ফেনী-নোয়াখালী অঞ্চলের বন্যার ক্ষতি এখনও কাটিয়ে ওঠা যায়নি। এরইমধ্যে দেশের আরেক প্রান্তে দেখা দিয়েছে বন্যা পরিস্থিতি। উজানের ঢলে এবার পানি বেড়েছে তিস্তায়। এতে প্লাবিত উত্তরের চর ও নিম্নাঞ্চল। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে লালমনিরহাটের ৫০ হাজারের বেশি মানুষ। দেখা দিয়েছে খাবার সংকট।
তিস্তা নদীতে উজানের ঢলে লালমনিরহাটে পাকা রাস্তায় কোথাও হাঁটু, কোথাও আবার কোমর পানি। ঘর-বাড়ি তো ডুবেছেই, কোথাও কোথাও বাদ যায়নি ঘরের চালও। বাধ্য হয়ে চরাঞ্চলের মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন অন্য জায়গায়। গবাদি পশুপাখি নিয়ে বন্যার্তরা উচু স্থানে অবস্থান নিয়েছেন। অনেকেই উচু স্থানে চুলা জ্বালিয়ে রান্নার কাজ সারছেন। গতকাল থেকে পানি তোড়ে আসায় নতুন নতুন এলাকায় এখনো পানি প্রবেশ করছে। নলকুপ, টয়লেটে পানি উঠায় বিশুদ্ধ পানি সংকট ও স্যানিটেশন সমস্যায় পড়ছেন তারা।
পানিতে তলিয়ে গেছে গোকুন্ডা ইউনিয়নের রতিপুর এলাকায় অর্ধ কিলোমিটার রেলপথ। পানির তোড়ে ভেসে যায় রেললাইনের পাথর। ফলে দিনভর ঝুঁকি নিয়ে ধীরগতিতে ওই এলাকা দিয়ে ট্রেন চলাচল করে। পরে রেল কর্তৃপক্ষের প্রচেষ্টায় ও পানি কমে যাওয়ায় সেখান দিয়ে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়। এদিকে চলমান বন্যায় নদী এলাকার নিম্নাঞ্চলের বিভিন্ন সড়কের ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। ভাঙন ও ধস রোধে স্থানীয়ভাবে বালু ভর্তি বস্তা ফেলা হয়েছে। অনেক পাকা সড়ক হাঁটু পানিতে প্লাবিত হয়েছে। ফলে চলাচল ব্যাহত হচ্ছে বানভাসী মানুষের।
তিস্তাপাড়ের বাসিন্দা গোলাম রাব্বানী জানান, দুইদিন থেকে পানি বাড়ছিলো। কিছু এলাকায় রাস্তার ওপর দিয়ে পানি যাচ্ছে। এতে যে কোনো সময় রাস্তা ভেঙে যেতে পারে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, শিগরিরই কমবে তিস্তার পানি। লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী শুনিল কুমার রায় জানান, বর্তমানে দেশের সব প্রধান নদ-নদীর পানি সমতল বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আমরা সার্বক্ষণিক খোঁজখবর রাখছি।
এদিকে বানভাসীদের তালিকা করে সহায়তার আশ্বাস জেলা প্রশাসকের। লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক রকিব হায়দার জানান, জেলার বিভিন্ন নিম্নাঞ্চল এলাকা প্লাবিত হয়েছে। আমরা সংশ্লিষ্ট জনপ্রতিনিধিদের কাছে প্লাবিত লোকজনের তালিকা চেয়েছি। সংশ্লিষ্ট ইউএনও তালিকা করছেন। তালিকা যাচাই বাচাই শেষে বন্যার্তদের সাহায্য করা হবে।
প্রসঙ্গত, লালমনিরহাট জেলার পাঁচ উপজেলার ৫০ হাজারের বেশি মানুষ বর্তমানে পানিবন্দি আছেন।