বুধবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:০৮ পূর্বাহ্ন




এবার পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা ৭ ডিগ্রিতে

আউটলুক বাংলা রিপোর্ট
  • প্রকাশের সময়: সোমবার, ৯ জানুয়ারী, ২০২৩ ১২:২৮ pm
Mild cold wave highway hig hway cool আবহাওয়া তাপমাত্রা পূর্বাভাস কুয়াশা লঘুচাপ বঙ্গোপসাগর সেলসিয়াস tem Weather আবহাওয়া Rain বৃষ্টি Cold wave শৈত্যপ্রবাহ শৈত্য প্রবাহ Climate Change Conference COP27 winter season temperate climate polar autumn coldest Cold পৌষ মাঘ শীতকাল তাপমাত্রা ঋতু হিমেল হাওয়া হাড় কাঁপুনি সর্দিজ্বর ঠান্ডা Cold wave cool আবহাওয়া তাপমাত্রা পূর্বাভাস কুয়াশা লঘুচাপ বঙ্গোপসাগর সেলসিয়াস tem Weather আবহাওয়া Rain বৃষ্টি Cold wave শৈত্যপ্রবাহ শৈত্য প্রবাহ Climate Change Conference COP27 winter season temperate climate polar autumn coldest Cold পৌষ মাঘ শীতকাল তাপমাত্রা ঋতু হিমেল হাওয়া হাড় কাঁপুনি সর্দিজ্বর ঠান্ডা Cold wave cool
file pic

হিমালয়কন্যা পঞ্চগড়ের তাপমাত্রা নামল ৭ ডিগ্রিতে। এর মধ্যে চলছে শৈত্যপ্রবাহ। টানা তিনদিন মৃদু শৈত্যপ্রবাহের পর ২ দশমিক ৪ ডিগ্রি তাপমাত্রা কমে তা মাঝারি শৈত্যপ্রবাহে রূপ নিয়েছে। সোমবার (৯ জানুয়ারি) পঞ্চগড়ে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।

সোমবার পঞ্চগড়ে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হওয়ার বিষয়টি জানিয়েছেন জেলার প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ।

এ দিন ভোর ৬টায় রেকর্ড করা হয় ৭ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। টানা তিনদিন প্রায় সাড়ে ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ডের পর ৭ ডিগ্রি তাপমাত্রায় মাঝারি শৈত্যপ্রবাহের দাপটে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে পুরো জেলা।

জেলার আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বইছে। শুক্রবার থেকে রোববার পর্যন্ত তাপমাত্রা ৯.৬, ৯.৫ ও ৯.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হয়েছিল। যা গতকালের (রোববার) ৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমে আজ ৭ ডিগ্রিতে পৌঁছেছে। যা মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ।

এর আগে, জেলায় ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে স্মরণকালের সবচেয়ে কম ২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল।

ভোর থেকে ঘন কুয়াশায় ঢাকা থাকছে পুরো জেলা। বেলা বাড়লেও কুয়াশা ভেদ করে সূর্যের মুখ দেখা গেলেও মেলে না রোদের উষ্ণতা। বিকেল গড়ালেই হিমেল হাওয়া বাড়তে থাকে। সন্ধ্যার পর থেকেই বাড়তে থাকে শীতের তীব্রতা।

শীতের তাণ্ডবে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন শ্রমজীবী-কর্মজীবী গরীব অসহায় মানুষেরা। পাথর শ্রমিক, চা শ্রমিক, দিনমজুর থেকে শুরু করে রিকশা-ভ্যানচালক মানুষগুলো পড়েছেন বিপাকে। ভোর-সকালে শীতের তীব্র প্রকোপের কারণে কাজে যেতে পারছেন না অনেকে। তবুও পেটের তাগিদে কাউকে নদীতে পাথর তুলতে, কাউকে চা-বাগানে আবার কাউকে দিনমজুরের কাজ করতে যেতে দেখা গেছে। শীতের দুর্ভোগ বেড়েছে শিশু ও বয়স্কদের মধ্যে। এসব মানুষের কষ্ট লাঘবের জন্য সরকার যে ত্রাণ দিয়েছে তা একেবারেই অপ্রতুল বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

চা শ্রমিক জামাল, জাহেরুল ও নাসির জানান, সকালে বরফের মতো ঠান্ডা। চা বাগানে কাজ করতে গেলে হাত-পা অবশ হয়ে আসে। কিন্তু জীবিকার তাগিদে কাজে বের হতে হয় আমাদের।

পাথর শ্রমিক ইমরান, আরশাদ আলী ও আবু তাহের জানান, ঠান্ডায় নদীর পানি বরফের মত মনে হয়। তারপরেও আমাদের পাথরই জীবিকা। তাই কাজে বেড়িয়েছি। কয়েকদিন ধরে নদীর ঠান্ডা পানিতে কাজ করে জ্বর-সর্দিতে ভুগলাম। ক্ষুধার্ত পেটতো ঠান্ডা বুঝে না। কিন্তু পরিবারের কথা চিন্তা করে সকালেই পাথর তোলার সরঞ্জাম নিয়ে বেড়িয়ে পড়েছি। একই কথা জানান কয়েকজন দিনমজুর ও নারী পাথর শ্রমিকরা।

নারী পাথর শ্রমিকরা জানান, তীব্র শীতের কারণে তাদেরও কাজে যেতে কষ্ট হচ্ছে। ঘর সংসার সামলে জীবিকার তাগিদে কাজে যেতে হচ্ছে। শীতের কারণে কাজে যেতে দেরি হলে মহাজনরা অনেক সময় কাজে নিতে চান না।

বীজতলা নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কৃষকরাও। তারা জানান, ঘন কুয়াশা আর কনকনে শীতের কারণে ক্ষেতখামারে কাজ করতে পারছেন না। দেরিতে মাঠে যেতে হচ্ছে। এখন বোরো মৌসুম। ভুট্টা, মরিচ, গমসহ বিভিন্ন ফসলের বীজ বপন করতে হচ্ছে। শীতের কারণে দেরি করে জমিতে গিয়ে কাজ এগুচ্ছে না বলেও জানান তারা।

শীতের কারণে পড়ালেখা স্থবির হয়ে পড়েছে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদেরও। সকালে স্কুল শিক্ষার্থী তানিয়া, কাজল ও নাইমা খাতুন জানায়, কনকনে শীত। রাতেও শীতের কারণে পড়তে পারি না। রাতের তাপমাত্রা অনেক কমে যায়। সকালে কুয়াশা আর বাতাসের কারণে প্রাইভেট পড়তে ও স্কুলে যেতে কষ্ট হচ্ছে।

এদিকে শীতে প্রকোপে বেড়েছে নানান শীতজনিত রোগ। জ্বর, সর্দি-কাশি, শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়া, নিউমোনিয়াসহ ঠান্ডাজনিত রোগ নিয়ে হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হচ্ছেন রোগীরা। উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রতিদিন সকাল থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত শতাধিক রোগী চিকিৎসা নিতে আসছেন। এদের মধ্যে বেশিরভাগই শিশু।

চিকিৎসকরা বলেন, আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে রোগীর চাপ বেড়েছে। এমনিতে শীত মৌসুমে আবহাওয়া শুষ্ক থাকায় বাতাসে জীবাণুর পরিমাণ বেড়ে যায়। শীতজনিত রোগ হিসেবে সর্দি-কাশি, শ্বাসকষ্ট বেশি হয়ে থাকে। আর শিশু ও বয়োজ্যেষ্ঠরা শীতজনিত রোগে বেশি আক্রান্ত হয়। তাই এ সময়টাতে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে পারলে কিছুটা হলেও সুরক্ষা মিলবে।

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ বলেন, জেলায় আজ মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বইছে। গতকালের থেকে তাপমাত্রা কমেছে ২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সোমবার সকাল ৯টায় জেলায় ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হয়েছে। যা সারাদেশের সর্বনিম্ন। ভোর ৬টায় ৭ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। রোববার রেকর্ড করা হয়েছিল ৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা। উত্তর-পূর্বকোণ থেকে ৩ নটিক্যাল গতিতে বয়ে যাওয়া হিমেল বাতাসের কারণে বেশি ঠান্ডা অনুভব হচ্ছে।




আরো






© All rights reserved © outlookbangla

Developer Design Host BD