বুধবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:০১ পূর্বাহ্ন




রাশিয়াও বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলাচ্ছে

আউটলুক বাংলা রিপোর্ট
  • প্রকাশের সময়: রবিবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২২ ৬:৩০ pm
Vladimir Putin president ভ্লাদিমির ভ্লাদিমিরোভিচ পুতিন রাশিয়া প্রেসিডেন্ট putin Russian-Flag ওয়াশিংটন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আমেরিকা North America United States United State usa USA Russia রাশিয়া যুক্তরাষ্ট্র
file pic

বাংলাদেশের গণতন্ত্রসহ অন্যান্য মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন পশ্চিমা রাষ্ট্র দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন সময়ে মন্তব্য করে আসছে।

সম্প্রতি রাশিয়া পশ্চিমা দেশগুলোর এ ধরনের ভূমিকাকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলানোর শামিল হিসেবে মন্তব্য করেছে।

এমন প্রেক্ষাপটে সাবেক কূটনীতিকরা মনে করেন, বাংলাদেশে দুই বৈশ্বিক শক্তির পেশি প্রদর্শন দেশের জন্য এক কঠিন পরিস্থিতি তৈরি করেছে। কারণ, একদিকে পশ্চিমা বিশ্বের মন্তব্য যেমন দেশের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট, অপরদিকে রাশিয়ার মন্তব্যও একই নীতিতে জেনেভা কনভেনশনের লঙ্ঘন বলে মনে করেন তারা।

সাবেক পররাষ্ট্র সচিব তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘রাশিয়া যা বলছে, সরাসরি অথবা সরাসরি নয়, সেটিও বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলানো। এখানে যুক্তরাষ্ট্র আমাদের বিষয়ে কী বলছে, সেটি রাশিয়ার বিষয় নয়। আমরা মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে সামলাবো।’

সাবেক পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘‘রাশিয়ানদের ভাষ্য-‘বাংলাদেশের বিষয়ে নাক গলানো গ্রহণযোগ্য নয়।’ আবার তারাই ইউক্রেনে সৈন্য পাঠাচ্ছে এবং এটি তো হতে পারে না। রাশিয়া এক হিসেবে আমাদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। যদিও সেটি পুরোপুরি তাদের নিজেদের স্বার্থে নিয়েছে, আমাদের স্বার্থে নয়। এখন সেটি বিরোধিতা করাও সরকারের জন্য কঠিন।’’

রাশিয়া পক্ষ নিয়েছে, কিন্তু যেভাবে নিয়েছে, সেটিও আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলানোর শামিল জানিয়ে তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘এটি স্বাগত জানানোর মতো বিষয় নয়। আমি মনে করি না বাংলাদেশের সঙ্গে কোনও দেশের অস্বস্তিকর সম্পর্ক রয়েছে যে এখানে দুইপক্ষ তাদের লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। এটি কাম্য নয়।’

যুক্তরাষ্ট্র যা বলেছে, সেটিও অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলানোর শামিল জানিয়ে তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র যে মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের কথা বলে সেটিও সব দেশের জন্য প্রযোজ্য নয়। এটি মধ্যপ্রাচ্যে প্রযোজ্য নয়, এটি মিসর বা ইসরায়েলে প্রযোজ্য নয়। এটি আমাদের জন্য প্রযোজ্য, কিন্তু এটি কেন এখানে প্রযোজ্য, সেটি একটি বড় প্রশ্ন।’

বাংলাদেশের অবস্থান

দুই বৃহৎ শক্তির পাল্টাপাল্টি মন্তব্যে বাংলাদেশকে কোনও পক্ষ নিতে হবে বলে মনে করেন না সাবেক পররাষ্ট্র সচিব তৌহিদ হোসেন।

তিনি বলেন, ‘রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের সংঘাতের কারণে আমাদের কোনও পক্ষে যোগ দিতে হবে, বিষয়টি সে রকম নয়।’

বক্তব্য ও পাল্টা বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া দেখানো কঠিন বলে মনে হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের করণীয় হচ্ছে-তাদের বক্তব্য চুপচাপ শুনতে থাকা। এটি বাস্তবতা। আমরা রাশিয়ানদের চুপ থাকতে বলতে পারবো না। আবার যুক্তরাষ্ট্রকে বলতে পারবো না-তোমরা কথা বলা বন্ধ না করলে তোমাদের বের করে দেবো।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সাবেক একজন কূটনীতিক বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে কারও শত্রুতা নেই। আমরা কোনও ধরনের সংঘাতে জড়াতে চাই না। একই সঙ্গে বাংলাদেশ কোনও সংঘাতের ক্ষেত্র হয়ে উঠুক, এটিও আমরা চাই না।

তিনি বলেন, এক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো উপায় হচ্ছে-একটি প্রকাশ্য বিবৃতি দিয়ে উভয়পক্ষকে সতর্ক করা। কিন্তু এটি করাও বিভিন্ন কারণে দুরূহ। এজন্য কূটনৈতিক নিয়ম অনুসরণ করে, সবার সঙ্গে পর্দার আড়ালে আলোচনা করে বিষয়টি মীমাংসা করা দরকার।

নতুন করে সৃষ্ট স্নায়ুযুদ্ধের শিকার হলে বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা ব্যাহত হবে জানিয়ে তিনি বলেন, কিন্তু সমস্যা হচ্ছে-বৃহৎ শক্তির সংঘাত বাংলাদেশ নিয়ন্ত্রণ করে না। বর্তমান প্রেক্ষাপটে সবদিক বিবেচনা করে ভারসাম্যমূলক অবস্থান বজায় রাখা-আগের যেকোনও সময়ে থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। [বাংলা ট্রিবিউন]




আরো






© All rights reserved © outlookbangla

Developer Design Host BD