বুধবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০১:৪৯ পূর্বাহ্ন




ওয়াশিংটনে মোমেন-ব্লিঙ্কেন বৈঠক, বাংলাদেশে মডেল নির্বাচন চায় যুক্তরাষ্ট্র

আউটলুকবাংলা রিপোর্ট
  • প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ১১ এপ্রিল, ২০২৩ ১০:২৩ am
ওয়াশিংটন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আমেরিকা North America United States United State usa বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র usa New York City নিউ ইয়র্ক শহর ওয়াশিংটন যুক্তরাষ্ট্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আমেরিকা North America United States United State usa
file pic

বাংলাদেশের আগামী জাতীয় নির্বাচনের দিকে গোটা বিশ্বের চোখ রয়েছে জানিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ যেন উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয় সেই প্রত্যাশা পুনর্ব্যক্ত করেছেন। একই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, বাংলাদেশে মডেল নির্বাচন হোক, এমনটিই চাওয়া যুক্তরাষ্ট্রের।

ওয়াশিংটনের স্থানীয় সময় সোমবার দুপুরে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে ব্লিঙ্কেন এ প্রত্যাশার কথা জানান। বৈঠকে বাংলাদেশে অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচনের গুরুত্বের ব্যাপারে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে ঐকমত্য জানান ড. মোমেন। তিনি এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।

মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, ওয়াশিংটনে দুদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের সোমবারের বৈঠক ফলপ্রসূ হয়েছে।

বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ড. আব্দুল মোমেন জানান, বৈঠকে গুরুত্বপূর্ণ আলোচ্য বিষয়গুলোর মধ্যে অন্যতম ছিল বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন। যুক্তরাষ্ট্রও চায়, বাংলাদেশে মডেল নির্বাচন হোক।

সুষ্ঠু নির্বাচনের বিষয়ে বৈঠকের বরাত দিয়ে ড. মোমেন সাংবাদিকদের বলেন, আমি (মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে) বলেছি, অবশ্যই। এটাই আমাদের উদ্দেশ্য। আমরাও মডেল নির্বাচন চাই। এ ব্যাপারে আপনারাও আমাদের সাহায্য করেন, যেন আমরা অবাধ, সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ নির্বাচন করতে পারি।

এসময় দুদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের প্রতি সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং গত ৫০ বছরের দৃঢ় সম্পর্কের ওপর ভিত্তি করে আগামী ৫০ বছরের জন্য দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও জোরদার করার আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করেন।

বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ককে বিস্তৃত, গতিশীল ও বহুমুখী উল্লেখ করে ড. মোমেন এ সম্পর্ককে আরও উন্নত, বর্ধিত ও সুদৃঢ় করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি ‘জয় বাংলা’ দিয়ে শেষ হওয়া বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের পাঠানো বার্তার জন্য ধন্যবাদ জানান।

বৈঠকে উভয় নেতা অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব জোরদার ও বহুমুখীকরণ, রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান, জলবায়ু পরিবর্তন, শ্রম অধিকার, নাগরিক স্বাধীনতা এবং নির্বাচনসহ পারস্পরিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক ও অন্যান্য বিষয়ে আলোচনা করেন।

বাংলাদেশে শ্রম খাত সংস্কারের চলমান এবং সম্পন্ন কাজ সম্পর্কে অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনকে অবহিত করে ড. মোমেন আশা প্রকাশ করেন, দুদেশের মধ্যে শক্তিশালী অর্থনৈতিক অংশীদারত্বের মাধ্যমে বাংলাদেশের এই প্রচেষ্টাগুলোকে যথাযথভাবে মূল্যায়ন করা হবে।

পাশাপাশি মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশে শ্রম পরিস্থিতির উন্নতির জন্য দুদেশের মধ্যে চলমান যৌথ কর্মকাণ্ডের অগ্রগতি নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি বাংলাদেশের উদার বিনিয়োগ ব্যবস্থার সদ্ব্যবহার করতে এবং যুক্তরাষ্ট্রের বেসরকারি খাতকে বাংলাদেশে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল ও হাইটেক পার্কে বিনিয়োগে উৎসাহিত করার আহ্বান জানান।

ড. মোমেন মার্কিন সরকারকে কোভিড-১৯ মোকাবিলায় উদার সহায়তা এবং বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখার জন্য ধন্যবাদ জানান। তিনি রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে স্বেচ্ছায় প্রত্যাবাসনের পরিবেশ সৃষ্টির জন্য মিয়ানমারের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ানোর ওপর জোর দেন।

এসময় অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে উদারভাবে বাংলাদেশে আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকারের ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের লক্ষ্যে প্রচেষ্টা আব্যাহত রাখার আশ্বাস দেন।

এসময় ড. মোমেন বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি রাশেদ চৌধুরীকে বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তরের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আবারও অনুরোধ জানান।

বৈঠক শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসে পাঠানো উষ্ণ বার্তার জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্টকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পাঠানো একটি চিঠি হস্তান্তর করেন।

বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ ইমরান, দূতালয় উপ-প্রধান মিস ফেরদৌসী শাহরিয়ার, মহাপরিচালক (উত্তর আমেরিকা) খন্দকার মাসুদুল আলম এবং ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাস ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়া বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে কাউন্সিলর ডেরেক শোলে, জনসংখ্যা, শরণার্থী ও অভিবাসন বিষয়ক অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি অব স্টেট জুলিয়েটা ভালস নয়েস, গণতন্ত্র, মানবাধিকার এবং শ্রম বিষয়ক ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি অব স্টেট কারা ম্যাকডোনাল্ড, দক্ষিণ এবং মধ্য এশিয়া বিষয়ক ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি অব স্টেট মিস আফরিন উপস্থিত ছিলেন।




আরো






© All rights reserved © 2022-2023 outlookbangla

Developer Design Host BD