বৃহস্পতিবার, ০১ মে ২০২৫, ০৪:৫০ পূর্বাহ্ন




সাংবাদিকের মোটরসাইকেলে ছাড় নেই, ভোটকক্ষ থেকে লাইভে ‘না’

আউটলুক বাংলা রিপোর্ট
  • প্রকাশের সময়: বুধবার, ১২ এপ্রিল, ২০২৩ ৮:২৭ pm
press motorbike bike motorcycles motorcycle Bike bike-show motorbike motorcycle motorcycles two-wheelers two wheeler বাইক শো মোটরবাইক মোটরসাইকেল রানার UM Brands bike রানার মহাসড়কে মোটরসাইকেল
file pic

ভোটের দিন গণমাধ্যমকর্মীদের মোটর সাইকেল ব্যবহার করতে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত পাল্টাচ্ছে না নির্বাচন কমিশন। পাশাপাশি ভোটকেন্দ্র থেকে লাইভ করায় নিষেধাজ্ঞা থাকছে। ভোটকেন্দ্রে একসঙ্গে দুইজনের বেশি না ঢোকা, নির্দিষ্ট সময়ের বেশি অবস্থান না করার শর্তও দেওয়া হয়েছে।

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের অন্তত আট মাস আগেই জাতীয়, স্থানীয় নির্বাচনের জন্য যে ‘সাংবাদিক নীতিমালা’ চূড়ান্ত করা হয়েছে তাতে এসব বিষয়ের উল্লেখ আছে।

এই নীতিমালা অনুযায়ী, নির্বাচন কমিশনের অনুমোদিত কার্ডধারীদের ভোটকেন্দ্রে গিয়ে সংবাদ সংগ্রহ করতে অন্তত এক ডজন নির্দেশনা অনুসরণ করতে হবে।

বুধবার কমিশনের জনসংযোগ শাখার সহকারী পরিচালক আশাদুল হক স্বাক্ষরিত নীতিমালায় বলা হয়, জাতীয় সংসদ, উপজেলা পরিষদ, সিটি করপোরেশন, জেলা পরিষদ, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদের সাধারণ নির্বাচন ও উপনির্বাচনের জন্য এটি প্রযোজ্য হবে।

কোনো সাংবাদিক নির্দেশনা পালন না করলে তার পাস বাতিল করতে পারবে কমিশন। তার ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নির্বাচনী আইন ও বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থাও নিতে পারবে।

মোটর সাইকেলে ‘না’

সংবাদ সংগ্রহে আগে সাংবাদিকদের মোটর সাইকেল চলাচলের অনুমতি দেওয়া হলেও ইদানীং তা দিচ্ছে না নির্বাচন কমিশন। সংবাদ সংগ্রহের নীতিমালায় এই বিষয়টিকেও অন্তর্ভুক্ত করতে চাইছে ইসি।

নীতিমালায় বলা হয়েছে, ভোটের দিন যাতায়াতের জন্য একটি গণমাধ্যমকে ‘যৌক্তিক সংখ্যক’ গাড়ির স্টিকার দেওয়া হবে। তবে মোটরসাইকেল ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া যাবে না।

কোনো সাংবাদিকের জন্য গাড়ির স্টিকার দেওয়া হলে স্টিকারের ক্রমিক নম্বর রেজিস্ট্রারে লিখে রাখতে হবে।

মোটরসাইকেল ব্যবহারের নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে নির্বাচন বিশ্লেষক আব্দুল আলীম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সাংবাদিকরা শুধু একটি কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করেন না। তাদের নির্বাচনী এলাকার অনেক কেন্দ্রে ঘুরে ঘুরে সংবাদ সংগ্রহ করতে হয়। সেক্ষেত্রে প্রত্যন্ত এলাকায় মোটর সাইকেল ছাড়া দ্রুত যাওয়াও কষ্টসাধ্য।

“ঝুঁকি ও শঙ্কার বিষয় পর্যালোচনাসহ সব বিবেচনায় নিয়ে পেশাগত দায়িত্ব পালনে সাংবাদিকদের জন্য অনুমোদিত স্টিকার দিয়ে মোটরসাইকেল ব্যবহারের সুযোগ দিলে ভালো হতো।”

তিনি বলেন, “ইসির আইন-বিধি মেনেই সবাইকে কাজ করতে হবে। তবে অহেতুক যেন কড়াকড়ি আরোপ না করা হয় সে বিষয়ে নির্বাচনী কর্মকর্তাদেরও সজাগ থাকতে হবে।”

সাংবাদিকরা কী করতে পারবেন, যা করতে মানা

>> নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে প্রদত্ত বৈধ কার্ডধারী সাংবাদিক সরাসরি ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন।

>> ভোটকেন্দ্রে প্রবেশের পর প্রিজাইডিং অফিসারকে অবহিত করে তথ্য সংগ্রহ, ছবি তোলা এবং ভিডিও ধারণ করতে পারবেন, তবে কোনক্রমেই গোপন কক্ষের ভেতরের ছবি ধারণ করতে পারবেন না।

>> একই সঙ্গে দুইয়ের বেশি গণমাধ্যমের সাংবাদিক একই ভোটকক্ষে ঢুকতে করতে পারবেন না এবং ১০ মিনিটের বেশি ভোটকক্ষে অবস্থান করতে পারবেন না।

>> ভোটকক্ষে নির্বাচনী কর্মকর্তা, নির্বাচনী এজেন্ট বা ভোটারদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করতে পারবেন না।

>> ভোটকক্ষের ভেতর থেকে কোনোভাবেই সরাসরি সম্প্রচার করা যাবে না।

>> ভোটকেন্দ্রের ভেতর থেকে সরাসরি সম্প্রচার করতে হলে ভোটকক্ষ হতে নিরাপদ দূরত্বে গিয়ে তা করতে হবে, কোনক্রমেই ভোটগ্রহণ কার্যক্রমে বাধার সৃষ্টি করা যাবে না।

>> সাংবাদিকরা ভোটগণনা কক্ষে ভোট গণনা দেখতে পারবেন, ছবি নিতে পারবেন তবে সরাসরি সম্প্রচার করতে পারবেন না।

>> ভোটকক্ষ থেকে ফেইসবুকসহ কোনো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরাসরি প্রচার করা যাবে না।

>> কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ কার্যক্রম ব্যাহত হয় এমন সকল কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে।

>> ভোটকেন্দ্রে সাংবাদিকরা প্রিজাইডিং অফিসারের আইনানুগ নির্দেশনা মেনে চলবেন।

>> নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাজে কোনোভাবে হস্তক্ষেপ করা যাবে না।

>> কোনো প্রকার নির্বাচনী উপকরণ স্পর্শ বা অপসারণ করতে পারবেন না।

>> নির্বাচনী সংবাদ সংগ্রহের সময় প্রার্থী বা কোনো রাজনৈতিক দলের পক্ষে বা বিপক্ষে যে কোনো ধরনের প্রচার বা বিদ্বেষমূলক প্রচার থেকে বিরত থাকতে হবে।

এবং,

>> নির্বাচনে সহায়তার জন্য নির্বাচনী আইন ও বিধিবিধান মেনে চলতে হবে।

এ বছরের শেষে সংসদ নির্বাচন হবে। এর আগেই পাঁচ সিটি ভোট রয়েছে।

গণমাধ্যম ও সাংবাদিক কারা

নীতিমালায় ‘সাংবাদিক’ বলতে ডিক্লারেশন প্রাপ্ত এবং নিয়মিত প্রকাশিত দৈনিক, সাপ্তাহিক, পাক্ষিক প্রভৃতি; অনুমোদিত টেলিভিশন চ্যানেল যা বাংলাদেশ থেকে প্রচারিত; অনুমোদিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল; অনুমোদিত ইন্টারনেটভিত্তিক টেলিভিশন; ফ্রি-ল্যান্স সাংবাদিক (তথ্য অধিদপ্তরের সাংবাদিক পাসধারী), আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থায় (তথ্য অধিদপ্তর হতে অনুমতিপ্রাপ্ত) কর্মরত সাংবাদিক এবং বিদেশি সাংবাদিকদের (তথ্য অধিদপ্তরের মাধ্যমে অন্যান্য দেশ হতে আগত সাংবাদিক) বোঝানো হয়েছে।

রাজধানীকেন্দ্রিক গণমাধ্যম ও সংবাদকর্মীদের ‘কেন্দ্রীয় সাংবাদিক’ হিসেবে গণ্য করার কথা জানানো হয়েছে নীতিমালায়। এসব সাংবাদিককে পাস ও গাড়ির স্টিকার নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের জনসংযোগ অধিশাখা থেকে দেওয়া হবে।

স্থানীয় সাংবাদিক বলতে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকা/জেলা/উপজেলা থেকে প্রকাশিত পত্রিকা এবং জাতীয় দৈনিক, টেলিভিশন, অনলাইন, আইপিটিভির স্থানীয় প্রতিনিধিকে বোঝানো হয়েছে।

স্থানীয় পর্যায়ের এসব সাংবাদিককে কার্ড ও গাড়ির স্টিকার সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসার বা তার কর্তৃক ক্ষমতা প্রাপ্ত কর্মকর্তা দেবেন।

সংবাদ সংগ্রহের জন্য পাসের আবেদন প্রক্রিয়া

ভোটের অন্তত তিন দিন আগে নির্বাচন কমিশন বা রিটার্নিং অফিসারের কাছে ভোটের সংবাদ সংগ্রহে গণমাধ্যমের অফিসিয়াল প্যাডে আবেদন করবেন বার্তা সম্পাদক/প্রধান প্রতিবেদক/বার্তা প্রধান/ব্যুরো প্রধান বা জেলা প্রতিনিধি।

সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান থেকে কতজন সাংবাদিককে অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়া হল তাদের নাম, প্রতিষ্ঠানের সাংবাদিক পরিচয়পত্র/পিআইডি কার্ড, জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি, সদ্য তোলা ১ কপি পাসপোর্ট ও ১ কপি স্ট্যাম্প সাইজ রঙিন ছবি আবেদনের সাথে সংযুক্ত করতে হবে।




আরো






© All rights reserved © outlookbangla

Developer Design Host BD