সোমবার, ২৪ মার্চ ২০২৫, ০৮:২১ অপরাহ্ন




ইসলামী ব্যাংককে ৮ হাজার কোটি টাকার বিশেষ ধার দিলো কেন্দ্রীয় ব্যাংক

আউটলুক বাংলা রিপোর্ট
  • প্রকাশের সময়: সোমবার, ২ জানুয়ারী, ২০২৩ ১১:৪৮ am
money laundering illegal process money generated criminal drug trafficking terrorist funding illegally concealing illicit drug trafficking corruption embezzlement gambling converting legitimate source crime jurisdictions আমদানি ওভার ইনভয়েসিং রপ্তানি আন্ডার-ইনভয়েসিং আমদানি-রপ্তানি অবৈধ জাল অর্থ পাচার জিএফআই মানি লন্ডারিং আর্থিক খাত গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট বিএফআইইউ হুন্ডি অর্থ পাচার Per capita income মাথাপিছু আয় Reserves Reserve রিজার্ভ remittance রেমিট্যান্স প্রবাসী আয় ডলার dollar Pagla Mosque পাগলা মসজিদ কোটি টাকা Per capita income মাথাপিছু আয় Reserves Reserve রিজার্ভ remittance রেমিট্যান্স প্রবাসী আয় ডলার dollar Pagla Mosque পাগলা মসজিদ কোটি টাকা
file pic

তারল্যসংকট আরও প্রকট হয়েছে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডে। বিদায়ী বছরের নভেম্বর ও ডিসেম্বরে মোট ২৪ দিন বাংলাদেশ ব্যাংকে নগদ অর্থ জমা রাখতে (সিআরআর) ব্যর্থ হয়েছে। এ জন্য জরিমানা গুনছে ব্যাংকটি। গ্রাহকদের চাহিদা মেটাতে ও আমানতের বিপরীতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চাহিদামতো তারল্য জমা রাখতে ৮ হাজার কোটি টাকা বিশেষ ধার নিয়েছে ইসলামী ব্যাংক।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিরল এই সুবিধা দিয়েছে। ইতিমধ্যে কোনো সুকুক বন্ড জমা ছাড়াই ৮ হাজার কোটি টাকা দিয়েছে। যার সুদের হার ৮ দশমিক ৭৫ শতাংশ। সাধারণত সুকুক বন্ড ও বাংলাদেশ সরকার ইসলামিক বিনিয়োগ বন্ড জমা দিয়ে শরিয়াহ ব্যাংকগুলো টাকা ধার নেয়।

তবে ইসলামী ব্যাংকের ব্যবহারযোগ্য বন্ড শেষ হয়ে এসেছে। ফলে বিরল এই ব্যবস্থায় টাকা ধার দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। যদিও শরিয়াহ ব্যাংকগুলোকে নির্দিষ্ট সুদে টাকা ধার নেওয়ার সুযোগ নেই।

ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মুহাম্মদ মুনিরুল মওলা গত ২৯ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে এক চিঠিতে এই বিশেষ তহবিল চেয়ে আবেদন করেন।

আবেদনের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক এই অনুমোদন দেয়। গত বছরের শেষ কার্যদিবসে ব্যাংকটিকে ৮ হাজার কোটি টাকা দেওয়া হয়। এর ফলে গত বছরের আর্থিক প্রতিবেদনে প্রকৃত চিত্রের পরিবর্তনে তুলনামূলক ভালো দেখানোর সুযোগ পায় ইসলামী ব্যাংক।

এ নিয়ে মুহাম্মদ মুনিরুল মওলা বলেন, ‘ব্যাংকের কোনো তারল্যসংকট নেই। পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে।’

ইসলামী ব্যাংকের ঋণ অনিয়মের বিষয়টি সম্প্রতি আলোচনায় এলে অনেক সাধারণ ও করপোরেট গ্রাহক আমানত অন্য ব্যাংকে সরিয়ে নেয়। কোনো কোনো গ্রাহক ব্যাংকটিতে রাখা ডলারও সরিয়ে নেয়। এর ফলে নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে ব্যাংকটি টাকা ও ডলার-উভয়সংকটে পড়ে।

এমন পরিস্থিতিতে নভেম্বর মাসে কয়েক দিন ও ডিসেম্বর মাসের বেশির ভাগ দিন কেন্দ্রীয় ব্যাংকে আমানত ও দায়ের বিপরীতে সিআরআর রাখতে ব্যর্থ হয়। এমন পরিস্থিতিকে বাংলাদেশ ব্যাংক অর্ডার অনুযায়ী চলমান নগদ জমা ঘাটতি বলা হয়। এ জন্য ব্যাংকের পরিচালক, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ট্রেজারি প্রধানদের প্রতিদিন জরিমানা গুনতে হয়। পরিস্থিতি আরও খারাপ হলে আমানত গ্রহণ বন্ধ করে দিতে পারে বাংলাদেশ ব্যাংক।

ইসলামী ব্যাংকের আমানত এখন ১ লাখ ৪০ হাজার কোটি টাকা। গত ৩১ অক্টোবর যা ছিল ১ লাখ ৫৩ হাজার কোটি টাকা। ইসলামী ব্যাংকের আমানত কমতে শুরু করলে শরিয়াহ ব্যাংকগুলোর জন্য বিশেষ তারল্যসুবিধা চালু করে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে কয়েক দিনেই টাকা ধার নেওয়ার জন্য ব্যবহারযোগ্য বন্ড শেষ হয়ে যায় ব্যাংকটির।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ধারাবাহিক সিআরআর ঘাটতির পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৮ ডিসেম্বর ঘাটতি দাঁড়ায় ৫ হাজার ১০১ কোটি টাকা। এ জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চোখে ব্যাংকটির তারল্য পরিস্থিতি অত্যন্ত নাজুক। ইসলামি ব্যাংকগুলোর আমানত ও দায়ের বিপরীতে ৪ শতাংশ সিআরআর ও সাড়ে ৫ শতাংশ বিধিবদ্ধ জমা (এসএলআর) রাখতে হয়।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কিছু কর্মকর্তার পরামর্শে ২৯ ডিসেম্বর ব্যাংকটির এমডি বিশেষ তারল্য সহায়তা চেয়ে আবেদন করে। সেদিন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা আইনকানুন পর্যালোচনা করে দেখে, যেসব সুবিধার আওতায় প্রচলিত ব্যাংকগুলোকে টাকা ধার দেওয়া যায়, ইসলামি ধারার ব্যাংকগুলোকে সেভাবে ধার দেওয়া যায় না। এ জন্য লেন্ডার অব লাস্ট রিসোর্ট হিসেবে ব্যাংকটিতে স্পেশাল রেপো রেটে এক দিনের জন্য টাকা ধার দেওয়ায় সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক বলেন, কোনো ব্যাংক তারল্যসংকটে পড়লে শেষ আশ্রয়স্থল হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংক সহায়তা দিয়ে থাকে। ইসলামী ব্যাংক তারল্য সহায়তা চেয়েছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক ৮ হাজার কোটি টাকা দিয়েছে। এমন সংকট অব্যাহত থাকলে আরও সহায়তা দেওয়া হবে। এর আগে পদ্মা ও আইসিবি ইসলামিক ব্যাংককেও এই সুবিধা দেওয়া হয়েছিল।

তবে কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে এভাবে তারল্য সহায়তা দিয়ে ব্যাংকটির পরিস্থিতি উন্নতি করা যাবে না বলে মনে করেন খাতসংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা। পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘ইসলামী ব্যাংকে এভাবে জনগণের টাকা ঢালার আগে সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংককে বুঝতে হবে ব্যাংকটির সমস্যাটা কত বড়।

ব্যাংকটিতে জনগণ টাকা রেখেছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকও জনগণের টাকা ঢালছে। তাই সবকিছু বিবেচনা করে ব্যাংকটির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। কারণ, ইসলামী ব্যাংক হলো দেশের শীর্ষ ব্যাংক।’

আহসান এইচ মনসুর আরও বলেন, ‘জবাবদিহি প্রতিষ্ঠা ছাড়া এভাবে টাকা ঢেলে লাভ হবে না। এতে অনিয়ম-দুর্নীতি উৎসাহিত হবে। ফুটো পাত্রে পানি ঢালার আগে ফুটোটা আসলে কত বড়, এটা বের করা জরুরি। কারণ, টাকার ভান্ডার একদিন শেষ হয়ে যাবে। সংকট ছড়িয়ে পড়বে পুরো অর্থনীতিতে।’ [প্রথম আলো]




আরো






© All rights reserved © outlookbangla

Developer Design Host BD