে জড়ো হতে থাকেন।
রাত যত হয়েছে, মাঠে বিএনপি নেতাকর্মীর আনাগোনাও বেড়েছে তাল মিলিয়ে। ওই সময় মাঠের ভেতর ও সড়কে খণ্ড খণ্ড হয়ে মিছিল করতে থাকেন নেতাকর্মীরা। বিএনপি নেতাকর্মীর ভিড়ে মাঠের পাশের সড়কগুলোতে যানজট সৃষ্টি হয়।