প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় আসে তখন জনগণের উন্নয়ন হয়। দুর্ভাগ্যের বিষয় বিএনপি মানে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড। বিএনপি-জামায়াতের কাজই হচ্ছে আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মারা। মানুষ খুন তাদের একমাত্র গুণ। বিএনপি-জামায়াতের আর কোনো গুণ নেই।
সোমবার (১৩ নভেম্বর) বিকেলে খুলনা সার্কিট হাউস মাঠে আওয়ামী লীগ আয়োজিত বিভাগীয় মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনারা দেখেছেন এই ২৮ অক্টোবর কীভাবে পুলিশকে মাটিতে ফেলে পিটিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেছে। বেহুঁশ হয়ে গেছে তাও ছাড়েনি। তারপর কুপিয়েছে। ৪৫ জন পুলিশ আহত হয়েছে। সাংবাদিকদেরও ছাড়েনি। সাংবাদিকদের তারা পিটিয়ে হাসপাতালে পাঠিয়েছে। রাজারবাগ পুলিশ স্টেশনে ঢুকে হাসপাতালে আক্রমণ করেছে। কয়েকটা অ্যাম্বুলেন্স ভেঙেছে, পুড়িয়ে দিয়েছে। কয়েকটা অ্যাম্বুলেন্স ভেঙেছে, পুড়িয়ে দিয়েছে। অ্যাম্বুলেন্সে করে রোগী যাচ্ছে সেই অ্যাম্বুলেন্সে আক্রমণ করেছে। এদের মধ্যে এতটুকু মনুষত্ববোধ আছে বলে আমি মনে করি না।
তিনি বলেন, আমার একটাই লক্ষ্য এ দেশের মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন করা। ২০০৮ সাল ২০১৪, ২০১৮ সালে ক্ষমতায় এসেছি। ধারাবাহিক গণতান্ত্রের ধারা অব্যাহত রয়েছে।
এর আগে বিকেল ৩টা ১৬ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী সাকিট হাউস মাঠে আয়োজিত আওয়ামী লীগের বিভাগীয় সমাবেশে উপস্থিত হন। এরপর সেখানে তিনি ২৯টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটে হেলিকপ্টারে খুলনা জেলা স্টেডিয়ামে অবতরণ করেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর দুপুর ১টা থেকে ২টা পর্যন্ত সার্কিট হাউসে বিভাগীয় পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর হাউস মাঠে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
বিভাগীয় এই মহাসমাবেশে সভাপতিত্ব করেন খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের স্বাধীন দেশ দিয়ে গেছেন। তার স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ গড়ার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি আমরা। এ দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করাই আমার লক্ষ্য। যে দেশের স্বপ্ন জাতির পিতা দেখেছিলেন, সেই স্বপ্ন বাস্তবায়িত হচ্ছে।’
একমাত্র আওয়ামী লীগ সরকারই দেশের মানুষের উন্নয়নে কাজ করে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে মর্যাদা পেয়েছে, দারিদ্র্যের হার কমেছে। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে, এ দেশে একটি মানুষও দারিদ্র্যের মধ্যে থাকবে না। কোনও মানুষ ভূমিহীন থাকবে না। আমাদের সরকার সেই লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। তবে বিএনপি-জামায়াত চক্র সরকারকে ব্যর্থ করতে মাঠে নেমেছে। ওরা চায় না দেশ উন্নত হোক। এজন্য আন্দোলনের নামে হরতাল-অবরোধ দিয়ে পুলিশের ওপর হামলা, মানুষের ওপর নির্যাতন ও যানবাহনে অগ্নিসংযোগ করছে তারা।’
বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে সার্কিট হাউজ মাঠের জনসভা মঞ্চে ওঠেন তিনি। এরপর ২২ প্রকল্প উদ্বোধন ও দুটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।এর আগে সকাল থেকে সার্কিট হাউজ মাঠে দলীয় নেতাকর্মীরা দলে দলে আসতে শুরু করেন। আগতদের হাতে নানা ধরনের প্ল্যাকার্ড, ফেস্টুন, দলীয় প্রতীক নৌকা দেখা গেছে। দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সমর্থকদের বিশাল বিশাল মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে আসতে দেখা যায়। দুপুর হতেই মাঠ কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে ওঠে।