বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫, ০২:১৬ পূর্বাহ্ন




ভাষার মাস ফেব্রুয়ারি শুরু

আউটলুক বাংলা রিপোর্ট
  • প্রকাশের সময়: বুধবার, ১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩ ১২:৩৬ am
Shaheed Minar শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা অমর একুশে শহীদ মিনার অমর একুশে শহীদ মিনার International Mother Language Day worldwide annual observance held 21 February promote multilingualism 21st February 1952 Bengali language vasa mas ভাষার মাস ভাষা আন্দোলনের মাস ফেব্রুয়ারি আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি
file pic

ফেব্রুয়ারি। ভাষার মাস। বাঙালি জাতীয়তাবাদের ভিত্তি। বাঙালি সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। শোষণ থেকে মুক্তির পথ দেখানো একটি মাস। সাম্য ও গণতন্ত্রের ধারক। বাঙালির মুক্তি আন্দোলনের অন্যতম পথপ্রদর্শক। আজ থেকে শুরু হচ্ছে এ মাস। চারদিকে ধ্বনিত হবে অমর সংগীতের অমীয় বাণী ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি’। কারণ ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি বাঙালি বুকের তাজা রক্তের বিনিময়ে অর্জন করেছিল ভাষার অধিকার।

তাইতো ফেব্রুয়ারি মাসজুড়ে জাতি ভাষা শহীদদের গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় স্মরণ করবে। চারদিকে ধ্বনিত হবে অমর একুশের মর্মবাণী। গানে, কবিতায়, ছন্দে বেজে উঠবে একুশের বিজয়গাঁথা। অসত্য ও অসুন্দরের বিরুদ্ধে সত্য ও সুন্দরের সাহসী ঝাণ্ডা উড়ানোর প্রত্যয় নেবে বাঙালি। ভাষা আন্দোলনের পরিক্রমায় বাঙালির মধ্যে সূচিত হয়েছিল গণতান্ত্রিক ও ন্যায়ভিত্তিক আধুনিক রাষ্ট্র গঠনের স্বপ্ন।

যেটি ছিল বাঙালি জাতীয়তাবাদের ভিত্তি। যার চূড়ান্ত রূপ ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ। ভাষা আন্দোলনের শুরুটা হয়েছিল ১৯৪৭ সালে। দেশ ভাগের পর পাকিস্তানের শাসক গোষ্ঠী সুকৌশলে বাঙালি ও বাংলা ভাষার প্রতি নিজেদের দুরভিসন্ধি শুরু করে। প্রথম আঘাত হানে ভাষার প্রতি। সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের মুখের ভাষাকে অগ্রাহ্য করে উর্দুকে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা করার ঘোষণা দেয়। যা মেনে নিতে পারেনি পূর্ব বাংলার মানুষ। তখন থেকেই সম্মিলিত প্রতিবাদ শুরু। বিভিন্নভাবে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে বাংলার স্বীকৃতির দাবিতে আওয়াজ তুলে বাংলার মানুষ।

টেবিলের আলোচনা থেকে রাজপথের মিছিল-সমাবেশ সব কিছুতেই শুরু হয় ভাষার দাবি। সামাজিক ও সাংস্কৃতিক জাগরণও শুরু হয় বাংলাভাষা রক্ষার আন্দোলনে। তারই পরিক্রমায় ভাষার অধিকারের আন্দোলন চূড়ান্ত রূপ লাভ করে ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি। সেদিন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বাঙালির শান্তিপূর্ণ মিছিলে গুলি চালিয়ে হত্যা করে বাংলার সূর্য সন্তানদের।

ছাত্র-জনতার মিছিলে প্রাণ যায় সালাম, রফিক, বরকতদের। তাদের রক্তের বিনিময়ে বাঙালি জাতি পায় মাতৃভাষার অধিকার। ক্রমবর্ধমান আন্দোলনের মুখে পাকিস্তান সরকার নতি স্বীকার করতে বাধ্য হয়। ১৯৫৪ সালের ৭ই মে পাকিস্তান গণপরিষদে বাংলাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়। তারই ধারাবাহিকতায় ’৫৬ সালে পাকিস্তানের প্রথম সংবিধান প্রণীত হলে ২১৪ নং অনুচ্ছেদে বাংলা ও উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়। ১৯৭১ সালে স্বাধীন বাংলাদেশের রাষ্ট্রভাষা করা হয় বাংলাকে। ’৮৭ সালে সর্বস্তরে বাংলার প্রচলন নিশ্চিত করতে আইন জারি করে বাংলাদেশ সরকার।

আর ১৯৯৯ সালের ১৭ই নভেম্বর ইউনেস্কো একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা দিয়ে ভাষা আন্দোলনের সকল সংগ্রামকে চূড়ান্ত স্বীকৃতি দেয়। তখন থেকেও বৈশ্বিকভাবেও ২১শে ফেব্রুয়ারি ভাব গাম্ভীর্যের মধ্যদিয়ে পালিত হয়। তাইতো ফেব্রুয়ারি মাস বাঙালির আবেগ আর ভালোবাসার সংমিশ্রণ। এ মাসজুড়ে বাংলা ভাষাবাসীদের থাকে নানা আয়োজন। যার অন্যতম আকর্ষণ অমর একুশে বইমেলা। যেটি বাঙালি সংস্কৃতির সবচেয়ে বড় আয়োজন। মাসব্যাপী এ বইমেলার আয়োজন করে বাংলা একাডেমি।

লেখক-প্রকাশক-বইপ্রেমীদের মিলনমেলা রূপ নেয় এ বইমেলা। এ মাসকে কেন্দ্র করে ১লা ও ২রা ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয় জাতীয় কবিতা উৎসব। এ ছাড়াও নানা সভা- সেমিনারের মাধ্যমে ভাষা আন্দোলনে আত্ম উৎসর্গকারী শহীদদের স্মরণ করা হয়।




আরো






© All rights reserved © outlookbangla

Developer Design Host BD