রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:৫৯ পূর্বাহ্ন




সময় মতো ১৪০ কোটি ডলার দেশে আসেনি: বাংলাদেশ ব্যাংক

আউটলুক বাংলা রিপোর্ট
  • প্রকাশের সময়: রবিবার, ৭ মে, ২০২৩ ৯:০৩ pm
Central Bank কেন্দ্রীয় ব্যাংক bd bank Executive Director Bangladesh Bank (BB) new spokesperson Md Mezbaul Haque বাংলাদেশ ব্যাংক মুখপাত্র নির্বাহী পরিচালক মেজবাউল হক
file pic

রপ্তানি তথ্যের সংজ্ঞার গরমিলের কারণে রপ্তানি আয় দেশে না আসার পরিমাণ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর মধ্যে রপ্তানি আয় ও বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশিদের মালিকানাধীন কোম্পানির মুনাফা ১৪০ কোটি ডলার দেশে আসেনি। রোববার বাংলাদেশ ব্যাংক এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানায়। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের সফররত প্রতিনিধিদলের সঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সভা উপলক্ষে এই সংবাদ সম্মেলন করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

সংবাদ সম্মেলনে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক বলেন, কোনো পণ্য রপ্তানি হওয়ার ১২০ দিনের মধ্যে দেশে আসার নিয়ম রয়েছে। আবার বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশিদের মালিকানাধীন কোম্পানির মুনাফাও দেশে আনতে হয়। সময়মতো দেশে না আসা অর্থের পরিমাণ ১৪০ কোটি ডলার। এর মধ্যে ২৫ কোটি ৫০ লাখ ডলার আটকে আছে ক্রয়াদেশের তুলনায় কম পণ্য সরবরাহ করার কারণে বিল পরিশোধ না করায়। ৪ কোটি ৮০ লাখ ডলার আটকে আছে রপ্তানিকারক দেউলিয়া হয়ে পড়ায় ও ২ কোটি ডলার আটকে আছে আমদানিকারক দেউলিয়া হওয়ার কারণে। ভুয়া রপ্তানির কারণে আটকে আছে ১২ কোটি ৫০ লাখ ডলার ও মামলার কারণে ২৫ কোটি ১০ লাখ ডলার।

মেজবাউল হক বলেন, যখন অর্থনৈতিক অঞ্চলে উৎপাদিত পণ্য দেশে বিক্রি হচ্ছে, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তাদের হিসাবে তা রপ্তানি হিসেবে দেখানো হচ্ছে। কিন্তু এ জন্য দেশে কোনো রপ্তানি আয় আসছে না। এই পণ্য যদি আবার বিদেশে রপ্তানি হয়, তাহলেই কেবল রপ্তানি আয় দেশে আসার কথা। এখানেই ১০০ থেকে ২০০ কোটি ডলারের পার্থক্য তৈরি হচ্ছে।

বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি হওয়া পণ্যের বিপরীতে ৩০০ কোটি ডলার কেন দেশে আসছে না, তা জানতে চেয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। এ নিয়ে একাধিক গণমাধ্যমেও প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সহকারী মুখপাত্র সরোয়ার হোসেন বলেন,পণ্য রপ্তানি হওয়ার ১২০ দিনের মধ্যে দেশে অর্থ আসার কথা। এরপর না এলে তা অপ্রত্যাবাসিত ধরা হয়।

বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ প্রসঙ্গে মুখপাত্র মেজবাউল হক বলেন, এখন রিজার্ভ রয়েছে ৩ হাজার ৯৮ কোটি ডলার। এখান থেকে ১১৮ কোটি ডলার আকু বিল পরিশোধ হবে। কাল সোমবার বোঝা যাবে প্রকৃত রিজার্ভ কত। এর মধ্যে আরও কিছু ডলার আসার সম্ভাবনা রয়েছে।

আইএমএফ গত মার্চে সর্বনিম্ন ২২ দশমিক ৯৫ বিলিয়ন ডলার নিট রিজার্ভ রাখার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিল, যা পূরণ করতে পারেনি বাংলাদেশ। আগামী জুনে এই লক্ষ্য বাড়িয়ে ২৪ দশমিক ৪৬ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার শর্ত রয়েছে সংস্থাটির। আগামী সেপ্টেম্বরে নিট রিজার্ভের পরিমাণ বাড়িয়ে ২৫ দশমিক ৩২ বিলিয়ন ডলার এবং ডিসেম্বরে ২৬ দশমিক ৪১ বিলিয়ন ডলারের লক্ষ্য ঠিক করে দিয়েছে আইএমএফ।

রিজার্ভের ক্ষেত্রে আইএমএফের শর্ত পূরণ হবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে মেজবাউল হক বলেন, জুন আসতে আরও সময় বাকি আছে। জুনের মধ্যে সরকারি অনেক অনুদান ও ঋণের টাকা আসবে। কারণ, সরকারি কাজ শেষ হওয়ার পরই অর্থ আসে। আশা করছি জুনের মধ্যের রিজার্ভে ইতিবাচক উন্নতি ঘটবে। তবে জুন শেষেই বোঝা যাবে প্রকৃত চিত্র।

ডলারের দাম নির্ধারণ নিয়ে মেজবাউল হক বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক ডলারের দাম বাড়িয়ে ১০৪ টাকা ৫০ পয়সা করেছে। ব্যাংকগুলোও প্রবাসী আয় ও রপ্তানি আয়ে ডলারের দাম বাড়িয়েছে। মোবাইলে আর্থিক সেবা (এমএফএস) কোম্পানিগুলোকে বৈধ পথে আয় আনার সুযোগ দেওয়া হয়েছে।

অনেক ব্যবসায়ী ঋণপত্র খুলতে পারছে না, কেউ আবার ইচ্ছেমতো সুযোগ পাচ্ছে, এমন অভিযোগ সম্পর্কে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটির মুখপাত্র বলেন, গ্রাহককে ব্যাংকের কাছে গ্রহণযোগ্য করে তোলার দায়িত্ব গ্রাহকেরই। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এতে কোনো ভূমিকা নেই। ব্যাংক কার ঋণপত্র খুলবে, এটা ব্যাংকই নির্ধারণ করবে।

মেজবাউল হক বলেন, মুদ্রানীতি বাস্তবায়নে করোনাভাইরাস ছাড়া সব ধরনের চ্যালেঞ্জ এখনো বিদ্যমান। বৈশ্বিক মূল্যস্ফীতি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, ফেডের রেট বৃদ্ধি—সবই চলছে।




আরো






© All rights reserved © outlookbangla

Developer Design Host BD