মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে আরাকান আর্মি ও সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষে মর্টার শেল ও গোলার বিকট শব্দে আতঙ্কের মধ্য আছেন কক্সবাজারে টেকনাফ শাহপরীর দ্বীপের মানুষ। তবে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে নাফ নদে টহল জোরদার অব্যাহত রেখেছেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এবং কোস্ট গার্ডের সদস্যরা।
শনিবার ভোর থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত ঘেঁষা টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের ওপারে ভারী মর্টার শেলের শব্দ পায় স্থানীয় বাসিন্দারা। এই মর্টার শেলের আঘাতে এপারের সীমান্তের লোকজনের বাড়ি-ঘর কেপে উঠছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, বাংলাদেশের দক্ষিণের শেষ সীমান্তের টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের ওপারে থেমে থেমে ভারী গোলার শব্দে সীমান্ত সড়কে লোকজন জড়ো হন। অনেককে আবার মাছ শিকারে সাগরে নামতে প্রস্তুতি নিতে দেখা গেছে।
সীমান্তের নাফ নদের তীরে শাহপরীর দ্বীপ দারুশ শরীআহ্ আল ইসলামীয়াহ বড় মাদ্রাসার খতিব মাওলানা এশপাক বলেন, ফজরের নামাজ শেষ করে বাড়ি যাওয়ার পথে থেমে থেমে অনেক বড় মর্টার শেলের শব্দ শুনছি। শুক্রবার রাত ৩টার দিকে হেফজ খানার ছেলেদের মর্টার শেলের শব্দে ঘুম ভেঙে যায়। আমরা এখানে খুব ভয়ের মধ্য থাকি। কেননা, অনেক সময় মর্টার শেলের শব্দে মাদ্রাসার ভবন কেপে উঠে।’
টেকনাফ শাহপরীর দ্বীপের ৯ নম্বর ওর্য়াডের ইউপি সদস্য আব্দুস সালাম বলেন, ‘সকাল থেকে থেমে নাফ নদের ওপারে ‘বোমার’ মতো গোলার খুব বড় বিকট শব্দ হচ্ছে। আমরা জেলেদের কাছ থেকে জেনেছি, সীমান্তের ওপারে রাখাইনে মংডু পাতনছা, নরবনিয়া, নুরুল্লা ও হাসসুরাতাসহ সে দেশে ‘যুদ্ধ’ হচ্ছে। এর প্রভাব এপারেও এসে পরছে।’
এ বিষয়ে টেকনাফ-২ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘আমরা সীমান্ত ঘুরে দেখছি। আজ সকালে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে গোলাগুলির খবর শুনেছি। তবে আমরা (বিজিবি) সীমান্তে টহল জোরদার অব্যাহত রেখেছি।’
শাহপরীর দ্বীপ জেটিঘাটে ইজারাদারের দায়িত্বে থাকা মো. ছিদ্দিক বলেন, গত দুই দিনের তুলনায় গোলাগুলির শব্দ একটু কম পরিমাণে শোনা যাচ্ছে। গত দুই দিনে মর্টার শেলের শব্দে সীমান্ত এলাকাগুলো কাঁপছিলো। আতঙ্কের মধ্যে এখানে ডিউটি করতেছি। যে বিকট শব্দ পাই। মাঝে মাঝে মনে হয়, এই মুহূর্তে গুলি বা মর্টার শেল এখানে এসে পড়ছে।’
এদিকে গতকাল টেকনাফের হোয়াইক্যং, হ্নীলা ও সেন্টমার্টিনের বসবাসকারী খুব বিকট গোলার শব্দ শুনলেও আজ (শনিবার) সকাল থেকে তেমন একটা গোলাগুলির শব্দ পায়নি বলে জানিয়েছেন সেখানকার বাসিন্দারা।