শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:০৮ অপরাহ্ন




সংকটে সাতক্ষীরার টালি শিল্প

আউটলুক বাংলা রিপোর্ট
  • প্রকাশের সময়: বৃহস্পতিবার, ৮ জুন, ২০২৩ ৯:৪৩ am
file pic

মাটির তৈরি রকমারি টালি রপ্তানি করে ভাগ্য বদলে গেছে সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার মুরালিকাটি গ্রামের পালপাড়ার বাসিন্দাদের। বাইরের জেলা থেকে এসেও অনেক ব্যবসায়ী বড় অংকের বিনিয়োগ করেছিলেন এই শিল্পে। তবে করোনা মহামারি ও ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে রপ্তানি কমে যাওয়ায় বিপাকে পড়েন তারা।

এক সময় সাতক্ষীরার টালিপল্লি ছিল শ্রমিকমুখর। সাতক্ষীরাসহ আশপাশের জেলার অন্তত ১০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান ছিল এই খাতে। দেশের বড় বড় রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান এসব কারখানা থেকে অগ্রিম অর্ডার দিয়ে মাটির টালি সংগ্রহ করতো। এখানকার মাটির তৈরি টালি রপ্তানি হতো ইতালি, আমেরিকাসহ অনেক দেশে।

বর্তমানে রপ্তানিমূল্য না বাড়লেও বেড়েছে উৎপাদন খরচ। পাশাপাশি দক্ষ শ্রমিক, মাটি ও জ্বালানি সংকটের কারণে বন্ধ হচ্ছে একের পর এক কারখানা। এতে কর্মসস্থান হারিয়েছেন অনেকে।

সাতক্ষীরা ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) ও টালি ব্যবসায়ী সমিতির তথ্য অনুযায়ী, গত ছয় বছরের ব্যবধানে অর্ধেকের বেশি টালি কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। বর্তমানে যেগুলো টিকে আছে তাদের পণ্য নিয়মিত রপ্তানি হচ্ছে।

টালি উৎপাদনকারী বাদল চন্দ্র পাল বলেন, এখানকার কারখানায় নান্দনিক ডিজাইনের ১০-১২ প্রকারের টালি উৎপাদন করা হয়। এসব টালির মধ্যে ফেক্স অ্যাঙ্গুলার টালি, হেড ড্রাগুলার, স্কাটিং, স্টেম্প, স্কয়ার, রুপ, ব্রিকস ও ফ্লোর টালি উল্লেখযোগ্য।

টালি উৎপাদনকারী মো. ইমদাদুল ইসলাম বলেন, এলাকার অধিকাংশ মানুষ টালি উৎপাদন করে স্বাবলম্বী হয়েছে। এ শিল্প শুরু থেকে খুবই সম্ভাবনাময় ছিল। বাইরের জেলার অনেক ব্যবসায়ী এ খাতে মোটা অংকের টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন। তবে করোনার সময় আন্তর্জাতিক বাজার ধস ও অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে তারা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন।

টালি ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি গোষ্ঠ পাল বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে অস্থিরতা ও জাহাজে কনটেইনার পরিবহন খরচ বৃদ্ধির কারণে রপ্তানিমূল্য কমে গেছে। ফলে টালি শিল্প টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। এছাড়া কাঁচামাল সংকটের পাশাপাশি জ্বালানি ও শ্রমিকের মূল্য বেড়ে যাওয়ায় অনেকে কারখানা বন্ধ করে দিয়েছেন।

তিনি বলেন, সম্প্রতি কয়েকজন নতুন উদ্যোক্তা ইউরোপের নতুন কয়েকটি দেশে বায়ার পাওয়ায় তাদের ব্যবসা ভালো হচ্ছে। তারা নতুন করে অগ্রিম অর্ডারও পেয়েছেন।

সাতক্ষীরা ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) সাতক্ষীরার উপব্যবস্থাপক গোলাম সাকলাইন বলেন, সাতক্ষীরায় উৎপাদিত মাটির তৈরি টালি ইতালি, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশে প্রচুর চাহিদা রয়েছে। তবে করোনা ও ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে চাহিদা কিছু কমে গেছে।

তিনি বলেন, এতো কিছুর পরও বর্তমানে বছরে আট-নয় কোটি টালি উৎপাদন হয়। যা থেকে বছরে প্রায় ৫০ কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা আয় হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, এই শিল্পের আধুনিকায়নে নতুন করে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে এই শিল্পে আসতে আগ্রহী উদ্যোক্তাদের জন্য কারিগরি প্রশিক্ষণ ও ঋণ সহযোগিতার ব্যবস্থা করা হবে।




আরো






© All rights reserved © outlookbangla

Developer Design Host BD