শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫, ০৭:৪৯ অপরাহ্ন




হিলিতে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে সরিষা চাষ

আউটলুক বাংলা রিপোর্ট
  • প্রকাশের সময়: বৃহস্পতিবার, ৫ জানুয়ারী, ২০২৩ ১১:১২ am
Mustard plant Brassica Cruciferae seed জাত সফল সরিষা ব্রাসিকা ক্রুসিফেরি তৈলফসল সরিষার দানা মশলা শাক সরিষা
file pic

চাহিদা বাড়ায় ও ভালো দাম পাওয়ায় হিলিতে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে সরিষার চাষাবাদ। চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় সরিষার ভালো ফলনের সঙ্গে বেশি দাম পাওয়া আশা করছেন কৃষকরা।

এদিকে, ভোজ্যতেলের আমদানি নির্ভরতা কমানোর পাশাপাশি স্থানীয় চাহিদা মেটাতে সরিষা চাষে কৃষকদের প্রণোদনা দেওয়াসহ সব ধরনের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ।

স্থানীয় সূত্র জানায়, হিলির বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে এখন হলুদের সমারোহ। মাঠের পর মাঠ ছেয়ে গেছে সরিষার হলুদ ফুলে। সবুজের মাঝে হলুদের মেলা প্রকৃতিকে সাজিয়েছে অপরূপ সাজে। হলুদের মৌ মৌ গন্ধে মুখরিত পুরো এলাকা। খরচ কম ও লাভজনক হওয়ায় পতিত জমিতে বাড়তি ফসল তুলতে সরিষার চাষাবাদে ঝুঁকেছেন কৃষকরা। সেইসঙ্গে ভোজ্যতেলের দাম বাড়ায় পরিবারের তেলের চাহিদা মেটাতে সরিষা চাষে ঝুঁকছেন তারা। গতবার ভালো দাম পাওয়ায় সরিষা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন কৃষকরা।

চলতি বছর এক হাজর ৮০০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও দুই হাজার ৪৭০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ।

হিলির ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের কৃষক সাইফুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ক্ষেত থেকে আমন ধান কর্তনের পর বোরো ধান আবাদের আগ পর্যন্ত সময়টাতে জমি একেবারে পড়ে থাকে। ফলে এই সময়টাতে সরিষা আবাদ করে আবারও বোরো ধান লাগাবো। এছাড়া সরিষা আবাদের খরচ কম। তাই সরিষা চাষ করেছি। গত বছর দেড় বিঘা জমিতে সরিষা চাষাবাদ করেছিলাম। পরিবারের তেলের চাহিদা মিটিয়ে লাভজনক হওয়ায় এবার দুই বিঘা জমিতে লাগিয়েছি। বর্তমানে যে আবহাওয়া রয়েছে তাতে আশা করছি ফলন ভালো হবে। গতবারের চেয়ে এবার লাভ ভালো হবে।

হিলির ইসমাইলপুরের কৃষক লুৎফর রহমান বলেন, ‌আমাদের এই অঞ্চলে আগে দুটি ফসল আবাদ হতো। এক হলো আমন মৌসুমের ধান অপরটি হলো বোরো মৌসুমের ধান। বর্তমানে সেই অবস্থা থেকে বেরিয়ে প্রচুর সরিষা চাষাবাদের দিকে ঝুঁকেছেন কৃষকরা। এর মূল কারণ হলো কিছুদিন আগে জমি থেকে আমন ধান কাটা শেষ করেছি। এখন প্রস্তুতি নিচ্ছি বোরো ধান রোপণের। এর মাঝের সময়টাতে জমি ফেলে না রেথে তাতে সরিষা চাষাবাদ করেছি। এতে খরচটা কম। এজন্য আবাদ করেছি।

হিলির জালালপুর গ্রামের কৃষক বাদল মার্ডি বলেন, সরিষা আমাদের বাড়তি আয়ের উৎস হয়। তেলের চাহিদা পূরণ হয়। আবার গরুর খৈল পাওয়া যায়।

একই গ্রামের কৃষক সুজন হোসেন বলেন, এবারে আবহাওয়া ভালো থাকায় গতবারের চেয়ে সরিষা বেশ ভালো হয়েছে। গতবার সরিষার মণ ছিল ২৮০০ থেকে তিন হাজার টাকা। এবার দাম আরও বেশি পাবো বলে আশা করছি। প্রতি বিঘা জমিতে সরিষা চাষে খরচ হয় চার-পাঁচ হাজার টাকা। বিঘাপ্রতি সরিষা পাওয়া যায় পাঁচ-ছয় মণ। তাতে খরচ বাদ দিয়ে ১০ হাজার টাকার মতো লাভ হয়।

হাকিমপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ড. মমতাজ সুলতানা বলেন, তেলের আমদানি নির্ভরতা কমাতে সরিষার চাষাবাদ বাড়াতে কৃষকদের সব ধরনের পরামর্শ দিচ্ছি আমরা। সেইসঙ্গে সরকারি প্রণোদনার আওতায় ২২০০ কৃষককে সরিষা বীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছে। সরকারকে যাতে সয়াবিন তেল কম আমদানি করতে হয় তার ওপর জোর দিচ্ছি আমরা। আশা করছি সেটি করতে সক্ষম হবো আমরা। গত বছর ভালো দাম পাওয়ায় কৃষকরা সরিষা চাষাবাদে ঝুঁকেছেন। আবহাওয়া যদি ভালো থাকে তাহলে আশা করছি এবারও ভালো ফলন হবে। [BT]




আরো






© All rights reserved © outlookbangla

Developer Design Host BD