জনকল্যাণ সংস্থা আঞ্জুমানে মুফিদুল ইসলাম আয়োজিত দোয়া ও ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। গতকাল বিকালে আমন্ত্রণ অনুযায়ী মন্ত্রী হাজিরও হয়েছিলেন রাজধানীর কাকরাইলে অবস্থিত আঞ্জুমান জেআর টাওয়ারে। কিন্তু তিনি দোয়া ও ইফতার মাহফিলে অংশ নেননি। ভবনের নিচ তলায় আঞ্জুমান পরিচালিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন প্রদর্শনী ঘুরে দেখেন অর্থমন্ত্রী।
সেখানে আঞ্জুমান নেতৃবৃন্দের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। প্রদর্শনী দেখার পর মন্ত্রী অনুষ্ঠানস্থলে এসে অতিথিদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করে ফিরে যান। পরে ইফতার মাহফিলে আঞ্জুমান নেতৃবৃন্দ জানান, দাওয়াত রক্ষা করতে অর্থমন্ত্রী এসেছিলেন। কিন্তু ইফতার মাহফিল করার ক্ষেত্রে সরকার প্রধানের নির্দেশনা থাকায় তিনি এই মাহফিলে অংশ নেননি।
ব্যয় সংকোচনের অংশ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারি খরচে ইফতার পার্টি না করার নির্দেশনা দিয়েছেন। পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকেও এ ধরনের আয়োজন না করে এজন্য বরাদ্দকৃত অর্থ দরিদ্রদের মাঝে ব্যয় করার আহ্বান জানিয়েছেন।
ইফতার মাহফিলের শুরুতে আঞ্জুমানের ট্রাস্টি ও সহ-সভাপতি আজিম বখ্শ মাইকে ঘোষণা করেন- আমাদের প্রধান অতিথি অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী আসলেও সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী ইফতার মাহফিলে যোগ দিতে পারছেন না। তবে তিনি আমাদের দোয়া ও ইফতার মাহফিলের জন্য শুভকামনা জানিয়েছেন।
আঞ্জুমানের ইফতার মাহফিলে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আঞ্জুমানে মুফিদুল ইসলামের সভাপতি মুফলেহ আর ওসমানী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. শামসুল আলম, ইফতার মাহফিল আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক মোরশেদ আহমেদ চৌধুরী প্রমুখ।
স্বাগত বক্তব্যে সহ-সভাপতি আজিম বখ্শ আঞ্জুমানের বিভিন্ন কার্যক্রম তুলে ধরেন। তিনি বলেন, আঞ্জুমানের সেবামূলক কার্যক্রম গতিশীল রাখতে দাতা ও স্বেচ্ছাসেবকরা কাজ করে যাচ্ছেন।
বেওয়ারিশ লাশ দাফন ছাড়াও কারিগরি শিক্ষা ও চিকিৎসায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে আঞ্জুমান। দাতাদের দেয়া অনুদানে এই মুহূর্তে আমাদের বেশ কয়েকটি প্রকল্প চলমান রয়েছে। প্রকল্পগুলো সঠিকভাবে পরিচালনা করতে আমি সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।
রমজানের আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রফেসর ড. মো. শামসুল আলম বলেন, আমাদের বৈষয়িক উন্নতি হলেও মূল্যবোধ কমে গেছে। সমাজের নৈতিক মান কমে গেছে। রমজানে অন্যান্য দেশে নিত্যপণ্যের দাম কমলেও আমাদের দেশে ব্যবসায়ীরা বসে থাকেন দাম বৃদ্ধির জন্য। কারণ আমাদের মূল্যবোধ কমে গেছে।
সমাপনী বক্তব্যে মোরশেদ আহমেদ চৌধুরী বলেন, আঞ্জুমানে মুফিদুল ইসলামের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধর্মীয় শিক্ষার পাশাপাশি কারিগরি ও বিজ্ঞান শিক্ষা দেয়া হয়। এখানকার শিক্ষার্থীরা সমাজে বিভিন্ন পর্যায়ে কাজ করে যাচ্ছে। এখানকার শিক্ষার্থীরা অনেকেই এতিম। তাদের মধ্যে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে আঞ্জুমানে মুফিদুল ইসলাম কাজ করছে। এ ছাড়া মানবতার সেবায় এই প্রতিষ্ঠান দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছে। দোয়া ও ইফতার মাহফিল থেকে আঞ্জুমানের সদ্যপ্রয়াত জ্যেষ্ঠ সদস্য ড. মাহবুবুল হকের আত্মার মাগফেরাত কামনায় দোয়া করা হয়।