রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:২৫ পূর্বাহ্ন




‘অপচিকিৎসায়’ মৃত্যুর অভিযোগে চিকিৎসকের সনদ বাতিলের দাবি

আউটলুক বাংলা রিপোর্ট
  • প্রকাশের সময়: বুধবার, ৭ জুন, ২০২৩ ১০:০৭ am
Doctors Chamber Doctor Chamber doctor Physician ডাক্তার চেম্বার চিকিৎসকের চেম্বার ডাক্তার স্বাস্থ্য সেবা ডাক্তারী ডাক্তারি চিকিৎসক এমবিবিএস সরকারি হাসপাতাল প্র্যাকটিস বৈকালিক চিকিৎসাসেবা
file pic

‘অপচিকিৎসার’ ফলে অকালে ঝরে যাওয়া জাকির হোসেন খান-এর অপমৃত্যুর ঘটনায় জড়িত চিকিৎসক ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে জাকির হোসেন খান-এর পরিবার। সংবাদ সম্মেলনে সংশ্লিষ্ট দুই চিকিৎসকের চিকিৎসা সনদ বাতিল চেয়েছে ভুক্তভোগী পরিবার।

মঙ্গলবার (০৬ জুন) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জাকির হোসেন খানের স্ত্রী নূরুন নাহার।

লিখিত বক্তব্যে অপচিকিৎসায় মৃত জাকির হোসেন খান এর স্ত্রী নূরুন নাহার বলেন, ‘আমার স্বামী গত ১২ মার্চ আনুমানিক সকাল ৮টার দিকে শারীরিক অসুস্থতা বোধ করলে আমি তাকে গ্রীন লাইফ হাসপাতালের ইমার্জেন্সিতে নিয়ে যাই। সেখানকার কর্তব্যরত ডাক্তার সহযোগী অধ্যাপক ডা. রাশেদুল হাসান কনক ভর্তি হতে বলেন। সে অনুযায়ী ১২২৭/এ কেবিনে ভর্তি হলে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর রোগীর চিকিৎসাপত্রে ৩টি গ্যাষ্ট্রিকের ঔষধ দিয়ে ছাড়পত্র দিয়ে দেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘পরবর্তীতে একই দিন সন্ধ্যায় বি.আর.বি হাসপাতালের গ্যাষ্ট্রোলজির ডাক্তার মো. মাহবুবুল আলম প্রিন্স-কে দেখালে উনি রোগীর ডায়াবেটিস ও বুকের ব্যথার বিষয়টি জেনে একজন হার্টের ডাক্তার দেখানোর পরামর্শ দেন। বি.আর.বি হাসপাতালের ডা. শেখর কুমার মন্ডলকে (ক্লিনিক্যাল ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজিস্ট) দেখালে তিনি রোগীর ই.সি.জি ও ইকো করানোর পরে রোগী ঘণ্টা দেড়েক এর বেশি বাঁচবেন না বলে রোগীর সামনেই আমাকে জানান। যত দ্রুত সম্ভব রোগীর এনজিওগ্রাম করে হার্টে রিং পরাতে হবে। এ কথা শোনার পর আমার স্বামী ঘাবড়ে যায়।’

তিনি বলেন, ‘আমার স্বামীকে ইউনাইটেড হাসপাতালে নিয়ে যেতে চাইলে, ডাক্তার জানায় আপনার স্বামীর হার্টের কার্যকারিতা আস্তে আস্তে কমে যাচ্ছে। রোগীর বর্তমান যে অবস্থা, এত সময় আপনারা পাবেন না। যে কোনও সময় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে।

রোগীকে নিয়ে ল্যাবএইড হাসপাতালে যেতে চাইলে ডাক্তার বলেন, ল্যাবএইডের ক্যাথল্যাব রেডি নাই। কেবল গ্রীন লাইফ হাসপাতালেই ক্যাথল্যাব রেডি আছে।

নূরুন নাহার বলেন, ‘আমরা গ্রীন লাইফ হাসপাতালের ইমার্জেন্সিতে বসে আমার দেবরের জন্য অপেক্ষা করতে থাকি। লিফটের সামনে দাঁড়িয়ে থাকার সময় ডা. শেখর কুমার মন্ডল আমাকে টেলিফোনে বলেন, আপনি এখনো রোগী নিয়ে বসে আছেন? দ্রুত চলে আসেন। আমি ও অধ্যাপক ডা. গোলাম আজম ওটি রেডি করে বসে আছি। ততক্ষণে আমার দেবরও অন্যান্য আত্মীয়-স্বজন গ্রীন লাইফ হাসপাতালে চলে আসে।’

তিনি বলেন, ‘আমার স্বামী মরহুম জাকির হোসেন খান বিগত প্রায় ৭/৮ বছর ধরে ডায়াবেটিসের রোগী। নিয়মিত ইনসুলিন নিতেন। এই বিষয়ে আমরা ডা. শেখরকে বি,আর,বিতে উনার চেম্বারে অবহিত করার পরও তিনি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীর অপারেশনের আগে ও পরে কোনও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেনি। ১৩ তারিখ বিকালে আনুমানিক ৩:৪৫ মিনিটে শেখর মন্ডল আমাকে ফোনে বলেন, রোগীর অবস্থা ভালো না, রোগীর কিটোন বডি পজিটিভ। আমরা রোগীকে অন্য হাসপাতালে স্থানান্তর করতে চাইলে শেখর কুমার মন্ডল অসম্মতি জানান এবং বলেন আমার উপর বিশ্বাস রাখেন। ১৫/২০ মিনিট পর আই.সি.ইউ ইনচার্জ ডাক্তার আসাদুজ্জামান আমাদের ডেকে বলেন রোগীর ফুসফুসে নিউমোনিয়াসহ মাল্টিপল অর্গান ফেল করেছে। এরপর রোগীকে আই.সি.ইউতে স্থানান্তর করা হয়। ১৩ তারিখ দিবাগত রাত ১২:৩৬ মিনিটে আই.সি.ইউ থেকে রোগীকে লাইফ সাপোর্টে নেয়া হয়। লাইফ সাপোর্ট দেয়ার আগেই হার্ট ফেইলর হওয়াতে ফুসফুসে রক্ত ও পানি জমে যায়। ক্রমান্বয়ে রোগীর অবস্থা আরও অবনতি হতে থাকে। এক পর্যায়ে রোগী মৃত্যুবরণ করেন।’

তিনি বলেন, ‘আমার স্বামী আমার পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন। আমরা এখন অভিভাবক হারা, আমার সন্তানেরা এখন এতিম। এর জন্য দায়ী কে? আমি ও আমার পরিবার চাই সংশ্লিষ্ট দুই চিকিৎসকের চিকিৎসা সনদ বাতিল করা হোক।’

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন জাকির হোসেন খানের ভাই গোলজার হোসেন খান, শ্যালক মানিউল্লাহ মানি, বোন-জামাই সাইফুল ইসলাম, বন্ধু মো. টিটুসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা।




আরো






© All rights reserved © outlookbangla

Developer Design Host BD