মার্কিন ডলারের দাম ধরে রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংক যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে তাতে দেশের ব্যাংক খাতে তারল্যসংকট তৈরি হয়েছে। এর প্রভাবে ব্যাংক খাত থেকে সরকারের নেওয়া ঋণের সুদ ব্যয় বেড়েছে।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট বক্তৃতায় এ কথা বলেছেন। তিনি আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে এই বাজেট উপস্থাপন করেন। এ সময় তিনি দেশে এখন ডলারের দাম ১০৮ টাকা ১০ পয়সা বলে উল্লেখ করেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘২০১৯-২০ অর্থবছরের ৮.৬ শতাংশ থেকে ২০২১-২২ সময়ে আমদানি ৩৫ দশমিক ৯ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। অন্যদিকে ২০২১-২২ অর্থবছরে প্রবাসী আয় আগের অর্থবছরের তুলনায় ১৫ দশমিক ১২ শতাংশ কমে যায়। আমদানি ব্যয় বৃদ্ধি ও প্রবাসী আয় কমে যাওয়ার ফলে চলতি হিসাবে ঘাটতি ২০২০-২১ অর্থবছরের ৪ দশমিক ৫৮ বিলিয়ন ডলার হতে বেড়ে ২০২১-২২ সময়ে ১৮ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলারে উঠেছে। পাশাপাশি, রপ্তানি আয় প্রত্যাবাসন ও বৈদেশিক সাহায্যনির্ভর প্রকল্প বাস্তবায়নে ধীরগতির ফলে আর্থিক হিসাবও নেতিবাচক অবস্থানে চলে আসে। চলতি হিসাব ও আর্থিক হিসাবের যুগপৎ ঘাটতি লেনদেনে ভারসাম্য পরিস্থিতির অবনতি ঘটায়।’
বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, ‘বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২০২১ সালের জুনের ৪৬ দশমিক ৩৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার হতে কমে ২০২২ সালের জুনে ৪১ দশমিক ৮৩ বিলিয়ন হয়। রিজার্ভ ক্রমান্বয়ে আরও কমে বর্তমানে ২৯ দশমিক ৯৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে নেমে এসেছে। একই সঙ্গে মার্কিন ডলারের তুলনায় টাকার মূল্যমান কমেছে।
২০২২ সালের জুনে মার্কিন ডলারের বিপরীতে টাকার বিনিময় হার ছিল ডলারপ্রতি ৯৩ টাকা ৫০ পয়সা। গত ২৪ মে বিনিময় হার দাঁড়িয়েছে প্রতি ডলার ১০৮ টাকা ১০ পয়সা। বাজারে ডলারের সরবরাহ বাড়িয়ে বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার স্থিতিশীল রাখার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রাথমিক চেষ্টায় বাজারে সাময়িক তারল্যসংকট তৈরি করে। এর প্রভাবে ব্যাংক উৎস হতে ঘাটতি অর্থায়নে সরকারের সুদ ব্যয় বৃদ্ধি পায়।’