আঠারো বছর আগে হবিগঞ্জের এক ধর্ষণ মামলার আসামিকে বিচারিক আদালতে দেওয়া খালাসের রায় বাতিল করেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১৩ ধারা অনুসারে ধর্ষণের পর জন্ম নেওয়া শিশুর ভরণ ও পোষণের ব্যয়ভার বহনের নির্দেশ দেওয়া হয়।
বিচারিক আদালতের রায় বাতিল চেয়ে বাদীর (ভিকটিম) করা আবেদন নিস্পত্তি করে বিচারপতি মো. রেজাউল হাসান ও বিচারপতি ফাহমিদা কাদের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার এ রায় দেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন- ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল শরীফুজ্জামান মজুমদার। আবেদনকারী ভিকটিমের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আমিনুল ইসলাম। আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. আক্তারুজ্জামান।
এজাহার সূত্রে জানা যায়, বিয়ের কথা বলে ভিকটিমকে হবিগঞ্জের চুনারুঘাটের টিলাগাঁও এলাকার ছিদ্দিক আলীর ছেলে কাছুম আলী ধর্ষণ করেন। ২০০৫ সালের ৫ ডিসেম্বর হবিগঞ্জ সেন্ট্রাল হসপিটাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে টেস্টে গর্ভে সন্তান থাকার বিষয়টি ধরা পড়ে। গর্ভধারণের পর কাছুম আলী ওই মেয়েকে বিয়ে করতে অস্বীকার করেন। এরপর ২০০৬ সালের ২১ জুলাই কাছেম আলীর বিরুদ্ধে মামলা করেন ওই নারী। এর মধ্যে ভিকটিম একটি সন্তানের জন্ম দেন।
ওই মামলায় হবিগঞ্জের দুই নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক জিয়া উদ্দিন মাহমুদ আসামিকে খালাস দেন। এ রায় বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন ভিকটিম। ওই আবেদনের পর হাইকোর্ট রুল জারি করেন। মঙ্গলবার রায় ঘোষণা করেন হাইকোর্ট।
রায়ের পর একেএম আমিন উদ্দিন মানিক সাংবাদিকদের জানান, আসামিপক্ষ ওই সময় ভিকটিমের পরিবারকে আপসের প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু হয়নি। হাইকোর্ট মামলা শুনানি শেষে বিচারিক আদালতের রায় বাতিল এবং আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন। পাশাপাশি ১ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ৬ মাসের কারাদণ্ড দেন। আর ভিকটিমের সন্তানের লালনপালন করার বিষয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ১৩ ধারা মোতাবেক নির্দেশনা দিয়েছেন।