রবিবার, ১৮ মে ২০২৫, ১০:১৪ অপরাহ্ন




বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন: ব্যাংকে ফিরছে হাতের টাকা

আউটলুক বাংলা রিপোর্ট
  • প্রকাশের সময়: রবিবার, ১২ নভেম্বর, ২০২৩ ১০:১৮ am
ঋণ money laundering illegal process money generated criminal drug trafficking terrorist funding illegally concealing illicit drug trafficking corruption embezzlement gambling converting legitimate source crime jurisdictions আমদানি ওভার ইনভয়েসিং রপ্তানি আন্ডার-ইনভয়েসিং আমদানি-রপ্তানি অবৈধ জাল অর্থ পাচার জিএফআই মানি লন্ডারিং আর্থিক খাত গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট বিএফআইইউ হুন্ডি অর্থ পাচার সরকার ছিনতাই Per capita income মাথাপিছু আয় Reserves Reserve রিজার্ভ remittance রেমিট্যান্স প্রবাসী আয় ডলার dollar Pagla Mosque পাগলা মসজিদ কোটি টাকা Pagla Mosque পাগলা মসজিদ কোটি টাকা taka taka
file pic

মানুষের হাতে টাকা রাখার প্রবণতা কমছে। ব্যাংক থেকে টাকা তোলার চেয়ে জমা হচ্ছে বেশি। টানা ৩ মাস ধরে ব্যাংক ব্যবস্থার বাইরে নগদ টাকার চলাচল কমছে।

চলতি বছরের জুন শেষে ব্যাংকের বাইরে নগদ অর্থের অঙ্ক ছিল ৩ লাখ কোটি টাকার কাছাকাছি। সেপ্টেম্বরে তা কমে আড়াই লাখ কোটি টাকার নিচে নেমে এসেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এসব তথ্য।

ব্যাংকাররা বলছেন, ব্যাংক খাতের ওপর গ্রাহকের আস্থা সংকট ও মূল্যস্ফীতির হার বৃদ্ধির কারণে ব্যাংকের বাইরে মানুষের হাতে নগদ টাকার অঙ্ক বেড়েছিল। তবে সুদ হারের সীমা তুলে দেওয়ার পর ব্যাংকগুলো আমানতের সুদহার বাড়িয়েছে। তাই এখন ব্যাংকে টাকা ফিরছে।

আবার আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বিনিয়োগে ধীরগতি থাকায় মানুষ হাতে রাখা টাকা ব্যাংকে ফিরছে। তাই ধারাবাহিকভাবে ব্যাংকের বাইরের নগদ অর্থ কমছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছরের মে মাসে ২ লাখ ৫৫ হাজার ৮২৯ কোটি নগদ টাকা ব্যাংকের বাইরে ছিল । হঠাৎ করেই ১ মাসে ৩৬ হাজার ৪৮ কোটি টাকা বেড়ে জুন শেষে ২ লাখ ৯১ হাজার ৯১৩ কোটি টাকায় উঠে যায়। তবে জুনের পর থেকে তা আবার কমতে শুরু করে।

জুলাইয়ে কমে ২ লাখ ৬৬ হাজার ৩৫৪ কোটি টাকা হয়। আগস্টে আরও কমে ২ লাখ ৫৮ হাজার ৩৫৬ কোটি এবং সেপ্টেম্বরে ২ লাখ ৫৩ হাজার ৫০৫ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। অর্থাৎ ৩ মাসে ব্যাংকের বাইরে মানুষের হাতে থাকা নগদ টাকা কমেছে ৩৮ হাজার ৪০৮ কোটি টাকা।

জানা যায়, গত বছরের নভেম্বরে কয়েকটি ব্যাংকের ঋণ অনিয়মের খবর জানাজানি হওয়ার পর ব্যাংক খাতের প্রতি মানুষের আস্থা তলানিতে নেমে যায়। এরপর সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলো থেকে টাকা তুলে নিতে থাকেন গ্রাহকরা। আবার সে সময় ব্যাংকে নতুন আমানত আসাও কমে যায়। এতে ব্যাংক খাত তারল্য সংকটে পড়ে। এছাড়া দীর্ঘদিন ধরে দেশে উচ্চমূল্যস্ফীতি বিরাজ করছে। জীবনযাত্রার খরচ বেড়েছে। আবার মূল্যস্ফীতি যেভাবে বেড়েছে সেভাবে ব্যাংকে আমানতের সুদহার বাড়েনি। যার কারণে গত বছরের নভেম্বর থেকে মানুষের হাতে নগদ টাকার অঙ্ক বাড়তে থাকে।

জানা গেছে, ২০২০ সালের এপ্রিলের আগে ব্যাংকে সুদহার ছিল পুরোপুরি স্বাধীন। তখন ব্যাংক ঋণের সুদ ১৬-১৭ শতাংশ পর্যন্ত উঠেছিল। ব্যবসায়ীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ঋণের সুদ ৯ এবং আমানতের সুদ ৬ শতাংশ বেঁধে দেয় সরকার। এরপর ৯-৬ সুদহার নির্দিষ্ট ছিল দীর্ঘদিন।

চলতি বছরের ১ জুলাই থেকে সুদ হারের সে সীমা প্রত্যাহার করা হয়, তবে উন্মুক্ত না, বিশেষ প্রক্রিয়ায় বাড়ানো হচ্ছে। এখন ব্যাংক ঋণ ও আমানতের সুদহার ধীরে ধীরে বাড়ছে। ব্যাংকে আমানতের সুদহার বাড়ায় মানুষও ব্যাংকে টাকা রাখতে শুরু করেছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, জুন শেষে ব্যাংক আমানতের গড় সুদহার ছিল ৪.৩৮ শতাংশ। এরপর আস্তে আস্তে প্রতি মাসেই বাড়ছে। জুলাইয়ে বেড়ে হয় ৪ দশমিক ৪৬ শতাংশ। আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে গড় সুদহার ছিল ৪ দশমিক ৫২ শতাংশ। সেপ্টেম্বর শেষে ব্যাংক খাতে আমানত বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৬ লাখ ২৩ হাজার ১৩৯ কোটি টাকা। যা জুন শেষে ছিল ১৫ লাখ ৯৫ হাজার ২৬০ কোটি টাকা।

একটি বেসরকারি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) বলেন, চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতায় নতুন বিনিয়োগে যাচ্ছেন না ব্যবসায়ীরা। তাই গত কয়েক মাস ধরে বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ ব্যাপক হারে কমেছে। আবার ডলার সংকটের কারণে চাহিদামতো এলসি খুলতে পারছেন না উদ্যোক্তারা। এতে কাঙ্ক্ষিত হারে রপ্তানি পণ্য উৎপাদন হচ্ছে না।

উৎপাদন না হলে ব্যয় কম হয়। উৎপাদন ব্যয় বাড়লে মানুষের হাতে টাকা বাড়ে। কারণ জিনিসপত্র কেনাকাটা ও কর্মচারীদের বেতন দিতে হয়। এখন এগুলো কমে আসায় মানুষের হাতের টাকা ব্যাংকে ফিরছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, আগস্ট শেষে বেসরকারি খাতের ঋণের প্রবৃদ্ধি ছিল ৯ দশমিক ৭৫ শতাংশ, সেপ্টেম্বরে তা আরও কমে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৬৯ শতাংশ। বেসরকারি খাতের ঋণে এই প্রবৃদ্ধি গত ২৩ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। বর্তমান মুদ্রানীতিতে ডিসেম্বর পর্যন্ত বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ১০ দশমিক ৯০ শতাংশ। এইদিকে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বেসরকারি খাতের ঋণের প্রবৃদ্ধি কমিয়ে আনছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, বেসরকারি ঋণ কমে যাওয়া কাঙ্ক্ষিত নয়। বেসরকারি খাতের ঋণ কমে যাওয়া মানে আগামীতে বিনিয়োগ কমে যাবে। আর বিনিয়োগ কমলে কর্মসংস্থানও কমে যাবে। এতে করে দারিদ্র্য বিমোচনের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়বে।




আরো






© All rights reserved © outlookbangla

Developer Design Host BD