ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডগুলোতে ইসরায়েলি দখলদারির ব্যাপারে আন্তর্জাতিক আদালতের কাছে আইনি মতামত চেয়েছে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ।
এ ব্যাপারে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের এক ভোটাভুটিতে ৮৭টি দেশ এর পক্ষে মত দেয়।
আন্তর্জাতিক আদালতের রুলিংএর আইনি বাধ্যবাধকতা থাকলেও এ আদালত নিজে তা প্রয়োগ করার জন্য কোন দেশকে বাধ্য করতে পারে না।
জর্ডন নদীর পশ্চিম তীর – যা ওয়েস্ট ব্যাংক নামে পরিচিত – তা ১৯৬৭ সালের যুদ্ধে দখল করে নেয় ইসরায়েল। একই সময় পূর্ব জেরুসালেমও দখল করে তারা। এ ছাড়া গাজা এলাকাটি থেকে ২০০৫ সালে ইসরায়েলি প্রত্যাহারের পরও এখনো জাতিসংঘ এটিকে অধিকৃত এলাকার অংশ মনে করে।
ইসরায়েল সম্পূর্ণ জেরুসালেম শহরটিকেই তাদের রাজধানী বলে দাবি করে – যাকে যুক্তরাষ্ট্রসহ মাত্র অল্প কয়েকটি দেশ স্বীকৃতি দিয়েছে।
অন্যদিকে ফিলিস্তিনিরা পূর্ব জেরুসালেমকে ভবিষ্যৎ ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের রাজধানী, এবং পশ্চিম তীর ও গাজাকে সেই রাষ্ট্রের ভূখণ্ডের অন্তর্ভুক্ত বলে দাবি করে।
ইসরায়েল এই অধিকৃত ভূখন্ডে এ পর্যন্ত প্রায় ১৪০টি বসতি নির্মাণ করেছে – যাতে বাস করে প্রায় ৬০০,০০০ ইহুদি।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অধিকাংশ দেশই এসব বসতিকে আন্তর্জাতিক আইনে অবৈধ বলে মনে করে, যদিও ইসরায়েল তা মানে না।
প্রস্তাবের পক্ষে ভোটদানকারী দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে রাশিয়া, চীন ও মুসলিম দেশগুলো। অন্যদিকে এর বিপক্ষে ভোট দেয় যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন ও জার্মানি ।
জাতিসংঘের এ ভোটাভুটি এমন এক সময় হলো যখন একদিন আগেই ইসরায়েলের ইতিহাসে সবচেয়ে কট্টরপন্থী মন্ত্রিসভা গঠন করে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন বিনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
নতুন এই সরকার অঙ্গীকার করেছে যে – তারা পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের অনুমোদন ছাড়া নির্মিত ১০০ বসতি বা ‘আউটপোস্ট’কে বৈধতা দেবে এবং পশ্চিম তীরকে ইসরায়েলের অঙ্গীভূত করে নেবে।
নতুন এই সরকার তাদের বুধবার প্রকাশিত নীতিমালায় বলছে, ইসরায়েল নামের ভূমির সব জায়গার ওপর ইহুদিদের ‘প্রশ্নাতীত’ অধিকার আছে ।
ইসরায়েলি দখলের ওপর আন্তর্জাতিক আদালতের আইনি মতামত চাওয়ার জন্য জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে যে ভোট হয়েছে – তার ফলাফলকে স্বাগত জানিয়েছে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ।
ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের একজন মুখপাত্র বলেছেন, “ইসরায়েল, ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে যে অপরাধ করে চলেছে তার জবাবদিহি করার সময় এসেছে।“
অন্যদিকে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু এই ভোটকে ‘জঘন্য’ বলে অভিহিত করে বলেছেন ইহুদিরা তাদের নিজেদের ভূমিতে দখলদার হতে পারে না।
প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোটদানকারী ব্রিটেনের প্রতিনিধিদলের একজন মুখপাত্র বলেছেন, আন্তর্জাতিক আদালতের কাছে যাওয়াটা দুই পক্ষকে সংলাপে ফিরিয়ে আনার অনুকূল হবে বলে তারা মনে করেন না।