রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:৩১ পূর্বাহ্ন




তেল গ্যাস কয়লা আমদানি বাধাগ্রস্ত

আউটলুক বাংলা রিপোর্ট
  • প্রকাশের সময়: মঙ্গলবার, ৬ জুন, ২০২৩ ১০:৪৪ am
বড়পুকুরিয়া কয়লা Fossil fuel জীবাশ্ম জ্বালানি বিদ্যুৎ Thermal Power Plant coal-fired power station কয়লা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র বিদ্যুৎকেন্দ্র জ্বালানি থার্মাল পাওয়ার প্লান্ট জাতীয় গ্রীড গ্রিড Power Station plant coal fired কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র Matarbari Coal Power Plant মাতারবাড়ি বিদ্যুৎকেন্দ্র মাতারবাড়ি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র
file pic

তীব্র ডলার সংকটে জ্বালানি তেল, গ্যাস ও কয়লা আমদানি বাধাগ্রস্ত হওয়ায় বিদ্যুৎ উৎপাদনে বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। একদিকে তীব্র গরম, অন্যদিকে বিদ্যুৎ না থাকায় জনজীবনে ভোগান্তি চরমে উঠেছে। এতে দেশের শিল্প ও কৃষি খাতে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। পণ্যের দাম আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ পরিস্থিতিতে বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়াতে জ্বালানি তেল, গ্যাস ও কয়লা আমদানির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর আওতায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে ১০ কোটি ডলার বরাদ্দ করেছে কয়লা ও গ্যাস আমদানির জন্য। এ অর্থ থেকে ইতোমধ্যে কয়লা আমদানির জন্য একটি এলসি খোলা হয়েছে। এ কয়লা চলতি মাসের শেষদিকে দেশে আসতে পারে।

জানা যায়, চলতি অর্থবছরে জ্বালানি খাতের তেল-গ্যাস ও কয়লা আমদানির জন্য ডলারের চাহিদা রয়েছে ৪২০ কোটি ডলার। অপরদিকে এই তিন খাতে এ পর্যন্ত এলসির দেনা বকেয়া রয়েছে ১০৫ কোটি ডলার।

সূত্র জানায়, জ্বালানি তেল সংকটে দেশের অনেক তেলনির্ভর বিদ্যুৎকেন্দ্র আগেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কয়লা সংকটেও কয়লানির্ভর বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো বন্ধ হয়েছে। গ্যাসের অভাবেও বিদ্যুৎ উৎপাদন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

এদিকে এসব জ্বালানি আমদানির আগে দেনা পরিশোধ করতে পারছে না সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো। যে কারণে বিদেশি কোম্পানিগুলো বাংলাদেশকে জ্বালানি দিচ্ছে না। এ অবস্থায় জ্বালানি সংকটে বিদ্যুতের উৎপাদন কমে গেছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি সরকারের উচ্চপর্যায়ে একটি বৈঠক হয়েছে। ওই বৈঠক থেকে জ্বালানি আমদানিতে ডলারের সংস্থান করতে বলা হয়েছে। এর আলোকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক জ্বালানি আমদানিতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে ১০ কোটি ডলার বরাদ্দ করেছে। এ অর্থে সম্প্রতি স্পট মার্কেট থেকে জরুরি ভিত্তিতে কয়লা আমদানির জন্য একটি এলসি খোলা হয়েছে। এ কয়লা চলতি মাসের শেষদিকে দেশে এসে পৌঁছাতে পারে।

এদিকে আন্তর্জাতিক বাজারে কয়লার দাম কমে গেছে। গত বছরের আগস্টে প্রতি টন কয়লার দাম ছিল ২৫৭ ডলার। এখন তা কমে ১৩১ ডলারে নেমেছে। ওই সময়ে কয়লার দাম কমেছে ৪৯ শতাংশ। এরপরও ডলার সংকটের কারণে কয়লা আমদানি করতে পারছে না সরকার।

চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে এপ্রিল পর্যন্ত কয়লা আমদানির এলসি খোলা হয়েছে ৮৬ কোটি ৪ লাখ ডলারের। আমদানি হয়েছে ৬৮ কোটি ৪০ লাখ ডলারের। গত অর্থবছরের একই সময়ে আমদানির এলসি খোলা হয়েছিল ৬৭ কোটি ১৯ লাখ ডলারের। আমদানি হয়েছিল ৬১ কোটি ৪৬ লাখ ডলারের। আলোচ্য সময়ের ব্যবধানে এলসি খোলা বেড়েছে ২৮ দশমিক ০৫ শতাংশ। আমদানি বেড়েছে ১১ দশমিক ২৯ শতাংশ। কিন্তু চাহিদা আরও বেশি। যে কারণে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোয় কয়লার সংকট দেখা দিয়েছে।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে রাশিয়ার ওপর অবরোধ আরোপ করায় দেশটি থেকে পণ্য আমদানির এলসি খোলা যাচ্ছে না। যে কারণে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য যন্ত্রপাতি আমদানি করা যাচ্ছে না। চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে এপ্রিল পর্যন্ত রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য কোনো এলসি খোলা সম্ভব হয়নি। তবে আগের খোলা এলসি থেকে আমদানি হয়েছে ১১৬ কোটি ২০ লাখ ডলার। গত অর্থবছরের একই সময়ে কোনো এলসি খোলা হয়নি। তবে আমদানি হয়েছিল ৮১ কোটি ৪৩ লাখ ডলার। ওই সময়ে আমদানি বেড়েছে ৪২ দশমিক ৭১ শতাংশ।

চলতি অর্থবছরের ওই সময়ে জ্বালানি তেল আমদানির জন্য ৭৬৩ কোটি ৩৩ লাখ ডলারের এলসি খোলা হয়েছে, আমদানি হয়েছে ৭৯৯ কোটি ৬৩ লাখ ডলারের। গত অর্থবছরের একই সময়ে এলসি খোলা হয়েছিল ৭৪৫ কোটি ৬০ লাখ ডলারের, আমদানি হয়েছিল ৬৯১ কোটি ২৬ লাখ ডলারের। আলোচ্য সময়ে এলসি খোলা বেড়েছে ২ দশমিক ৩৮ শতাংশ, আমদানি বেড়েছে ১৫ দশমিক ৬৮ শতাংশ। এর মধ্যে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানির এলসি খোলা কমেছে ৪৪ শতাংশ এবং আমদানি কমেছে ৫০ শতাংশ। গত বছরের জুলাইয়ে অপরিশোধিত প্রতি ব্যারেল জ্বালানি তেলের দাম ছিল ১২৭ ডলার। এখন কমে ৭৩ ডলারে দাঁড়িয়েছে। আলোচ্য সময়ে দাম কমেছে ৪২ দশমিক ৫২ শতাংশ। গ্যাসের দামও কমেছে। গত বছরের আগস্টে প্রতি এমএমসিটি গ্যাস ছিল ৩২ ডলার, এখন তা কমে ১০ ডলারে দাঁড়িয়েছে। আলোচ্য সময়ে দাম কমেছে ৩.২ গুণ।




আরো






© All rights reserved © outlookbangla

Developer Design Host BD