মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫, ০১:০০ অপরাহ্ন




দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইনের উদ্বোধন সেপ্টেম্বরে: সচিব

আউটলুক বাংলা রিপোর্ট
  • প্রকাশের সময়: শনিবার, ৬ মে, ২০২৩ ৫:৪৩ pm
রেললাইন রেল লাইন rail railways রেলমন্ত্রী train Rail Railway Setu Bridge রেলওয়ে সেতু রেল ট্রেন train duel platform railway রেলপথ
file pic

দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন আগামী সেপ্টেম্বরে চালু হতে পারে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে নতুন এই রেললাইনের উদ্বোধন করতে পারেন। এই লাইন চালু হলে সারা দেশের মানুষের ট্রেনে করে পর্যটন শহর কক্সবাজারে যাওয়ার স্বপ্ন পূরণ হবে।

শনিবার চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে এক মতবিনিময় সভায় দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন চালুর বিষয়ে এই তথ্য জানান রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. হুমায়ুন কবীর। কর্ণফুলী নদীর ওপর কালুরঘাট সেতুর সংস্কারকাজ বাস্তবায়ন ও ফেরি চালুর বিষয়ে মতবিনিময় সভার আয়োজন করে জেলা প্রশাসন।

সভায় প্রধান অতিথি রেলসচিব মো.হুমায়ুন কবীর বলেন, বর্তমান সরকার রেলপথ উন্নয়নে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এর অংশ হিসেবে দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন হচ্ছে। নতুন রেলপথ দিয়ে ১২০-১৩০ কিলোমিটার বেগে ট্রেন চলাচল করতে পারবে। মানুষ প্রকৃতির সৌন্দর্য দেখতে দেখতে পর্যটন শহরে যাবেন।

কক্সবাজারে দ্রুতগতিতে রেল যাওয়ার জন্য কালুরঘাট সেতু সংস্কার করা হবে জানিয়ে রেলসচিব বলেন, জুন মাসে কালুরঘাট সেতুর সংস্কারকাজ শুরু হবে। পুরো সেতুর সংস্কারকাজ শেষ করতে ছয় মাস লাগবে। তবে সেতুর মূল রেললাইনের সংস্কারকাজ তিন মাসের মধ্যে শেষ করা হবে। এই তিন মাস ট্রেন (চট্টগ্রাম-দোহাজারী ট্রেন) চলাচল বন্ধ থাকবে। বন্ধ থাকবে সেতুর ওপর যান চলাচল।

সংস্কারকাজ চলাকালে সেতুর বিকল্প হিসেবে যাতায়াতের জন্য ফেরি চালু করা হবে বলে জানান রেলসচিব। তিনি বলেন, সেতুতে যান চলাচল বন্ধ থাকলে মানুষের সাময়িক অসুবিধা হবে। তবে সংস্কারকাজ হয়ে গেলে আর তা থাকবে না। আর ২০২৮ সালে নতুন সেতু হলে দুর্ভোগে দূর হয়ে যাবে।

কালুরঘাট সেতুর সংস্কারকাজের তথ্যউপাত্ত উপস্থাপন করেন রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী আবু জাফর মিঞা। তিনি জানান, ১৯৩১ সালে নির্মিত হয় কালুরঘাট রেলসেতু। ১৯৬২ সালে যান চলাচল শুরু হয়। সেতুর বর্তমান অবস্থা খারাপ। এর আগে দুবার বড় সংস্কার করা হয়েছে। এখন কক্সবাজারে ভারী ইঞ্জিনের ট্রেন যাবে। তাই কালুরঘাট সেতু সংস্কার করতে হচ্ছে। বর্তমানে এই সেতুতে ট্রেনের গতি ১০ কিলোমিটার। সংস্কারের পর ৫০-৬০ কিলোমিটার হবে।

সভায় প্রধান প্রকৌশলী বলেন, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পরামর্শক দলের পরামর্শে সেতু সংস্কার করা হবে। ইতিমধ্যে ঠিকাদার নিয়োগে দরপত্র বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। ২০ জুন সংস্কারকাজ শুরুর পরিকল্পনা রয়েছে। সেপ্টেম্বরে মূল সংস্কারকাজ শেষ করা হবে। এবারের সংস্কারকাজে রেলসেতুতে মানুষের হেঁটে পার হওয়ার জন্য ওয়াকওয়ে (হাঁটাপথ) রাখা হবে।

সড়ক ও জনপথ বিভাগের প্রকৌশলী রোকন উদ্দিন খালেদ চৌধুরী বলেন, সেতুর বিকল্প হিসেবে নদীতে ফেরি সার্ভিস চালু করা হবে। এ জন্য দুটি ফেরি রাখা হয়েছে। এর মধ্যে একটি ফেরি রাখা হয়েছে বিকল্প হিসেবে।

তবে সভায় জুন মাসে সেতুর সংস্কারকাজ শুরু করা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন জনপ্রতিনিধিরা। বোয়ালখালী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রেজাউল করিম ও পৌরসভার চেয়ারম্যান জহুরুল ইসলাম বলেন, জুন মাসে বর্ষা শুরু হবে। এই সময় নদীতে ফেরি চালানো কঠিন হয়ে পড়ে। বিশেষ করে জোয়ারের সময় ফেরি তিন ঘণ্টা পর্যন্ত বন্ধ থাকে। এভাবে যদি বন্ধ থাকে তাহলে মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হবে। এ ব্যাপারে বিকল্প ভাবতে হবে। দুটির পরিবর্তে চারটি ফেরি চালুর পরামর্শ দেন তাঁরা।

সভায় চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর ওপর কালুরঘাট এলাকায় নতুন সেতু নির্মাণের বিষয়ে হুমায়ুন কবীর বলেন, কালুরঘাটে নতুন রেলসেতুর নকশা চূড়ান্ত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নতুন সেতুর নকশা অনুমোদন দিয়েছেন। এখন চুক্তির বিষয়ে আলাপ-আলোচনা চলছে। এসব কিছু সম্পন্ন হলে দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্মাণকাজ শুরু হবে। আর ২০২৮ সালের মধ্যে নতুন সেতুর নির্মাণকাজ শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে।

তবে সভায় দুই জনপ্রতিনিধি বলেন, কালুরঘাটে নতুন সেতু নিয়ে এলাকাবাসীর কাছে বারবার প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়। সেতুর দাবি নিয়ে সোচ্চার থাকা দুজন সংসদ সদস্য মারা গেছেন। কিন্তু সেতু হয়নি। আবার বিদ্যমান সেতু সংস্কার করে দেওয়ার পর আর নতুন করে সেতু হবে কি না, এ নিয়ে মানুষের মনে সন্দেহ তৈরি হয়েছে।

সভায় বোয়ালখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মামুন বলেন, কালুরঘাটে নতুন সেতু নিয়ে মানুষের মনে অসন্তোষ বিরাজ করছে৷ তাঁরা মনে করছেন কালুরঘাটে নতুন সেতু হবে না। তাই আগামী নির্বাচনের আগে নতুন সেতু নিয়ে সরকারি ঘোষণা দেওয়া হলে মানুষের অসন্তোষ দূর হবে।

জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের উদ্দেশে রেলসচিব বলেন, নতুন সেতু হবে। এটা চূড়ান্ত।

সভা সঞ্চালনা করেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান। উপস্থিত ছিলেন রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন, নগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার আ স ম মাহতাব উদ্দিন, বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক আবিদুর রহমান প্রমুখ।




আরো






© All rights reserved © outlookbangla

Developer Design Host BD