২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে গুচ্ছে ভর্তির ষষ্ঠ মেধাতালিকা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভাগ মাইগ্রেশন চালু ছিল। সপ্তম মেধাতালিকা প্রকাশের পর প্রাথমিকভাবে ভর্তি হওয়া বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া অন্য কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য সুযোগ বন্ধ হয়েছে।
গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া তানজিল আল নাঈফ মাইগ্রেশনের মাধ্যমে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে চান। তবে গুচ্ছ কমিটির নেয়া নতুন সিদ্ধান্তে তার আশা পূরণ হচ্ছে না।
২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে গুচ্ছে ভর্তির ষষ্ঠ মেধাতালিকা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভাগ মাইগ্রেশন চালু ছিল। সপ্তম মেধাতালিকা প্রকাশের পর প্রাথমিকভাবে ভর্তি হওয়া বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া অন্য কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য সুযোগ বন্ধ হয়েছে।
টেকনিক্যাল কমিটির এ সিদ্ধান্তে গুচ্ছে প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আসন ফাঁকা থাকলেও শিক্ষার্থীরা ভর্তি হতে পারছেন না। এতে হতাশা প্রকাশ করেছেন তারা।
নতুন সিদ্ধান্ত নেয়ার পর পরই ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা গুচ্ছের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন। করেছেন মানববন্ধন ও অনশন কর্মসূচিও। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ও গুচ্ছ ভর্তি কমিটির সদস্য সচিব প্রকৌশলী মো. ওহিদুজ্জামানের কাছেও স্মারকলিপি দেন তারা।
শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষাপটে মাইগ্রেশন বন্ধের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করতে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা সংশ্নিষ্ট কমিটি বৈঠক করে। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের অংশগ্রহণে সে বৈঠকে মাইগ্রেশন বন্ধের সিদ্ধান্তই পুনর্বহাল রাখা হয়। দ্রুত ভর্তি কার্যক্রম শেষ করতে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপাচার্যরা।
এ ছাড়া গুচ্ছ ভর্তি কার্যক্রমের ধীরগতিতে হতাশা প্রকাশ করেছেন ভর্তি হওয়া অনেক শিক্ষার্থী। গুচ্ছে ভর্তির আবেদন শুরু হয় ১৭ অক্টোবর। এরপর আড়াই মাস কেটে গেলেও এখন সম্পন্ন হয়নি ভর্তি কার্যক্রম।
গুচ্ছের বি ইউনিটে প্রথম হয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগে ভর্তি হওয়া দিগন্ত বিশ্বাস বলেন, আমাদের সঙ্গের বন্ধুরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এক সেমিস্টার শেষ করে ফেলেছে। আর আমরা এখনও শুরুই করতে পারলাম।
রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক হাসিবুর রশীদ বলেন, ‘গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা কমিটির সর্বশেষ সভার সিদ্ধান্ত বহাল আছে। কোনো পরিবর্তন আসেনি।’
ভর্তি কমিটির যুগ্ম আহবায়ক ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক দেশের বাইরে অবস্থান করায় তার সঙ্গে যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।
গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা কমিটির আরেক যুগ্ম-আহ্বায়ক ও শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় মাইগ্রেশন ও সপ্তম মেরিট লিস্ট থেকে ভর্তি প্রক্রিয়া আমাদের একক কোনো সিদ্ধান্ত না। গুচ্ছভুক্ত সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের সম্মিলিত বৈঠকে এটি বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।’
মাইগ্রেশন নিয়ে আলাদা নিয়মের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যারা নম্বর কম পেয়েছে তারা তো আর ভর্তি হতে পারবে না আমরা তো তাদের ভর্তি হওয়ার জন্য সুযোগ দিয়েছি, অভ্যন্তরীণ মাইগ্রেশন চালু রেখেছি।’
অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন বলেন, ‘ডিসেম্বরের মধ্যেই আমরা ভর্তি কার্যক্রম শেষ করতে চাচ্ছি। এখন আমাদের প্রায় ৭০ থেকে ৭৮ শতাংশ ভর্তির কার্যক্রম শেষ হয়েছে। আগামী মাসের ক্লাস শুরু করার চিন্তাভাবনা করছি।’
গত ৩০ জুলাই দেশের ১৯ কেন্দ্রের ৫৭টি ভেন্যুতে একযোগে গুচ্ছের ‘ক’ ইউনিটের, ১৩ আগস্ট মানবিক অনুষদভুক্ত ‘বি’ ইউনিটের এবং ২০ আগস্ট বাণিজ্য অনুষদভুক্ত ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
গুচ্ছের এবারের ভর্তি পরীক্ষায় ‘ক’ ইউনিটে ৮৫ হাজার ৫৮২ জন, ‘বি’ ইউনিটে ৪৮ হাজার ১০৬ জন এবং ‘সি’ ইউনিটে ২৩ হাজার ২২৮ জন ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী পাস করেছেন।