সোমবার, ২৪ মার্চ ২০২৫, ০৮:১৯ অপরাহ্ন




ফুটবল খেলতে ব্যাংকপ্রতি ২৫ লাখ টাকা চাঁদা চেয়েছে বিএবি

আউটলুক বাংলা রিপোর্ট
  • প্রকাশের সময়: শনিবার, ১৮ মার্চ, ২০২৩ ৪:৪৮ pm
Bangladesh Association of Banks BAB বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস বিএবি
file pic

ব্যাংকারদের জন্য ফুটবল প্রতিযোগিতা আয়োজনে বেসরকারি খাতের সব ব্যাংক থেকে ২৫ লাখ টাকা করে চাঁদা চেয়েছে চেয়ারম্যানদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস (বিএবি)। ফুটবল প্রতিযোগিতাটি ‘সফল ও জাঁকজমকপূর্ণভাবে’ আয়োজনের জন্য চাঁদা চেয়েছে সংগঠনটি। বিএবির সদস্যভুক্ত ৪১টি ব্যাংক অর্থ দিলে এ আয়োজন থেকে চাঁদা উঠবে ১০ কোটি ২৫ লাখ টাকা।

বিএবি এমন সময়ে এ চাঁদা চেয়েছে, যখন বেশির ভাগ ব্যাংক তারল্য সংকটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। ফলে অনেক ব্যাংককে ৮ শতাংশ পর্যন্ত সুদে আমানত সংগ্রহ করতে হচ্ছে। বিশেষ করে ইসলামী ধারার ব্যাংকগুলোকে। পরিস্থিতি সামাল দিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে সম্প্রতি কিছু বিশেষ উদ্যোগও নিতে হয়েছে।

ফুটবল প্রতিযোগিতা আয়োজন নিয়ে বিএবি থেকে সম্প্রতি একটি চিঠি সব বেসরকারি ব্যাংকের চেয়ারম্যানদের কাছে পাঠানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, বিএবির উদ্যোগে ‘শেখ হাসিনা আন্তব্যাংক ফুটবল প্রতিযোগিতা’ আয়োজন করা হবে। এ জন্য গঠিত কমিটির প্রথম সভা ৬ মার্চ ‘বাংলাদেশ অলিম্পিক একাডেমির’ ভাইস প্রেসিডেন্ট এ কে এম নুরুল ফজল বুলবুলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় বিস্তারিত আলোচনার পর সিদ্ধান্ত হয়, সব ব্যাংক ২৫ লাখ টাকা করে বিএবির অনুকূলে পে-অর্ডারের মাধ্যমে সংগঠনের অফিসে পাঠাবে।

তবে জানা গেছে, এ সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেক ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকেরা (এমডি)। তাঁরা বলছেন, ব্যাংক খাতে একধরনের সংকট চলছে। এখন বেশির ভাগ ব্যাংক তারল্য সংকটে ভুগছে। এমন সময়ে এভাবে টাকা আদায় করে ফুটবল খেলার আয়োজন করা অর্থহীন। ব্যাংকগুলো ক্রীড়ার উন্নয়নে নিয়মিতই অনুদান দিয়ে আসছে।

প্রথম প্রজন্মের একটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, বিএবি পরিস্থিতি বুঝে না–বুঝে এভাবে চাঁদা আদায় করে। এতে অংশগ্রহণে অপারগতা জানানোর কোনো সুযোগ থাকে না। একবার এক ব্যাংক আপত্তি জানিয়ে নিজেদের বিপদ ডেকে এনেছিল। কেন্দ্রীয় ব্যাংককে জানালেও চাঁদা দেওয়া থেকে মুক্তি মেলে না। অনেক ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংকও তাদের পক্ষ নেয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে দ্বিতীয় প্রজন্মের একটি ব্যাংকের চেয়ারম্যান জানান, বিএবি ব্যাংক চেয়ারম্যানদের প্রতিষ্ঠান হলেও এক-দুজন ছাড়া আর কারও কোনো ভূমিকা নেই। এসব চাঁদা আদায়ের সিদ্ধান্তও তাঁরাই নেন। সভায় উপস্থিত থাকলেও এতে দ্বিমত পোষণ করা যায় না। পরে সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রোষানলে পড়ার ঝুঁকি থাকে।

ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, এভাবে বারবার চাঁদা দেওয়ার প্রভাব পড়ছে গ্রাহকদের ওপর, কারণ এতে ব্যাংকের খরচ বাড়ছে। ফলে ঋণের সুদ বেশি নিতে হচ্ছে, না হয় আমানতকারীদের কম সুদ দিতে হচ্ছে। এতে মানসম্পন্ন সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রেও বিঘ্ন ঘটছে। নিট মুনাফা না করলেও চাঁদা দেওয়া থেকে রক্ষা পাওয়া যাচ্ছে না।

ব্যাংকগুলোতে পাঠানো চিঠিতে বিএবি লিখেছে, প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য সব ব্যাংক তাদের সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের থেকে প্রয়োজনীয়সংখ্যক সদস্য দিয়ে ফুটবল দল গঠন করবে। পুরস্কার হিসেবে বিজয়ী দলকে ক্রেস্টসহ ৫০ লাখ টাকা, রানার্সআপ দলকে ক্রেস্টসহ ৪০ লাখ টাকা এবং তৃতীয় স্থান নির্ধারণী দলকে ক্রেস্টসহ ৩০ লাখ টাকা দেওয়া হবে। এ ছাড়া শ্রেষ্ঠ খেলোয়াড়, সর্বোচ্চ গোলদাতা এবং প্রতিযোগিতায় শ্রেষ্ঠ খেলোয়াড়ের পুরস্কার দেওয়া হবে। বেসরকারি ব্যাংকগুলো বিএবির এ সিদ্ধান্ত ইতিমধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংককে জানিয়েছে।




আরো






© All rights reserved © outlookbangla

Developer Design Host BD