২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় যাওয়ার কথা বাংলাদেশের নাম। নিয়ম অনুযায়ী তখন বেশ কিছু শুল্ক সুবিধা আর অব্যাহত থাকবে না। তবে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) নতুন সিদ্ধান্তের ফলে এরপর আরও তিন বছর এসব শুল্ক সুবিধা পাবে বাংলাদেশ।
সংস্থাটির ১৩তম মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।এর আগে এমন শুল্ক সুবিধা অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছিল ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। এবার একই সিদ্ধান্ত নিল জাতিসংঘ।
গত ২৬ ফেব্রুয়ারি থেকে ১ মার্চ পর্যন্ত আবুধাবিতে ডব্লিউটিওর ১৩তম মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে সদস্য দেশগুলোর মন্ত্রীরা উন্নয়নশীল দেশের খ্যাতি অর্জনের পরও কিছু দেশের জন্য স্বল্পোন্নত দেশের বাণিজ্য সুবিধা বজায় রাখতে রাজি হন।
বাংলাদেশসহ বিশ্বে এখন স্বল্পোন্নত দেশের সংখ্যা ৪৫টি। এর মধ্যে এলডিসি থেকে উত্তরণের প্রক্রিয়ায় আছে বাংলাদেশসহ ছয় দেশ। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসি (সিডিপি) এলডিসিভুক্ত দেশের তালিকা থেকে বাংলাদেশের উত্তরণের বিষয়ে সুপারিশ করে।
নিয়ম অনুযায়ী, এলডিসি তালিকা থেকে উত্তরণের পর বিশ্বের বেশিরভাগ বাজারেই শুল্ক ও কোটামুক্ত সুবিধা পাওয়া যায় না। তবে গত অক্টোবরে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ডব্লিউটিও) জানায়, স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে যেতে সহায়তার অংশ হিসেবে একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত শুল্কমুক্ত সুবিধা দেওয়া হবে।
গত শুক্রবার শেষ হওয়া ডব্লিউটিও সম্মেলনের খসড়া ঘোষণায় বলা হয়, স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে বাংলাদেশ ২০২৯ সাল পর্যন্ত উন্নয়নশীল ও উন্নত অর্থনীতির দেশগুলোয় রপ্তানি পণ্যের জন্য স্বল্প বা শূন্য শুল্ক সুবিধা ভোগ করবে।
ঘোষণাপত্রে আরও বলা হয়, ডব্লিউটিওর বিরোধ নিষ্পত্তি সমঝোতার ২৪ অনুচ্ছেদ অনুসারে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বের হয়ে উন্নয়নশীল দেশ হওয়ার বিষয়ে জাতিসংঘের ঘোষণার দিন থেকে সেসব দেশ পরবর্তী তিন বছর এ সুবিধা পাবে।
এ ছাড়াও, সেসব দেশ ডব্লিউটিওর কারিগরি সহায়তা ও প্রশিক্ষণ পরিকল্পনার আওতায় তিন বছর পর্যন্ত কারিগরি সহায়তা পাবে।
ডব্লিউটিওর কমিটিগুলো ২০২৪ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে এই সিদ্ধান্ত পর্যালোচনা ও জেনারেল কাউন্সিল অগ্রগতিবিষয়ক পরবর্তী মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনে প্রতিবেদন দেবে।
ডব্লিউটিওর প্রস্তাবিত ব্যবস্থার আওতায় সদ্য উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য স্বল্পোন্নত দেশগুলোর সব শুল্ক সুবিধা কার্যকর রাখা না গেলেও সেসব উন্নয়নশীল দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ও পণ্যের বিষয়গুলো বিবেচনায় রাখা যেতে পারে।
এছাড়া ডব্লিউটিও সদস্য দেশগুলো ই-কমার্সের ওপর আমদানি শুল্ক স্থগিতের মেয়াদ আরও দুই বছর বাড়াতে রাজি হয়েছে।