বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ০২:৩৩ অপরাহ্ন




ডব্লিউটিওর মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলন

ডব্লিউটিওর মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলন: ওষুধে মেধাস্বত্বের সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা বাড়লো

আউটলুক বাংলা রিপোর্ট
  • প্রকাশের সময়: শুক্রবার, ৮ মার্চ, ২০২৪ ৫:৫০ pm
ব্যবসা Model মডেল medical stores store dispensary drugstore ড্রাগস্টোর ডিসপেনসারি ফার্মেসি pharmacy Drug chemical Pharmaceutical medication diagnose cure treat Health Medicine ওষুধ ঔষধ রাসায়নিক চিকিৎসা
file pic

স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে উত্তরণের পর আরও ছয় বছর ওষুধশিল্পে মেধাস্বত্বে অব্যাহতির দাবি তুলেছিল বাংলাদেশসহ কয়েকটি দেশ। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এবারের বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা-ডব্লিউটিওর সম্মেলনে এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। তবে বিষয়টি সংস্থার ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠকে পর্যালোচনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এরপর ডব্লিউটিওর সাধারণ পরিষদের সুপারিশের ভিত্তিতে মন্ত্রী পর্যায়ের পরবর্তী সম্মেলনে আসতে পারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। পরবর্তী সম্মেলন ২০২৬ সালে। অর্থাৎ মেধাস্বত্বে অব্যাহতির চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত পেতে অপেক্ষা করতে হবে আরও দুই বছর।

ডব্লিউটিওর মন্ত্রী পর্যায়ের এবারের সম্মেলন গত ২৬ ফেব্রুয়ারি সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজধানী আবুধাবিতে শুরু হয়। গত ২৯ ফেব্রুয়ারি সম্মেলন শেষ হওয়ার কথা থাকলেও বেশ কিছু ইস্যুতে সদস্য দেশগুলো ঐকমত্যে পৌঁছাতে না পারায় সম্মেলনের সময় এক দিন বাড়ানো হয়। ১ মার্চ আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মেলন শেষ হলেও অমীমাংসিত বিভিন্ন বিষয়ে ২ মার্চ সকাল পর্যন্ত আলোচনা চলে। এরপর সম্মেলনের যৌথ ঘোষণা দেওয়া হয়। এতে ওষুধশিল্পে মেধাস্বত্বসহ অন্যান্য বিষয় উল্লেখ করা হয়।

স্বল্পোন্নত বা এলডিসি হিসেবে বাংলাদেশ দীর্ঘদিন ধরে ওষুধশিল্পে মেধাস্বত্ব-সম্পর্কিত ট্রেড রিলেটেড অ্যাসপেক্টস অব ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি রাইটস-ট্রিপস চুক্তি পরিপালনে অব্যাহতি পেয়ে আসছে। এলডিসিভুক্ত দেশগুলো ২০৩২ সাল পর্যন্ত এ সুবিধা পাবে। তবে ২০২৬ সালে বাংলাদেশ এলডিসির তালিকা থেকে বের হলে এ সুবিধা প্রত্যাহার হয়ে যাবে। বিশ্লেষকদের মতে, সাম্প্রতিক বিশ্বপরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে ও টেকসই উন্নয়নের স্বার্থে এলডিসি থেকে বের হলেও স্বল্পমূল্যে ওষুধ সরবরাহ করতে বাংলাদেশের ওই সুবিধা আরও বেশ কয়েক বছর দরকার। এমন বাস্তবতায় বিশ্ব ডব্লিউটিওর সদ্যসমাপ্ত মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনে ২০৩২ সাল পর্যন্ত ওষুধশিল্পে মেধাস্বত্বে অব্যাহতি চেয়েছিল বাংলাদেশসহ এলডিসি থেকে উত্তরণের পথে থাকা দেশগুলো।

বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) এক হিসাবে দেখা গেছে, ওষুধশিল্পে ট্রিপস সুবিধা না থাকলে দেশে উৎপাদিত অন্তত ২০ শতাংশ ওষুধে পেটেন্ট প্রযোজ্য হবে। এ ছাড়া পরবর্তী সময়ে আবিষ্কৃত নতুন নতুন ওষুধেও পেটেন্ট প্রযোজ্য হওয়ায় দাম বেড়ে যাবে। এ কারণে দেশে বহুল ব্যবহৃত ইনসুলিন তৈরিতে খরচ আট গুণ পর্যন্ত বাড়বে।

জেনেভার স্থায়ী মিশনের মিনিস্টার কমার্শিয়াল ও সম্মেলনে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের সদস্য দেবব্রত চক্রবর্তী বলেন, উত্তরণের পরও অন্তত তিন বছর শুল্ক ও কোটামুক্ত সুবিধা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি ওষুধশিল্পে মেধাস্বত্বে অব্যাহতির মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়টি বেশ অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এ ক্ষেত্রে মেয়াদ বাড়ানোর সরাসরি কোনো ঘোষণা আসেনি। তবে বিষয়টি পর্যালোচনার জন্য ওয়ার্কিং গ্রুপের (সাব-কমিটি) বৈঠকে আলোচনা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। শিগগির এ গ্রুপ অধিবেশন আহ্বান করে সার্বিক প্রেক্ষাপটে বিষয়টি পর্যালোচনা করে সাধারণ পরিষদে একটি প্রতিবেদন জমা দেবে। ওই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে সাধারণ পরিষদের সুপারিশের আলোকে পরবর্তী মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হতে পারে।

তিনি আরও বলেন, ওষুধশিল্পে মেধাস্বত্বে অব্যাহতির মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত না এলেও এ ক্ষেত্রে বিরোধ নিষ্পত্তি আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে সংযত আচরণ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। অর্থাৎ তিন বছর এ ক্ষেত্রে কিছুটা বিচ্যুতি ঘটলেও তেমন কোনো সমস্যা হবে না। তবে সার্বিকভাবে মেয়াদ বাড়লে ভালো হতো। আগামী সম্মেলনে এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত আদায়ে তৎপরতা বাড়ানো হবে।

বাংলাদেশ ওষুধ শিল্প সমিতির মহাসচিব এবং হাডসন ফার্মাসিউটিক্যালসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এম শফিউজ্জামান বলেন, মেধাস্বত্বে অব্যাহতি প্রত্যাহার হলে এর প্রভাব অবশ্যই পড়বে। তবে এটি ডব্লিউটিওর সিদ্ধান্ত হওয়ায় এর বাইরে তেমন কিছু করার নেই। ইতোমধ্যে ওষুধশিল্প সক্ষমতা অর্জন করেছে। তাই এর প্রভাব মোকাবিলায় সক্ষম এ খাত। তবে এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে ওষুধশিল্পের টেকসই উন্নয়নে অব্যাহতির মেয়াদ বাড়ানোর তৎপরতার পাশাপাশি সরকারের কাছে নীতিগত সহায়তা চান তিনি। [সমকাল]




আরো






© All rights reserved © outlookbangla

Developer Design Host BD