শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:৫৮ অপরাহ্ন




বাজেটে গরিবের বরাদ্দ কি গরিব পাবে, সংশয় মির্জ্জা আজিজের

আউটলুক বাংলা রিপোর্ট
  • প্রকাশের সময়: শনিবার, ৩ জুন, ২০২৩ ৯:৪৩ pm
A. B. Mirza Azizul Islam Mirza Azizul Islam এবিএম মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা মির্জ্জা আজিজ
file pic

নতুন বাজেটে গরিব মানুষের সহায়তায় সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে বরাদ্দ বাড়ানোর প্রস্তাবকে সাধুবাদ জানালেও তার যথাযথ বণ্টন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম।

তিনি বলেছেন, “এই বরাদ্দ বণ্টনের ক্ষেত্রে তিন ধরনের সমস্যা রয়েছে; যারা সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় আসার কথা নয়- সেই ধরনের মানুষ এই বরাদ্দ পাওয়ার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়।

“যারা সামাজিক নিরাপত্তার আওতায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার কথা, তারা অন্তর্ভুক্তি হন না এবং কোনও কোনও ক্ষেত্রে সরাসরি তহবিল তছরুপ হয়।”

শনিবার ঢাকার মহাখালীতে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত ‘পোস্ট বাজেট ডায়ালগ ২০২৩-২৪’ শীর্ষক সংলাপে এ কথা বলেন ২০০৭ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা মির্জ্জা আজিজ।

আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে ১ লাখ ২৬ হাজার ২৭২ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব রেখেছেন অর্থমন্ত্রী, যা বাজেটের ১৬.৫৮ শতাংশ এবং জিডিপির ২.৫২ শতাংশ।

এ খাতে বিদায়ী অর্থবছরের বাজেটে বরাদ্দ ছিল ১ লাখ ১৩ হাজার ৫৭৬ কোটি টাকা।

মির্জ্জা আজিজ বলেন, “সরকার দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারীর হার স্বীকার না করলেও সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বরাদ্দ বাড়িয়েছে। এটার প্রয়োজনীয়তাও আছে।”

তবে দরিদ্র মানুষের সংখ্যার যে হিসাব সরকার দিচ্ছে, তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে তিনি বলেন, “বাজেটে দেশে দরিদ্র্য মানুষের সংখ্যা ১৮ দশমিক ৭ শতংশে নেমে এসেছে বলা হয়েছে, এটা কতটুকু গ্রহণযোগ্য?

“…সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের জরিপে দারিদ্র্য হার পাওয়া গেছে ৩০ শতাংশের মতো।”

মূল্যস্ফীতি বাড়লে যে দারিদ্র্যের হারও বাড়ে সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে মির্জ্জা আজিজ বলেন, ২০২১-২২ অর্থবছরের গড় মূল্যস্ফীতি ছিল ৬ দশমিক ১৫ শতাংশ। ২০২৩ সালে এটা অনেক বেড়ে গেছে, মার্চ মাসে ছিল ৯ দশমিক ৩৩ শতাংশ। এপ্রিল মাসে একটু কমে এটা ৯ দশমিক ২৪ শতাংশ হয়েছে।

“মূল্যস্ফীতি বাড়লে নিম্নস্তরের মানুষগুলোর ক্রয় ক্ষমতা কমে গিয়ে দারিদ্র্যে নিপতিত হয়। এসব সমস্যার স্বীকৃতি কোনো দিন আমরা বাজেট বক্তৃতায় দেখতে পাইনি। সুতরাং বরাদ্দ বাড়িয়ে প্রান্তিক মানুষকে সহযোগিতা করার যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, তার কতটুকু সুফল আমরা পাব তাও বাজেট বক্তৃতায় উল্লেখ করা হয়নি।”

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হয়ে দুটি বাজেট দিয়ে আসা মির্জ্জা আজিজ বাজেটে বিভিন্ন লক্ষ্যমাত্রা পূরণ নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেন।

“প্রস্তাবিত বাজেটে (মূল্যস্ফীতির) টার্গেট ধরা হয়েছে ৬ শতাংশ। কিন্তু এত বড়মাত্রায় মূল্যস্ফীতি হ্রাস করা এটা কীভাবে সম্ভব, তার কোনো আলোচনা আমি (বাজেটে) দেখতে পাইনি।”

বেসরকারি বিনিয়োগের পরিমাণ জিডিপির ২১ দশমিক ৮৫ শতাংশ থেকে ২৭ দশমিক ৪ শতাংশে উন্নীত করার যে কথা বাজেট বক্তৃতায় এসেছে, তা ‘বাস্তবতা বিবর্জিত’ বলে মনে করেন পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের সাবেক প্রধান মির্জ্জা আজিজ।

“একদিকে বৈশ্বিক ও অভ্যন্তরীণ সংকট…বিনিয়োগ কমে যাচ্ছে- এমন পরিস্থিতিতে বেসরকারি বিনিয়োগ জিডিপি’র ৬ শতাংশ কীভাবে বাড়ানো হবে, তার কোনও ব্যখ্যা বাজেটে নেই।”

সংলাপে জিডিপি প্রসঙ্গে সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “প্রস্তাবিত বাজেটে সাড়ে ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধির যে টার্গেট ধরা হয়েছে, এটা বাস্তবতা বিবর্জিত। আগামী অর্থবছরে ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি করতে পারলেই অনেক ভালো প্রবৃদ্ধি বলে মনে করি।”

তবে নতুন বাজেটে সরকারি ব্যাংকগুলোতে নতুন করে টাকা দেওয়ার কোনো প্রস্তাব না থাকায় তিনি ‘খুশি’ বলে জানিয়েছেন।

তবে টিআইএনধারীর কাছ থকে ন্যূনতম ২ হাজার টাকা কর নির্ধারণ করে সম্পদ করের সীমা ১ কোটি টাকা বাড়িয়ে দেওয়ার প্রস্তাব দেশে বৈষম্য আরও বাড়াবে বলে মনে করেন সাবেক এ গভর্নর।

ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় বিজনেস অ্যান্ড ইকোনমি ফোরাম আয়োজিত এই সংলাপে বক্তব্য রাখেন আইপিডিসি ফাইন্যান্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মমিনুল ইসলাম ও চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট স্নেহাশীষ বড়ুয়া।




আরো






© All rights reserved © outlookbangla

Developer Design Host BD