রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:১৫ পূর্বাহ্ন




রাসায়নিক ব্যবহার করে পাকানো আম চেনার উপায়

আউটলুক বাংলা রিপোর্ট
  • প্রকাশের সময়: বুধবার, ১৭ মে, ২০২৩ ৬:২৭ pm
Mukul aam Aam flower Mango Amer Mukul Amer Bol আমের বোলআমের ফুল গুটি আম মুকুল আমের মুকুল ঝরা রোধে করণীয় mango bd aam am mango edible stone fruit ফলের রাজা আম ম্যাঙ্গিফেরা সুস্বাদু ফল চাষ কাঁচা পাকা
file pic

বাজারে উঠতে শুরু করেছে মৌসুমী ফল আম। আমের জন্য সারাবছরই আগ্রহ থাকে ক্রেতাদের। খালি চোখে সব আম দেখতে সুন্দর হলেও এতে অনেক সময় রাসায়নিক দ্রব্য মেশানো হয়। বিশেষ করে ক্যালসিয়াম কার্বাইড দিয়ে আম দ্রুত পাকানোর উদাহরণ রয়েছে।

আম পাকার জন্য ফলের ভেতরেই প্রাকৃতিকভাবে থাকে ইথিলিন। কিন্তু অসাধু ব্যবসায়ীরা এতে মেশায় কার্বাইড। এটি বাতাসের জলীয়বাষ্পের সঙ্গে মিশে গিয়ে অ্যাসিটিলিন গ্যাস সৃষ্টি করে। এই গ্যাস ইথিলিনের মতো কাজ করে। কার্বাইড প্রয়োগে ফল পাকা দেখায় কিন্তু গাছপাকা ফলের মতো মিষ্টি ও রসালো হয় না। বাণিজ্যিক গ্রেডের ক্যালসিয়াম কার্বাইডে আর্সেনিক ও ফসফরাস থাকতে পারে। এসব রাসায়নিক পদার্থ শরীরে প্রবেশ করে নানা ধরনের ক্ষতিসাধন করতে পারে। কিডনি, লিভারের সমস্যাসহ হতে পারে প্রাণঘাতি রোগ।

কেমিক্যাল দিয়ে পাকানো আম যেভাবে চিনবেন:

কেমিক্যাল দিয়ে পাকানো আম উজ্জ্বল ও আকর্ষণীয় রঙের হবে। পুরো আম হলুদ রঙের হয়। কিন্তু প্রাকৃতিকভাবে গাছপাকা আম হলুদ ও হালকা সবুজ রঙের হবে। হিমসাগরসহ কিছু আম পাকলেও সবুজ থাকে।

আমের গায়ে দাগ খেয়াল করুন। দাগ না থাকলে বুঝবেন রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়েছে। কারণ কাঁচা অবস্থায় গাছ থেকে আম পেড়ে কেমিক্যাল দিয়ে পাকালে আমে দাগ থাকে না।

কেমিক্যাল মেশানো আম সব দিক সমানভাবে পাকা থাকবে। কিন্তু গাছপাকা আম পাকা থাকলেও সব দিকে সমানভাবে পাকা থাকবে না।

কেমিক্যাল দেয়া আমে স্বাদ খুব একটা নেই, তেমন গন্ধও পাবেন না। কিন্তু গাছপাকা আমের ঘ্রাণ থাকবে এবং স্বাদে মিষ্টি হবে।

আম কেনার আগে একটু কেটে খেয়ে নিন। মুখে দেয়ার পর যদি অনুভব হয় স্বাদ নেই কিংবা গন্ধ নেই তবে সেই আম না কেনাই ভালো। রাসায়নিক পদার্থ মেশানো আম খাওয়ার পর মুখে তেতো স্বাদ অনুভূত হবে। মনে হবে আমের কস লেগে আছে কিন্তু গাছপাকা আমের ক্ষেত্রে সেটি অনুভব করবেন না।

প্রাকৃতিকভাবে পাকা ফলের চামড়ার ওপর এক ফোঁটা আয়োডিন দিলে তা গাঢ় নীল অথবা কালো বর্ণের হয়ে যাবে। আর কেমিক্যালে পাকানো ফলে আয়োডিনের রঙ অপরিবর্তিত থাকে।

আম কিনতে গেলে খেয়াল করুন আমের গায়ে মাছি বসে কিনা। গাছপাকা আমে মাছি বসবে।

কেমিক্যালে পাকানো আম খেলে কী ধরনের ক্ষতি হতে পারে জানতে চাইলে এ বিষয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টিবিদ জাহানারা আক্তার সুমি বলেন, পুষ্টি এবং স্বাদের দিক থেকে আমের কোনো তুলনা নেই। আমে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন এবং খনিজ লবণ। এর মধ্যে ভিটামিন ‘এ’ এবং ভিটামিন ‘সি’ ‘ই’ উল্লেখযোগ্য। যা এন্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে পরিচিত। এর প্রধান কাজ হচ্ছে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা। এছাড়াও বিভিন্ন রকম ‘বি’ ভিটামিন আমে রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, খনিজ লবণের মধ্যে কপার ফোলেট, ম্যাগনেসিয়াম ইত্যাদি রয়েছে। পুষ্টির দিক থেকে আম অতুলনীয় একটি ফল। কিন্তু কিছু অসাধু ব্যবসায়ীর কারণে আম খাওয়ার ক্ষেত্রে আমাদের সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়। কারণ দ্রুত পাকানোর জন্য আমে রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করা হয়। বিশেষ করে ক্যালসিয়াম কার্বাইড। এই রাসায়নিক উপাদান আমাদের শরীরের জন্য মারাত্মক হুমকিস্বরূপ। এই উপাদানের প্রভাবে আমের ভেতরে এবং বাহিরের অংশে ব্যাপক পরিবর্তন দেখা দেয়। সুতরাং রাসায়নিক উপাদান ব্যবহার করা আম খেলে আমাদের কিছু শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

এর মধ্যে কিছু শারীরিক সমস্যা হচ্ছে স্বল্প মেয়াদি যেমন পেটে ব্যথা, পেট মোচড়ানো, কামড়ানোসহ ডায়রিয়া বা বদহজম। ত্বকের সংস্পর্শে এলে ত্বকে জ্বালাপোড়া, চুলকানিসহ অন্যান্য সমস্যা দেখা দিতে পারে। এছাড়া নিউরোলজিক্যাল কিছু সমস্যাও দেখা দিতে পারে। অবসাদ বা ক্লান্তি লাগা, ঘুম ঘুম ভাব ইত্যাদি।

দীর্ঘমেয়াদী সমস্যাগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো বিভিন্ন ধরনের ক্যানসার। সুতরাং আমাদের রাসায়নিক উপাদান ব্যবহার করে পাকানো আম খাওয়া উচিত নয়।




আরো






© All rights reserved © outlookbangla

Developer Design Host BD