রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে আসিয়ানের জোরালো ভূমিকা চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৃহস্পতিবার সকালে ব্যাংককে জাতিসংঘ সম্মেলন কেন্দ্রে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে গঠিত ইউএন-এসক্যাপ কমিশনের ৮০তম অধিবেশনে তিনি এই আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, মিয়ানমারে সংঘাত শুরুর পর সেখান থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসেন রোহিঙ্গারা। মানবিক কারণে তাদের আশ্রয়ও দেওয়া হয়েছে। সারা বিশ্বেই এটি মানবিকতার অনন্য উদাহরণ। তবে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে এখন দেরি হচ্ছে। তাদের সম্মানের সঙ্গে ফেরত পাঠাতে হবে। এজন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করতে হবে মিয়ানমারে। আসিয়ানকে এ বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে।
পরে ইউক্রেন-রাশিয়া, ফিলিস্তিন-ইসরাইল-ইরানে সংঘাত বন্ধে বিশ্বনেতাদের প্রতিও আহ্বান জানান শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, যুদ্ধ কোনো সংকটের সমাধান আনতে পারে না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ফিলিস্তিনে গণহত্যা চলছে। নারী ও শিশুরা সবচেয়ে দুর্ভোগের মধ্যে রয়েছে। এটা বন্ধ করতে হবে। গণহত্যা কতটা ভয়াবহ ১৯৭১ সালে আমরা দেখেছি। বিশ্বের যেখানেই থাকি না কেন–ফিলিস্তিনসহ যেসব জায়গায় হত্যা-অবিচার চলছে, তা বন্ধ করতে বলব।’
পরে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় আওয়ামী লীগের ভূমিকার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৮-এর নির্বাচনে জনগণের ভোটে ক্ষমতায় আসে তার দল। তারপর থেকে ধারাবাহিকভাবে সরকারে থাকায় দেশের উন্নয়ন অব্যাহত রয়েছে।
বুধবার থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিনের আমন্ত্রণে ৬ দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে দেশটিতে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। থাইল্যান্ডে পৌঁছালে বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে উষ্ণ অভ্যর্থনায় বরণ করে নেওয়া হয়। থাই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সঙ্গে সংযুক্ত মন্ত্রী পুয়াংপেট চুনলাইদ অভ্যর্থনা জানান। বিমানবন্দরে তাকে গার্ড অব অনার এবং ১৯ রাউন্ড গান স্যালুট দেওয়া হয়।
থাইল্যান্ডে পৌঁছানোর পর শেখ হাসিনা দেশটির প্রধানমন্ত্রী থাভিসিনের সঙ্গে গভর্নমেন্ট হাউসে (প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়) একান্ত দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন, এরপর যৌথ সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেন। সেখানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সম্মানে থাই প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া একটি রাষ্ট্রীয় মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেন। সফরকালে প্রধানমন্ত্রী রাজপ্রাসাদে থাইল্যান্ডের রাজা মহা ভাজিরালংকর্ন ফ্রা ভাজিরাক্লাওচাওয়ুহুয়া এবং রানী সুথিদা বজ্রসুধাবিমলালক্ষণের রাজকীয় দর্শকদের সঙ্গে থাকবেন।
এছাড়া আজ জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি-জেনারেল এবং এসক্যাপের নির্বাহী সচিব আরমিদা সালসিয়াহ আলিসজাবানা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।