সিরিজের শেষটা ভালো হলো না বাংলাদেশের। মেহেদী হাসান মিরাজের কাছ থেকেও এবার দেখা গেল না চমকপ্রদ কিছু। তবে প্রথম দুই ম্যাচে যা করেছেন, সিরিজ সেরার স্বীকৃতি নিশ্চিত হয়ে গেছে তো আগেই!
২০১৬ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আবির্ভাবেই দুই টেস্টে ১৯ উইকেট নিয়ে নিজের আগমনী বার্তা দেন মিরাজ। সাদা পোশাকের ক্রিকেটে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের প্রথম জয়ে অগ্রণী ভূমিকা রেখে জেতেন সিরিজ সেরার পুরস্কার। এরপর ৬ বছর পেরিয়ে গেলেও কোনো সংস্করণে সেই সাফল্যের পুনরাবৃত্তি করতে পারছিলেন না তিনি।
অবশেষে ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশকে দ্বিতীয়বার ওয়ানডে সিরিজ জয়ের আনন্দে ভাসিয়ে মিরাজ নিজেও জিতে নিয়েছেন আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সিরিজ সেরার পুরস্কার। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে এটিই তার প্রথম সিরিজ সেরার স্বীকৃতি।
ভারতের বিপক্ষে আগে একবারই সিরিজ সেরা হয়েছেন বাংলাদেশের কেউ। ২০১৫ সালে ঘরের মাঠে সেই স্মরণীয় সিরিজ জয়ে ৩ ম্যাচে ১৩ উইকেট নিয়ে সিরিজ সেরার পুরস্কার জিতেছিলেন মুস্তাফিজুর রহমান।
সাড়ে ৭ বছর পর এবার পেলেন মিরাজ। জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে শনিবার তৃতীয় ওয়ানডের পর সিরিজ সেরার পুরস্কার তুলে দেওয়া হয় তার হাতে। পুরস্কার বিতরণীতে ২৫ বছর বয়সী এ অলরাউন্ডার জানালেন উচ্ছ্বসিত প্রতিক্রিয়া।
“আলহামদুলিল্লাহ, আমি খুব খুশি। ওয়ানডেতে প্রথমবার সিরিজ সেরার পুরস্কার জিতলাম। আমার জন্য এটি দারুণ মুহূর্ত।”
সিরিজ জয়ের কাজটি ঢাকায়ই সেরে আসে বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচে মুস্তাফিজকে সঙ্গে নিয়ে দশম উইকেটে ৫১ রানের অবিশ্বাস্য জুটি গড়ে বাংলাদেশকে ১ উইকেটের জয় এনে দেন মিরাজ। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি করে দলকে পাইয়ে দেন ২৭১ রানের সংগ্রহ। ৮ নম্বরে নেমে সেই সেঞ্চুরি বাংলাদেশের ওয়ানডে ইতিহাসের সেরা ইনিংসগুলোর একটি।
পরে রোহিত শর্মার ঝড় সামলে বাংলাদেশ ৫ রানে জয় পেলে মিরাজই ম্যাচ সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হন। মাশরাফি বিন মর্তুজা ও মুস্তাফিজের পর বাংলাদেশের হয়ে ভারতের বিপক্ষে দুই ওয়ানডেতে সেরার স্বীকৃতি পেলেন মিরাজই।
চট্টগ্রামে হোয়াইটওয়াশের লক্ষ্য নিয়ে শেষ ম্যাচ খেলতে এসে জয় মেলেনি। ইশান কিষানের রেকর্ড গড়া ডাবল সেঞ্চুরিতে পিষ্ট হয়ে ২২৭ রানের বড় ব্যবধানে হেরে যায় বাংলাদেশ। তবে এই ম্যাচেও বল হাতে নিয়েই প্রথম ডেলিভারিতেই ব্রেক থ্রু দেন মিরাজ, ফেরান শিখর ধাওয়ানকে।
এক ওভারে পরে বিরাট কোহলিকেও আউটের সম্ভাবনা জাগান। কিন্তু শর্ট মিড উইকেটে দাঁড়ান লিটন দাস সহজ ক্যাচ অবিশ্বাস্য ব্যর্থতায় হাতে রাখতে পারেননি। জীবন পেয়ে কিষানের সঙ্গে ২৯০ রানের জুটি গড়েন কোহলি। যা বাংলাদেশকে ম্যাচ থেকে ছিটকে দেয়।
সব মিলিয়ে এই সিরিজে তিন ম্যাচে তার রান ৭০.৫০ গড়ে ১৪১, উইকেট ৪টি।
শেষ লক্ষ্য পূরণ না হলেও সিরিজ জয়ের তৃপ্তি ফুটে উঠল মিরাজের কণ্ঠে। বড় দলগুলোর বিপক্ষে নিয়মিত ভালো খেলার এটিই শুরু বলে আশা তার।
“ভারত খুব ভালো দল। তারা সবসময় ওয়ানডেতে এবং অন্যান্য সংস্করণেও ভালো করছে। এটি আমাদের জন্য শুরু। আমরা গত কয়েক বছর ধরে খুব ভালো খেলছি, বিশেষ করে ওয়ানডে ক্রিকেটে। সামনে এখন ওয়ানডে বিশ্বকাপ রয়েছে। আমি আশা করি আগামী বছর আমরা ভালো করতে পারব।”