রোজার আগে আরেক দফা বাড়ানো হয়েছে ভোজ্য তেল, চিনি, ছোলা ও পেঁয়াজের দাম। সরবরাহ পর্যাপ্ত থাকলেও দুই মাস আগ থেকেই এসব পণ্যের দাম ধাপে ধাপে বাড়ানো হচ্ছে। পাশাপাশি সপ্তাহের ব্যবধানে আটা ও আলুর দামও বেড়েছে। এছাড়া মাসের ব্যবধানে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম দ্বিগুণ বেড়ে ২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এতে এসব পণ্য কিনতে ক্রেতার বাড়তি টাকা ব্যয় করতে হচ্ছে। বৃহস্পতিবার রাজধানীর কাওরান বাজার, নয়াবাজার ও মালিবাগ কাঁচাবাজার ঘুরে ক্রেতা ও খুচরা বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, খুচরা বাজারে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা, যা গত সপ্তাহেও ৩৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। প্রতি কেজি আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকা, যা সাত দিন আগেও ৪০ টাকা ছিল। সাত দিন আগে প্রতি কেজি চিনি সর্বনিন্ম ১১০ টাকায় বিক্রি হলেও বৃহস্পতিবার সর্বনিম্ন ১১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি ছোলা বিক্রি হচ্ছে ৯০-৯৫ টাকা, যা সাত দিন আগেও ৮৫-৯০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। ভোজ্য তেলের মধ্যে খোলা পাম অয়েল প্রতি লিটার বিক্রি হয়েছে ১২৫ টাকা, যা আগে ১২০ টাকা ছিল। এছাড়া প্রতি কেজি খোলা আটা বিক্রি হচ্ছে ৫৮ টাকা, যা সাত দিন আগে ৫৫ টাকা ছিল। প্যাকেটজাত আটা প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা, যা আগে ছিল ৬৮ টাকা। প্রতি কেজি আলুর দাম ২ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২২ টাকায়।
রাজধানীর কাওরান বাজারে নিত্যপণ্য কিনতে আসা মো. এনামুল হক বলেন, দুই মাস ধরে রোজায় ব্যব হৃ ত পণ্যের সঙ্গে অন্যান্য পণ্যের দামও বাড়ানো হচ্ছে। ছোলাসহ আরও বেশ কয়েকটি পণ্যের দাম আরেক দফা বাড়ানো হয়েছে। নতুন করে পণ্য আমদানি
করা না হলেও দাম বাড়ানো হচ্ছে। তিনি বলেন, বিক্রেতারা ইচ্ছামতো পণ্যের দাম নির্ধারণ করে বিক্রি করছে। ঠকছে শুধু ভোক্তা।
কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, ভোক্তাকে স্বস্তি দিতে বাজারে এখন কঠোর মনিটরিং করা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। সবকটি সংস্থাকে এক হয়ে কাজ করতে হবে। ব্যবসায়ী ও ভোক্তাকে একটি নিয়মের মধ্যে আনতে হবে। ব্যবসায়ীদের তদারকি সংস্থাগুলোর সব আদেশ মানতে হবে। পণ্যের দাম কমিয়ে আনতে সহযোগিতা করতে হবে। উচ্চ মুনাফা করার লোভ ত্যাগ করতে হবে। পাশাপাশি ক্রেতার যেখানে একদিনের পণ্য দরকার, সেখানে ১০ দিনের পণ্য একসঙ্গে কেনা বন্ধ করতে হবে। আর সার্বিকভাবে বাজারে অনিয়ম দেখলে সঙ্গে সঙ্গে অসাধুদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
বাজার তদারকি সংস্থা জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার বলেন, বিক্রেতাদের অনেকবার বোঝানো হয়েছে। আমরা সহনশীল পর্যায়ে ছিলাম। বাজার অভিযানকালে দোকানে মূল্যতালিকা থাকে না। পণ্য কী দামে এনে বিক্রি করছে, এর পাকা রসিদ বিক্রেতা দেখাতে বললেও দেখাচ্ছে না। আবার মাঝেমধ্যে তর্কে জড়াচ্ছে। এমন কিছু আর হতে দেওয়া যাবে না। আমরা ব্যবসাবান্ধব বাজার চাই। সেখানে প্রতিযোগিতা হবে। তবে অযৌক্তিক দাম মেনে নেওয়া যাবে না। এবার যদি পণ্যের দাম নিয়ে কেউ কারসাজি করে, ঈদ পর্যন্ত দোকান বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হবে।