বিশ্বকাপের সোনালি ট্রফিতে চুমো দেওয়ার ম্যাচে বহু অর্জনে নাম লেখালেন লিওনেল মেসি। অমরত্বের দিনে বিশ্বমঞ্চে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলার রেকর্ড গড়লেন আর্জেন্টিনাই অধিনায়ক। তিনি ছাড়িয়ে গেলেন জার্মান গ্রেট লোথার ম্যাথিউসকে। একই সঙ্গে প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে বিশ্বমঞ্চে ২০ গোলে সম্পৃক্ত (গোল ও অ্যাসিস্ট) হলেন এই তারকা। লুসাইল স্টেডিয়ামে ফাইনালে ফ্রান্সের বিপক্ষে পেনাল্টি গোলে এই অর্জন ধরা দেয় রেকর্ড সাতবারের ব্যালন ডি’অর জয়ী তারকার।
প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে বিশ্বকাপের এক আসরে গ্রুপপর্ব, শেষ ষোলো, কোয়ার্টার-ফাইনাল, সেমিফাইনাল ও ফাইনালে গোল করলেন ৩৫ বছর বয়সী মেসি। প্রায় একশ বছরের বিশ্বকাপ ইতিহাসে যেখানে পা পড়েনি আর কারো। ফুটবল ইতিহাসে প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে বিশ্বকাপে দুটি ‘গোল্ডেন বল’ জিতলেন মেসি। ২০১৪ বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনাকে ট্রফি এনে দিতে না পারলেও টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় হয়েছিলেন তিনি।
লুসাইল স্টেডিয়ামে গতকাল ফাইনালে ফ্রান্সের বিপক্ষে মাঠে নেমে সর্বোচ্চ ম্যাচ খেলার রেকর্ডটি গড়েন মেসি। সেমিফাইনালে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে মাঠে নেমে ম্যাথিউসের পাশে বসেন তিনি।
সাবেক জার্মান মিডফিল্ডার ম্যাথিউস ২৫ ম্যাচ খেলেন পাঁচটি বিশ্বকাপে- ১৯৮২ (২), ১৯৮৬ (৭), ১৯৯০ (৭), ১৯৯৪ (৫), ১৯৯৮ (৪)। গোল করেন তিনি ৬টি। মেসিও খেলেছেন পাঁচটি বিশ্বকাপ। ২০০৬ আসরে ৩টি, ২০১০ সালে ৫টি, ২০১৪ সালে ৭টি, ২০১৮ সালে ৪টি ও কাতার আসরে ৭ ম্যাচের সব খেলেছেন ৩৫ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড। চার আসরে ২৪ ম্যাচ খেলে তালিকায় তিনে আছেন সাবেক জার্মান ফরোয়ার্ড মিরোস্লাভ ক্লোসা। চার আসরে ২৩ ম্যাচ খেলে তিন নম্বরে ইতালিয়ান গ্রেট পাওলো মালদিনি।
পরের স্থানে আছেন পর্তুগিজ তারকা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো, পাঁচ আসরে তিনি খেলেছেন ২২ ম্যাচ। ম্যাচ সংখ্যার পাশাপাশি বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি সময় খেলার রেকর্ডও গড়ছেন মেসি। চারটি বিশ্বকাপ খেলার পথে জার্মানির পাওলো মালদিনি মোট ২ হাজার ২১৭ মিনিট খেলেছিলেন। গতকাল ফাইনালের নির্ধারিত ৯০ মিনিট ও অতিরিক্ত ৩০ মিনিটসহ মেসি খেলেছেন মোট ২ হাজার ২৯০ মিনিট। ২০০৬ থেকে শুরু করা মেসির এটি টানা পঞ্চম বিশ্বকাপ।
এবারের আসরে আর্জেন্টিনার হয়ে প্রতিটি মিনিটই তিনি মাঠে ছিলেন। এই সোনালি ট্রফি জিততে এবারের আসরে ৭ গোল ও ৩ অ্যাসিস্ট করেছেন মেসি। প্রথম ফুটবলার হিসেবে তিনি গড়েন ভিন্ন পাঁচ আসরে অ্যাসিস্ট এর কীর্তি। ক্রোয়েশিয়ার জালে বল পাঠিয়ে গ্যাব্রিয়েল বাতিস্তুতাকে (১০) ছাড়িয়ে বিশ্বমঞ্চে আর্জেন্টিনার জার্সিতে সবচেয়ে বেশি গোলের রেকর্ড করে নেন একার (১২)।
১৯৬৬ আসর থেকে বিবেচনায় নিয়ে প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে বিশ্বকাপের এক আসরে ভিন্ন তিন ম্যাচে গোল ও অ্যাসিস্ট-এর ডাবল, প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে বিশ্বকাপে ভিন্ন চার ম্যাচে গোল ও অ্যাসিস্ট এর অনন্য অর্জনও তার। ১৯ গোলে সম্পৃক্ত থেকে মেসির পরে আছেন তিন জন- জার্মানির জার্ড মুলার, মিরোস্লাভ ক্লোসা ও ব্রাজিলের রোনালদো। ২৬ ম্যাচে সাতবারের ব্যালন ডি’অরজয়ী জানেন, ম্যাচসংখ্যা বা মিনিটের রেকর্ড যতই হোক, সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি ওই সোনালি ট্রফিই।