রবিবার, ২৬ জানুয়ারী ২০২৫, ১০:১০ অপরাহ্ন




কারা এগিয়ে নেবেন দেশের পররাষ্ট্রনীতি

আউটলুক বাংলা রিপোর্ট
  • প্রকাশের সময়: মঙ্গলবার, ৫ মার্চ, ২০২৪ ১১:৩৪ am
MoFA পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন Foerign_minstry_momen পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন Foreign Minister AK Abdul Momen Ministry of Foreign Affairs পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
file pic

মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার কারণে সম্প্রতি কর্মরত ১০ জন রাষ্ট্রদূতকে ডেকে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এরইমধ্যে ৯ জনকে এ বিষয়ে চিঠিও পাঠানো হয়েছে। তারা যেসব দেশে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন, সেসব দেশে এখন নতুন রাষ্ট্রদূত পাঠানোর বিষয়টি সামনে চলে এসেছে।

এদিকে বর্তমান পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের স্বাভাবিক পিআরএল শুরু হওয়ার কথা ছিল ২০২২ সালের ডিসেম্বরে। কিন্তু দুই বছর মেয়াদ বাড়ানোর কারণে চলতি বছরের ডিসেম্বরে তার অবসরে যাওয়ার কথা। আবার ওই একই মাসে সাতটি দেশে কর্মরত রাষ্ট্রদূতদের মেয়াদও শেষ হবে। সাতটি দেশের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ মিশনগুলো হচ্ছে—দিল্লি, লন্ডন, ক্যানবেরা, ব্রাসেলস, মস্কো, পর্তুগাল ও নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ স্থায়ী প্রতিনিধি।

এ প্রেক্ষাপটে যারা এখনও রাষ্ট্রদূত হননি কিন্তু যোগ্য, তাদের অনেকেই প্রথম রাষ্ট্রদূত হিসেবে পোস্টিং পাওয়ার আশা করছেন। আবার তুলনামূলক জ্যেষ্ঠ অর্থাৎ রাষ্ট্রদূত হিসেবে কর্মরত রয়েছেন, তাদের অনেকে মনে করছেন—তারা ভালো একটি পোস্টিং পাবেন।

আবার পররাষ্ট্র সচিবের মেয়াদ বাড়বে কিনা বা তাকে নতুন কোনও দায়িত্ব দেওয়া হবে কিনা, অথবা ডিসেম্বরে মেয়াদ শেষ হওয়া হেভিওয়েট রাষ্ট্রদূতদের মেয়াদ বাড়বে কিনা—সেটি বছরের শেষ দিকে পরিষ্কার হবে বলে জানিয়েছে একাধিক সূত্র। মোটা দাগে সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি কারা এগিয়ে নিয়ে যাবেন, সেটি স্পষ্ট হবে এ বছরের শেষ নাগাদ।

এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে বলেন, ‘আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করার মূল দায়িত্ব পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং এর কর্মকর্তাদের ওপর। সামনের দিনগুলোতে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে কারা জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করবে ও পররাষ্ট্রনীতি কারা এগিয়ে নিয়ে যাবেন, সেটি বছরের শেষ নাগাদ পরিষ্কার বোঝা যাবে।’

গুরুত্বপূর্ণ মিশন

বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মিশনগুলোর মধ্যে রয়েছে দিল্লি, লন্ডন ও ওয়াশিংটন। এসব মিশনে কারা রাষ্ট্রদূত হবেন—সেটি সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারকরা ঠিক করে থাকেন। বর্তমানে ইউরোপের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রক্ষা করছে বাংলাদেশ এবং সে কারণে ব্রাসেলসও অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মিশন হিসেবে পরিগণিত হয়ে থাকে।

এ বিষয়ে এক কর্মকর্তা বলেন, ‘জেনেভায় কর্মরত রাষ্ট্রদূত সুফিয়ুর রহমান অত্যন্ত দক্ষ ও যোগ্য অফিসার হিসেবে পরিচিত। তার মেয়াদ না বাড়িয়ে তাকে ডেকে পাঠানো হয়েছে।’

একইভাবে ডিসেম্বরে মেয়াদ শেষ হবে দিল্লিতে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত মুস্তাফিজুর রহমান, লন্ডনে সাইদা মুনা তাসনিম ও ব্রাসেলসে মাহবুব হাসান সালেহ এবং নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের স্থায়ী প্রতিনিধি মোহাম্মাদ আব্দুল মুহিতের। তারা সবাই দক্ষ অফিসার হিসেবে পরিচিত। তাদের মেয়াদ বাড়ানো হবে কিনা, সেটি এখনও বলা যাচ্ছে না, উল্লেখ করেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এই কর্মকর্তা।

রাষ্ট্রদূত যেভাবে নিয়োগ হয়

রাষ্ট্রদূত নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রথমে যোগ্য ব্যক্তিকে নির্ধারণ করা হয়। কোন দেশে পাঠানো হবে এবং অভিজ্ঞতা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপ করে সম্ভাব্য রাষ্ট্রদূতের নাম ঠিক করেন পররাষ্ট্র সচিব। মন্ত্রী ও সচিবের মতের মিলের ভিত্তিতে নির্দিষ্ট দেশে রাষ্ট্রদূত নিয়োগ সংক্রান্ত একটি সামারি প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়। প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের পর নির্দিষ্ট ওই দেশকে রাষ্ট্রদূত নিয়োগের বিষয়টি জানিয়ে তাদের অনুমোদন (যেটিকে এগ্রিমো বলা হয়) চাওয়া হয়। নির্দিষ্ট দেশের কাছে অনুমোদনের বিষয়টি অত্যন্ত গোপনীয়তার সঙ্গে করা হয়। কারণ, বিদেশি রাষ্ট্র এগ্রিমো না দিলে রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ দেওয়া যায় না।

এ বিষয়ে সরকারের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘বিদেশি রাষ্ট্রের অনুমোদনের বিষয়টি শুধু রাষ্ট্রদূতের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। দূতাবাসের অন্য কোনও কর্মকর্তার জন্য অনুমোদনের প্রয়োজন হয় না এবং এর কারণও রয়েছে।

অনুমোদন প্রক্রিয়াটি গোপনে কেন করা হয়, জানতে চাইলে আরেকজন কর্মকর্তা বলেন, ‘যেকোনও রাষ্ট্র কারণ সাপেক্ষে রাষ্ট্রদূতের অনুমোদন নাও দিতে পারে। যদি একটি রাষ্ট্র অনুমোদন না দেয়—তাহলে সেটি প্রচার হয়ে যাক, সেটি দুই দেশের কেউই চায় না। গোপনীয়তার কারণে এটি শুধু গুটিকয়েক লোক জেনে থাকেন।’

উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘বেশ কয়েক বছর আগে পশ্চিমা বিশ্বের একটি দেশের রাষ্ট্রদূতের এগ্রিমো চাওয়া হলে— বাংলাদেশ সেটি দিতে অস্বীকার করে। গোপনীয়তার কারণে এটি নিয়ে কোনও কথা হয়নি। একইভাবে বাংলাদেশেরও এক বা দুই জন রাষ্ট্রদূতের এগ্রিমো নিয়ে জটিলতা হয়েছিল।’

যেসব মিশনে পাঠানো হবে নতুন রাষ্ট্রদূত

মেয়াদ শেষ হওয়া রাষ্ট্রদূতদের কর্মস্থল হচ্ছে—জাপান, ইতালি, কানাডা, জার্মানি, সুইজারল্যান্ড, গ্রিস, কুয়েত, থাইল্যান্ড, পোল্যান্ড ও ইরাক। এরমধ্যে বাংলাদেশের জন্য বিভিন্ন কারণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে টোকিও, রোম, অটোয়া, বার্লিন ও জেনেভা। এসব মিশনে সাধারণত প্রথম রাষ্ট্রদূত হচ্ছেন—এমন কাউকে পাঠানো হয় না। অর্থাৎ অভিজ্ঞ ও জ্যেষ্ঠদের পাঠানো হয়ে থাকে।

এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘ওইসব দেশে পেশাদার কূটনীতিকদের মধ্যে যারা এক বা একাধিক দেশে রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করেছেন, কেবল তাদের যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। এক্ষেত্রে ১৫ ও ১৭ বিসিএস ব্যাচের কর্মকর্তারা অগ্রাধিকার পেতে পারেন।’

অন্য পাঁচটি দেশের ক্ষেত্রে ১৭, ১৮ বা ২০ বিসিএস ব্যাচের কর্মকর্তাদের বিবেচনায় নেওয়া হতে পারে বলে তিনি জানান।(বাংলা ট্রিবিউন)




আরো






© All rights reserved © outlookbangla

Developer Design Host BD