সোমবার, ২৪ মার্চ ২০২৫, ০৬:৪২ অপরাহ্ন




কর্ণফুলী টানেলের ব্যয় বাড়ছে ৩ শতাংশ

আউটলুক বাংলা রিপোর্ট
  • প্রকাশের সময়: শনিবার, ১৪ জানুয়ারী, ২০২৩ ১:২৪ pm
সুড়ঙ্গ karnaphuli Bangabandhu Sheikh Mujibor Rahman Tunnel কর্ণফুলী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল সুড়ঙ্গ
file pic

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তলদেশে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল’ নির্মাণ প্রকল্পের ব্যয় আরও ৩ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।

দ্বিতীয়বার সংশোধন করার এই প্রস্তাব অনুমোদন পেলে প্রকল্প ব্যয় দাঁড়াবে ১০ হাজার ৬৯০ কোটি টাকা। প্রকল্পটির মেয়াদ আরও এক বছর বাড়িয়ে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে কাজ শেষ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

সংশোধন প্রস্তাবটি আগামী মঙ্গলবার অনুষ্ঠেয় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় উপস্থাপন করা হতে পারে বলে পরিকল্পনা কমিশনের সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

প্রকল্প পরিচালক মো. হারুনুর রশিদ চৌধুরী বলেন, “এবার মূলত ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণেই প্রকল্পের ব্যয় ৩ শতাংশ বাড়ছে। ডলারের দাম না বাড়লে এই সংশোধনের প্রয়োজন হত না।”

তিনি জানান, ২০১৫ সালে এই প্রকল্প গ্রহণের সময় টাকার বিপরীতে ডলারের বিনিময় হার ধরা হয়েছিল ১ ডলারে ৮২ টাকা ৭০ পয়সা। এরপর ত এক বছরে এই হার ১০৫ টাকার উপরে চলে গেছে।

“প্রকল্পে জড়িত বিদেশি জনবল এবং পণ্য আমদানিসহ সিংহভাগ ব্যয় মেটানো হয় ডলারে। সুতরাং ডলারের দাম বাড়লে প্রকল্পের ব্যয়ও বাড়বে। তারই ধারাবাহিকতায় এই প্রকল্পের ব্যয় বাড়ছে,” বলেন তিনি।

২০১৫ সালের ১২ নভেম্বর একনেক সভায় চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর দুই পাড়ে চীনের সাংহাইয়ের আদলে ‘ওয়ান সিটি টু টাউন’ গড়ে তুলতে টানেল নির্মাণ প্রকল্প অনুমোদন করে সরকার।

প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে। নির্মাণ কাজ করছে চীনা কোম্পানি- চায়না কমিউনিকেশন কনস্ট্রাকশন লিমিটেড (সিসিসি)।

তখন ৮ হাজার ৪৪৬ কোটি ৬৩ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০২০ সালের জুনের মধ্যে কাজ শেষ করার লক্ষ্য নিয়ে প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়। পরে ২০১৮ সালের ৪ নভেম্বরের একনেক সভায় প্রায় ১ হাজার ৯২৮ কোটি টাকা ব্যয় এবং বাস্তবায়ন সময় এক বছর ৬ মাস বাড়িয়ে প্রথমবার প্রকল্পটি সংশোধন করা হয়। তাতে ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ১০ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা।

তখন প্রকল্পটি ২১ সালের ডিসেম্বরে শেষ করার লক্ষ্য ধরা হলেও কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে সরকার বড় প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে স্বয়ংক্রিয়ভাবে এক বছর বাড়ানোর সুযোগ দেয়। সে হিসাবে প্রকল্পটি গত ডিসেম্বর মাসে শেষ করার কথা ছিল।

গত ২৬ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্মাণাধীন এই প্রকল্পের একটি টিউব উদ্বোধন করেন। সম্প্রতি চট্টগ্রামে সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানিয়েছিলেন, ১৫ জানুয়ারির পরে পুরো প্রকল্প উদ্বোধন করা হবে।

কর্মকর্তারা জানান, নদীর তলদেশে টানেলের দুটি টিউবের নির্মাণকাজ শেষ, ভেতরে অবকাঠামোগত কাজ চলছে।

প্রকল্প পরিচালক হারুনুর রশীদ বৃহস্পতিবার বলেন, “এ পর্যন্ত প্রকল্পটির ৯৫ দশমিক ৫ শতাংশ বাস্তবায়িত হয়েছে। আমরা আশা করছি, আগামী মার্চ মাসের মধ্যে প্রকল্পটি সাধারণ মানুষের চলাচলের জন্য খুলে দিতে পারব।”

প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের দেওয়া তথ্য বলছে, ৩ দশমিক ৩২ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই টানেলে প্রতিটি টিউব বা সুড়ঙ্গের দৈর্ঘ্য ২ দশমিক ৪৫ কিলোমিটার। একটির সঙ্গে অন্য টিউবের দূরত্ব ১২ মিটারের মতো। প্রতিটি টিউবে দুইটি করে মোট চারটি লেইন তৈরি করা হয়েছে। টানেলের পূর্ব ও পশ্চিম প্রান্তে থাকছে ৫ দশমিক ৩৫ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক। এছাড়া ৭২৭ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি ওভারব্রিজ রয়েছে আনোয়ারা প্রান্তে।

চট্টগ্রাম নগরীর পতেঙ্গায় নেভাল একাডেমির পাশ দিয়ে ১৮ থেকে ৩১ মিটার গভীরতায় নেমে যাওয়া এই টানেল কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ-পূর্বে আনোয়ারায় সিইউএফএল ও কাফকোর মাঝামাঝি এলাকা দিয়ে বের হবে।

৩৫ ফুট প্রশস্ত ও ১৬ ফুট উচ্চতার টানেলে দু’টি টিউব দিয়ে যানবাহন চলাচল করবে। টানেলের উত্তরে নগরীর দিকে আউটার রিং রোড, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, কাটগড় সড়ক, বিমানবন্দর সড়ক এবং পতেঙ্গা বিচ সড়ক দিয়ে টানেলে প্রবেশ করা যাবে।




আরো






© All rights reserved © outlookbangla

Developer Design Host BD