কাগুজে ডলারের সংকটের কারণে বিদেশে গিয়ে কার্ডের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা খরচের পরিমাণ বেড়েই চলছে বাংলাদেশিদের। ডেবিট কার্ডের চেয়ে ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা খরচের পরিমাণ বাড়ছে দিন দিন। এক মাসের ব্যবধানে ক্রেডিট কার্ডে বৈদেশিক মুদ্রা খরচের পরিমাণ বেড়েছে প্রায় ৩২ শতাংশ।
টাকার পরিমাণের দিক দিয়ে গত জুলাই মাসে বাংলাদেশে ঘুরতে আসা বিদেশিদের ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে খরচের চেয়ে তা আড়াই গুনের বেশি।
বিদেশে বাড়লেও দেশের অভ্যন্তরে ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে জুলাইতে ২.৯৬ শতাংশ খরচ কমেছে আগের মাসে চেয়ে। গত জুলাই মাসে যেখানে খরচ হয় ২ হাজার ৩৪১ কোটি ৯০ লাখ টাকা, সেখানে আগের জুন মাসে খরচ হয়েছিল ২ হাজার ৪১৩ কোটি ৩০ লাখ টাকা।
বৃহস্পতিবার প্রকাশ করা কার্ডের মাধ্যমে দেশের অভ্যন্তরে ও বিদেশে খরচ সংক্রান্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত জুলাই মাসে বিদেশে ঘুরতে গিয়ে বাংলাদেশিরা ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে ৫১১ কোটি ৮০ লাখ টাকার সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা খরচ করেছেন। এই অঙ্ক আগের মাসের চেয়ে ৩১.৮১ শতাংশ বেশি। গত জুন মাসে যেখানে ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে খরচ করা হয় ৩৮৮ কোটি ৩০ লাখ টাকার সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা।
গত মার্চের আগের মাস ফেব্রুয়ারির চেয়ে ৩৬.২৪ শতাংশ বেশি খরচ করেছিলেন বাংলাদেশিরা বিদেশে গিয়ে। ওই সময়ে বাংলাদেশিরা খরচ করেছিলেন ৪২৬ কোটি ২০ লাখ টাকার সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা।
অন্যদিকে বিদেশি নাগরিকরা গত জুলাই মাসে ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে বাংলাদেশে খরচ করেছেন মাত্র ১৮১ কোটি ৪০ লাখ টাকার সমপরিমাণ বিদেশি মুদ্রা।
ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে বিদেশিদের তুলনায় বাংলাদেশিরা বাইরে গিয়ে ২.৬৭ গুণ বেশি খরচ করেছেন জুলাই মাসে। জুলাই মাসে বাংলাদেশিদের বাইরে গিয়ে ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে খরচ অস্বাভাবিক বাড়লেও বিদেশিদের কমেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, আগের মাসের চেয়ে জুলাই মাসে ২.১১ শতাংশ কমেছে। জুলাই মাসে বিদেশিরা দেশে খরচ করেছেন ১৯১ কোটি ৪০ লাখ টাকা। পাঁচ মাস আগে বিদেশি নাগরিকদের বাংলাদেশে খরচ হয়েছিল ২৩৬ কোটি ৭০ লাখ টাকার সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত জুলাই মাসে ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা সবচেয়ে বেশি খরচ হয় ভারতে ১৬.৯২ শতাংশ, যুক্তরাষ্ট্রে ১৩.৮৩ শতাংশ, সৌদি আরবে ১১.৪২ শতাংশ, থাইল্যান্ডে ৯.২২ শতাংশ, সিঙ্গাপুরে ৭.৭১ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে দেশের বাইরে গিয়ে বাংলাদেশিরা মোট ব্যয়ের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৩০.৮২ শতাংশ খরচ করেছেন বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টাল স্টোরের কেনাকাটায়।
এছাড়া বিভিন্ন ধরনের খুচরা পণ্য করে ১৫.৬২ শতাংশ, ওষুধ ক্রয়ে ১১.৯৩ শতাংশ, পোশাকে ৯.৪৬ শতাংশ, যাতায়াতে ৭.৯২ শতাংশ, নগদ অর্থ উত্তোলন ৭.৮৪ শতাংশ।