রবিবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৩, ১০:০৬ অপরাহ্ন




মেসি ম্যাজিকের অপেক্ষা, এমবাপ্পে কী করবেন

আউটলুকবাংলা রিপোর্ট
  • প্রকাশের সময় : রবিবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০২২ ১০:০৫ am
Argentine Footballer Lionel Andrés Messi আর্জেন্টিনা তারকা লিওনেল মেসি French footballer Kylian Mbappé Lottin ফরাসি ফ্রেঞ্চ তারকা কিলিয়ান এমবাপে embappe কিলিয়ান এমবাপে
file pic

মেসি জ্বলছেন। মেসি অস্থির। ট্রফি হাতে বুয়েন্স আয়ার্সে ফিরতে চান। প্রস্তুতি অনেকটা শুরু হয়ে গেছে। রচনা করতে চান নতুন ইতিহাস। এসবই কল্পনা, বাস্তবতা অন্য। লিওনেল মেসির এটা শেষ বিশ্বকাপ। তার ঝুলিতে সবই আছে। নেই শুধু বিশ্বকাপ ট্রফি। গোল রয়েছে ৭৯১টি।

চারটি চ্যাম্পিয়নস লীগের শিরোপা রয়েছে। একটি কোপা আমেরিকা। ৭টি ব্যালন ডি’অর। এসব তো আছেই । মেসিকে মনে রাখতে হলে এখন প্রয়োজন একটি বিশ্বকাপ। আর্জেন্টিনা ছাড়ার মুহূর্তে সতীর্থদের বলেছিলেন, আমরা শুধু কাপ নয়, বিশ্বকে ফুটবলের নতুন কলাকৌশল উপহার দেবো। কিন্তু কাতার পৌঁছেই মস্তবড় ধাক্কা খেলেন। সবাইকে অবাক করে দিয়ে প্রথমদিনেই পরাজয়। যা কেউ কোনোদিন ভাবেননি, তাই ঘটলো। সৌদি আরবের কাছে হেরে যাওয়ার পর তার সমালোচকরা বলতে থাকলেন- এটাই কি নতুন কলাকৌশল? মেসি তাতেও ভেঙে পড়েননি।

সৌদি আরবের কাছে মাথা নত হওয়ার পর টিমবাসে দাঁড়িয়ে মেসি সতীর্থদের জিজ্ঞেস করেন- তারা একে অপরকে বিশ্বাস করতে পারে কিনা। স্বাভাবিকভাবেই মেসি তখন হতাশ। সতীর্থরা নীরব। পরদিন প্র্যাকটিসে এটাই স্মরণ করিয়ে দিলেন। কোচ স্কালোনির মন খারাপ। খেলোয়াড়দের উদ্দেশ্যে বললেন, শুধু ভাগ্যের ওপর ছেড়ে দিলে চলবে না। মনে রাখতে হবে- ভাগ্য একটি শব্দ মাত্র। আমাদের লড়াই করতে হবে। কোটি কোটি ফুটবলভক্ত আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে। খেলোয়াড়রা তখন শপথ নেন। আমরা কাপ জিততে এসেছি। জেতার জন্যই খেলবো। এই ছিল চলতি বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার শুরুর দিকটা। এরপর আর্জেন্টিনা পেছনে ফিরে তাকায়নি। এবারের আর্জেন্টিনা দলটি সবচেয়ে দুঃসাহসিক, সবচেয়ে রোমাঞ্চকর দল নাও হতে পারে। তবে সুশৃঙ্খল এবং সংগঠিত- এটা বলতেই হবে।

মেসির সামনে অনেকগুলো চ্যালেঞ্জ। জার্মানির কিংবদন্তি লোথার ম্যাথিউসের রেকর্ড ভাঙতে চান। ২৫ ম্যাচ খেলে এখন সমানে সমান। গোল করেছেন ১১টি। আট বছর আগে তার স্বপ্ন ভেঙে দিয়েছিল জার্মানি। ছোঁ মেরে কাপ কেড়ে নিয়েছিল। এবার সামনে ফ্রান্স। তারা বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। লড়াইটা কঠিন। অনেকে বলেন, দুই বন্ধুর লড়াই। যদিও মেসি সিনিয়র। কিলিয়ান এমবাপ্পে অপেক্ষাকৃত তরুণ। দু’জনই পিএসজিতে খেলেন। তাদের স্টাইলও আলাদা। জনপ্রিয়তার দিক থেকে মেসি এগিয়ে।

কাতার বিশ্বকাপে দু’টি দলের কেউই অপরাজিত নয়। আর্জেন্টিনা হেরেছে সৌদি আরবের কাছে। আর এমবাপ্পের ফ্রান্স পরাজয়ের স্বাদ পেয়েছে তিউনিশিয়ার কাছে। শক্তির দিক থেকে কেউ কারও চেয়ে কম নয়। তবে এবার মেসির ক্ষিপ্রতা নতুন কোনো বার্তা দিচ্ছে। যেমনটা দিয়েছিল দিয়েগো ম্যারাডোনাকে। ’৮৬’র বিশ্বকাপ ট্রফি হাতে নিয়ে ম্যারাডোনা বলেছিলেন, আর্জেন্টাইনরা অনেকদিন ধরে এর জন্য অপেক্ষায়। পৃথিবীতে শুধু ‘ম্যারাডোনা’ ‘ম্যারাডোনা’ আওয়াজ উঠেছিল। সেখান থেকেই তিনি ফুটবলের কিংবদন্তি। মেসির তখন জন্ম হয়নি। জন্মের পর থেকে বাবা- মায়ের কাছে বিশ্বকাপের সেই স্মৃতির কথাই শুনেছেন। কেউ কি তখন ভেবেছিল- ম্যারাডোনার উত্তরসূরি হবে লিওনেল মেসি! এ নিয়ে অনেক গল্প হতে পারে। হতে পারে অনেক বিশ্লেষণ। মেসি একাধিকবার এর জবাব দিয়েছেন। বলেছেন, আমি তো জানতাম না জীবনে কী হবো। নানা জরিপ বেরিয়েছে। সবক’টা জরিপেই এগিয়ে রাখা হয়েছে আর্জেন্টিনাকে। মেসির হাতেই বিশ্বকাপ ট্রফি মানায়- এমনটাই বলা হচ্ছে।

যদিও এগুলো সবই কল্পনা আর আত্মবিশ্বাসের গল্প। যে গল্প মাঠে উড়ে যায়। সব হিসাবনিকাশ পাল্টে যায়। ফরাসি টিমটা গোছানো। বাড়তি শক্তি এমবাপ্পে। তার দৌড়ের গতি অস্বাভাবিক। বল পেলেই মনে করা হয়- কিছু একটা ঘটতে যাচ্ছে। গ্রিজম্যানকে দেখা যাচ্ছে এবারের বিশ্বকাপে অন্য ভূমিকায়। সারা মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। ফ্রি-কিক নেয়ার ক্ষেত্রে যথেষ্ট দক্ষতার ছাপ রাখছেন। ওদিকে মেসি আর আলভারেজ যদি একসঙ্গে জ্বলে ওঠেন তখন হয়তো নতুন কিছু হবে। ফুটবলে ভাগ্যের একটি বিষয় আছে। যদিও কেউ কেউ এটি মানতে চান না। ভালো খেলেও বিদায় নেয়ার ঘটনা অগণিত। যাই হোক, লুসাইল আইকনিক স্টেডিয়ামে কী হতে যাচ্ছে। বলা বড় কঠিন। ৩৫ হাজার আর্জেন্টাইন এখন দোহায়। লুসাইল স্টেডিয়ামটি তৈরি করা হয়েছে হারিকেনের আদলে। কাতারের জাতীয় দিবসে লুসাইলের আলো চূড়ান্তভাবে কাকে আলোকিত করবে- সেটাই এখন দেখার অপেক্ষায় বিশ্ব।

তাই তো বলা হচ্ছে, মেসি মাঠে আগুন লাগাবেন। এমবাপ্পের কি সেই শক্তি আছে আগুন নেভাবার? যেখানে বাংলাদেশ সহ গোটা ফুটবল বিশ্ব মজে আছেন মেসিতে। মেসির জাদু দেখতে যারা টিভি পর্দা থেকে চোখ সরান না। মেসিকে যেভাবে মূল্যায়ন করেছিলেন দিয়েগো ম্যারাডোনা। সেটা স্মরণ করেই শেষ করতে চাই। তিনি বলেছিলেন, মেসি জিনিয়াস, জিনিয়াস। মেসি বলছেন- দিয়েগো নেই, কাকে বলবো আমি আর্জেন্টাইন, আর্জেন্টিনার জন্য খেলি।

তামাম দুনিয়া এখন মেসিতে বিভোর। তার জাদু দেখার অপেক্ষায়। কাতারে মেসির বন্দনা মুখে মুখে। অনেকে মজা করে বলছেন, ম-তে ম্যাজিক, ম-তে মেসি। আমি বলবো- ম-তে এমবাপ্পেও হয়। আসুন দেখা যাক শেষ অব্দি কী হয়!




আরো






© All rights reserved © 2022-2023 outlookbangla

Developer Design Host BD