ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য আগামী পাঁচ বছর কর অবকাশ চেয়েছে বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআই)। একই সঙ্গে মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাটের আওতাবহির্ভূত ব্যবসায়ের বার্ষিক টার্নওভারের ঊর্ধ্বসীমা ৩ কোটি থেকে বাড়িয়ে ৪ কোটি টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে সংগঠনটি।
বুধবার আগারগাঁওয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রাক-বাজেট আলোচনায় এ প্রস্তাব দেয় বিসিআই। এতে সভাপতিত্ব করেন এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম।
বাংলাদেশ চেম্বারের সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী বলেন, মোট মুনাফা খাতভিত্তিক হারে নির্ধারণ করা হয়, যা অযৌক্তিক। আবার মোট মুনাফা কমলে বা লোকসান হলে তা বিবেচনায় নেওয়া হয় না। এমনকি আগের বছরের তুলনায় বিক্রি কমলেও কর কর্তৃপক্ষ বিবেচনায় নিতে রাজি হয় না, এ ধারণার ইতি টানা দরকার।
দি ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যাটস অব বাংলাদেশ (আইসিএবি) বাজেট প্রস্তাবে অনলাইন ডিজিটাল মধ্যস্থতা পরিষেবা প্রদানকারীদের ‘ডিজিটাল পরিষেবা কর’ (ডিএসটি) প্রদানে দায়বদ্ধতা নিশ্চিতের দাবি জানায়। এ ছাড়া নতুন কাস্টমস আইন বাস্তবায়ন, অ্যাসাইকুডাকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করাসহ নানা সুপারিশ করে আইসিএবি।
বাংলাদেশ পেপার মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএমএ) সরবরাহ পর্যায়ে ৫ শতাংশ শুল্ক নির্ধারণের প্রস্তাব দেয়। এ ছাড়া সেল্ফ কপি পেপারসহ অন্যান্য শুল্ক প্রত্যাহারের প্রস্তাব করেছে। বাংলাদেশ মেরিন ফিশারিজ অ্যাসোসিয়েশন সব পর্যায়ে আমদানি শুল্ক ২০ শতাংশ ও করপোরেট কর ৫ শতাংশ করার দাবি জানিয়েছে।
বাংলাদেশ এলপিজি অটোগ্যাস স্টেশন অ্যান্ড কনভার্শন ওয়ার্কশপ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশেন ভোক্তাপর্যায়ে অটোগ্যাসের বিক্রয়মূল্যের সঙ্গে সংযোজিত মূসক প্রত্যাহারের প্রস্তাব দিয়েছে।
পর্যটন ও বিনোদন পার্কের উন্নয়ন ও প্রবৃদ্ধির আয়কর কমানোর পাশাপাশি বিদ্যমান ৭ দশমিক ৫ শতাংশ মূসক কমিয়ে ৫ শতাংশ করার প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব অ্যামিউজমেন্ট পার্কস অ্যান্ড অ্যাট্রাকশনস (বাপা)।
ফেডারেশন অব বাংলাদেশ কাস্টমস ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশন একই জাতীয় পণ্যকে একাধিক এইচ এস কোডে শ্রেণিবিন্যাস ও শুল্কায়নের সম্ভাবনা থাকা পণ্যের ওপর প্রযোজ্য শুল্ককর একই হারে নির্ধারণ, ট্যারিফ মূল্য যৌক্তিক করা, অসত্য ঘোষণায় জরিমানার হার সর্বনিম্ন ৫০ হাজার টাকা ও আইজিএম সংশোধন করে সব কাস্টমস হাউসে একই পদ্ধতি ও একই হারে নির্ণয়ের প্রস্তাব দিয়েছে। এ ছাড়া প্রাক-বাজেট আলোচনায় অংশ নিয়েছে কিশোরগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি, নরসিন্দী চেম্বার অব কমার্স ইন্ডাস্ট্রি।
প্রাক-বাজেট আলোচনায় সবার বক্তব্য শোনার পর তা বিবেচনার আশ্বাস দেন এনবিআর চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, আমাদের সামনে এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমাদের সক্ষমতার জায়গা তৈরি করতে হবে। এজন্য যুগোপযোগী শিল্পায়নের পাশাপাশি করের আওতা বাড়াতে হবে। আমাদের কাছে যেসব প্রস্তাবনা এসেছে, অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা সবকিছু বাস্তবায়ন করতে পারব না। কিন্তু ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ তৈরি করতে আগামীতে বিষয়গুলো বিবেচনা করা হবে।