নিসাব হলো ন্যূনতম সেই পরিমাণ সম্পদ, যার মালিকানার কারণে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির ওপর যাকাত ফরজ হয়। কোনো ব্যক্তির আয়ের ভিত্তিতে ব্যক্তির ওপর ট্যাক্স আরোপিত হয় এবং তদনুসারেই এর পরিমাণ নিরূপণ করা হয়। অনুরূপভাবে, ইসলামী আইনে কোনো ব্যক্তির মালিকানাধীন সম্পদের পরিমাণের ভিত্তিতেই যাকাত নিরূপিত হয়।
ব্যক্তি যতক্ষণ পর্যন্ত একটি ন্যূনতম নির্দিষ্ট পরিমাণ সম্পদের মালিক না হন, ততক্ষণ পর্যন্ত সে ব্যক্তির ওপর যাকাত অপরিহার্য নয়। শরী‘আহ আইনে ঐ ন্যূনতম নির্দিষ্ট পরিমাণ সম্পদকে ‘নিসাব’ বলা হয়।
যাকাত প্রযোজ্য হয় এমন প্রধান সম্পদগুলো হলোঃ নগদ অর্থ, স্বর্ণ ও রূপা, গবাদিপশু ও সব ধরনের বাণিজ্যিক পণ্য । নিন্মে বিস্তারিত বিবরণ দেয়া হলো:
১) অলঙ্কারঃ প্রথমত: স্বর্ণ ও রূপার অলংকার। দ্বিতীয়ত: স্বর্ণ -রূপা ব্যতীত অন্যান্য মূল্যবান বস্তু। স্বর্ণ ও রূপার যাকাত সম্পর্কে আলেমগণ একাধিক মত পোষণ করেছেন। কেউ ব্যাখ্যা দিয়ে বলেছেন যে, দেখতে হবে স্বর্ণ-রূপা সাজ-সজ্জা ও সৌন্দর্য গ্রহণ করার জন্য, না সঞ্চয় করে রাখার জন্য, না ব্যবসা বা অন্য কোনো কাজের জন্য। অধিক বিশুদ্ধ মত হচ্ছে: নিসাব পরিমাণ স্বর্ণ-রূপার ওপর হিজরী এক বছর পূর্ণ হলে যাকাত ওয়াজিব হবে, যে উদ্দেশ্যেই তা সংগ্রহ করুক। দ্বিতীয়ত: স্বর্ণ- রূপা ব্যতীত অন্যান্য ধাতব বস্তু যেমন হীরা, মুক্তা, ইয়াকুত, মোতি, মুক্তাদানা, গোমেদ-পীতবর্ণ মণিবিশেষ ইত্যাদি বস্তুর ওপর যাকাত ওয়াজিব হয় না; তার মূল্য যা-ই হোক না কোনো; তবে ব্যবসার জন্য হলে ব্যবসায়ী পণ্য হিসেবে তার ওপর যাকাত ওয়াজিব হবে। এ বিষয়ে পরবর্তীঅধ্যায়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।
২) ব্যাংক নোট: ব্যাংক নোট অর্থাৎ ডলার, পাউন্ড, ইউরো, রিয়াল ও অন্যান্য মুদ্রা যা নগদ অর্থ হিসেবে পরিচিত। অনুরূপ অর্থের বিভিন্ন ইনস্ট্রুমেন্ট : যেমন চেক, বিল, বিনিয়োগ সার্টিফিকেট ও অন্যান্য কাগজপত্র যার বৈষয়িক মূল্য রয়েছে।
৩) ব্যবসার পণ্য: যেসব পণ্য বা বস্তু দিয়ে ব্যবসা করা হয়, যেমন ব্যবসার নানা পণ্য, জমি, গাড়ি ও ব্যবসার অন্যান্য সামগ্রী যা কেনাবেচা করা হয়। অধিকাংশ আলিম মনে করেন, ব্যবসায়ী পণ্যে যাকাত ওয়াজিব।
৪) চতুষ্পদ প্রাণী: উট, গরু ও ছাগলের যাকাত। কারণ, এসব প্রাণী ব্যতীত অন্যান্য প্রাণীর যাকাতের কথা হাদীসে উল্লেখ নেই। সুতরাং সাধারণত: গৃহপালিত পাখি, মুরগি, ঘোড়া, গাধা, খরগোশ ও অন্যান্য প্রাণীতে যাকাত নেই, তার সংখ্যা যত বেশি হোক। তবে এসবের কোনো প্রাণী ব্যবসার জন্য নির্ধারিত হলে ব্যবসায়ী পণ্য হিসেবে তাতে যাকাত ওয়াজিব হবে।
৫) ফল ও ফসল: হাদীসে যেসব ফসলের নাম উল্লেখ করে যাকাত নির্ধারণ করা হয়েছে সেগুলো চার প্রকার: (ক) গম, (খ) যব, (গ) খেজুর ও (ঘ) কিশমিশ। এ চার প্রকার ব্যতীত যেসব ফল ও ফসল খাদ্য ও সঞ্চয় করার উপযুক্ত এবং ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চয় করলে নষ্ট হয় না, যেমন ভুট্টা, ধান-চাল ও অন্যান্য খাদ্যশস্য তাতেও যাকাত ওয়াজিব হবে। অতএব, শাক-সবজির ওপর যাকাত নেই। তবে কাঁচাখেজুর ও আঙ্গুরের ওপর যাকাত দিতে হবে। কারণ তা সঞ্চয় করা যায়। যেমন, আঙ্গুর সঞ্চয় করলে কিশমিশ হয়।
যাকাত সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে সেন্টার ফর যাকাত ম্যানেজমেন্ট এর ওয়েবসাইট থেকে “যাকাতের বিধিবিধান” বইটি পড়তে পারেন অথবা কল করতে পারেন ০১৭৮৩৫৫৮৮৩৩ নম্বরে
সিজেডএম এর ওয়েবসাইট / এন্ড্রয়েড অ্যাপ / ব্যাঙ্ক একাউন্ট ট্রান্সফার / একদেশ অ্যাপ এর মাধ্যমে আপনার যাকাত, সদাকাহ, অনুদান প্রদান করতে পারেন।
সিজেডএম এর ব্যাংক হিসাব নং: ০৩৯১২১০০০১৭৫৬৮, এক্সিম ব্যাংক, হেড অফিস কর্পোরেট শাখা, গুলশান-১, ঢাকা
সিজেডএম এর বিকাশ বিকাশ, নগদ, রকেট, উপায় ও ট্যাপ এর মোবাইল একাউন্ট: ০১৭২৯ ২৯৬ ২৯৬ (মার্চেন্ট একাউন্ট)
সূত্র: সেন্টার ফর যাকাত ম্যানেজমেন্ট (সিজেডএম)