বুধবার, ১৪ মে ২০২৫, ০৫:২৩ পূর্বাহ্ন




গ্যাসের সাথে বিদ্যুতের দাম আরও বাড়তে পারে

আউটলুক বাংলা রিপোর্ট
  • প্রকাশের সময়: শনিবার, ১৪ জানুয়ারী, ২০২৩ ২:১৫ pm
বিদ্যুৎ loadshedding energy crisis electricity power grid বিদ্যুত বিভ্রাট লোডশেডিং মেগাওয়াট বিদ্যুত
file pic

ফেব্রুয়ারি মাসে বিদ্যুতের দাম ফের ৫ শতাংশ বাড়তে পারে। এদিকে গ্যাসের দামও বাড়তে পারে চলতি মাসেই। সরকারি সূত্রেই এ আভাস পাওয়া গেছে।

বৃহস্পতিবার নির্বাহী আদেশে গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম ৫ শতাংশ বাড়ানো হয়। কিন্তু লোকসান পূরণে এই বৃদ্ধি খুব বেশি নয়। তাই আগামী মাসেও বিদ্যুতের দাম ৫ শতাংশ বাড়ানো হতে পারে। এভাবে বিদ্যুতের খুচরা মূল্য ক্রমান্বয়ে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হবে বলে সূত্র নিশ্চিত করেছে।

সূত্রমতে, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণ পেতে ভর্তুকি হ্রাসের অংশ হিসেবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। এতে নিত্যপণ্য, শিল্প, পরিবহনসহ সব খাতেই খরচ আরও বেড়ে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। যা অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।

বেসরকারি কেন্দ্র ও আমদানি করা বিদ্যুৎ বেশি দামে কিনে কম দামে বিক্রি করায় প্রতি বছর হাজার হাজার কোটি টাকা লোকসান গুনতে হয় বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডকে (পিডিবি)। সিস্টেমলসের নামে শত শত কোটি টাকার বিদ্যুৎ চুরি হয়। এই লোকসান মেটাতে সরকারের কাছ থেকে ভর্তুকি নেয় রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাটি। ২০২১-২২ অর্থবছরে পিডিবি ভর্তুকি চেয়েছিল ২৯ হাজার ৬৫৮ কোটি টাকা। এ পর্যন্ত অর্থ মন্ত্রণালয় ছাড় করেছে ১৮ হাজার ৫৬১ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের (২০২২-২৩) জন্য পিডিবি ভর্তুকি প্রাক্কলন করেছে ৪৪ হাজার ২০ কোটি টাকা। সরকার চলতি অর্থবছরে বিদ্যুৎ খাতের জন্য ভর্তুকি বরাদ্দ রেখেছে ১৭ হাজার কোটি টাকা।

লোকসান পোষাতে এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) গত ২১ নভেম্বর বিদ্যুতের পাইকারি দাম (সাধারণ গ্রাহকদের জন্য প্রযোজ্য নয়) ১৯.৯২ শতাংশ বৃদ্ধি করে। এরপরই গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম গড়ে ২০ শতাংশ বৃদ্ধির আবেদন করে ৬ বিতরণ কোম্পানি।

তাদের আবেদনের ওপর গত ৮ জানুয়ারি গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়। শুনানিতে বিইআরসির কারিগরি মূল্যায়ন কমিটির বিশ্নেষণে বলা হয়, পাইকারি দাম বৃদ্ধির ফলে বিতরণ কোম্পানিগুলোর যে বাড়তি ব্যয় হবে তা পোষাতে ৮ হাজার কোটি টাকা প্রয়োজন। এ জন্য কমিটি ১৫ দশমিক ৪৩ শতাংশ দাম বৃদ্ধির সুপারিশ করে। বিইআরসির আদেশ ঘোষণার আগেই তাড়াহুড়া করে গত বৃহস্পতিবার রাতে নির্বাহী আদেশে বিদ্যুতের খুচরা মূল্য ৫ শতাংশ বাড়ানো হয়।

সংশ্নিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, এক দফায় বিদ্যুতের দাম ১৫ শতাংশ বৃদ্ধি করলে ভোক্তাদের ওপর বাড়তি চাপ পড়ত। এজন্য ধাপে ধাপে এটা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়। গ্যাস ও বিদ্যুতের ভর্তুকি কমানো নিয়ে গত সপ্তাহে বিদ্যুৎ বিভাগে একাধিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে প্রতি মাসে অল্প অল্প করে দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়। এ সিদ্ধান্ত অনুসারে জানুয়ারিতে ৫ শতাংশ বাড়ানো হলো। এর পর ফেব্রুয়ারিতে ৫ শতাংশ বাড়ানো হবে। এভাবে পর্যায়ক্রমে মোট ১৫ শতাংশ দাম বাড়ানো হবে। ভবিষ্যতে জ্বালানির দাম কমলে বিদ্যুতের দাম কমানো হবে।

বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে শুক্রবার কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে গত বৃহস্পতিবার বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির ব্যাখ্যায় তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ভর্তুকি কমাতে বিদ্যুতের মূল্য সমন্বয় করা হয়েছে। তবে পিডিবির লোকসানের তুলনায় দাম সামান্য বেড়েছে। তিনি এ সময় জানান, এখন থেকে প্রতি মাসের প্রথম সপ্তাহে বিদ্যুতের মূল্য সমন্বয় করা হবে। যদি আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেল, কয়লা ও গ্যাসের দাম বাড়ে, তবে বিদ্যুতের মূল্য বাড়বে। জ্বালানির দাম কমলে বিদ্যুতের দামও কমবে। তিনি বলেন, প্রতি মাসে এই সমন্বয় হলে পিডিবির ওপর চাপও কমবে।’

আগামী মাসগুলোতে আবার বিদ্যুতের দাম বাড়বে কিনা জানতে চাইলে বিদ্যুৎ সচিব হাবিবুর রহমান বিষয়টি স্বীকার করেননি আবার অস্বীকারও করেননি। তিনি বলেন, আগামীর বিষয় আগামীতে জানা যাবে। এখনই এ বিষয়ে মন্তব্য করতে চান না।

গ্যাসের দাম: গত ৫ জুন গ্যাসের দাম ২২ শতাংশের বেশি বাড়ানো হয়। এর পরও এ খাতে লোকসান হচ্ছে বলে দাবি করছে পেট্রোবাংলা। তাই চলতি মাসেই নির্বাহী আদেশে গ্যাসের দাম আরেক দফা বাড়ানো হতে পারে বলে সংশ্নিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। এ বিষয়ে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এবং জ্বালানি সচিব মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদারের মন্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি।

পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকার বলেন, তিনি এই দায়িত্বে নতুন এসেছেন। এখনও বিষয়গুলো পুরোপুরি জানা নেই তাঁর। [সমকাল]




আরো






© All rights reserved © outlookbangla

Developer Design Host BD