বয়স ২৬ পেরোয়নি, তবু এরমধ্যেই হয়ে গেছেন মহান এক সংগ্রামের একজন নেতা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হিসেবে বাংলাদেশের গণঅভ্যুত্থানে সামনের সারিতে ভূমিকা রাখেন নাহিদ ইসলাম। বাকিটা ইতিহাস, গণতন্ত্রকামী ছাত্র-জনতার বিপুল রক্তের বিনিময়ে এরপরে পতন হয়েছিল বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী এক স্বৈরাচারের।
টাইম ম্যাগাজিনের ‘টাইম-১০০ নেক্সট ২০২৪’ তালিকায় তার নাম এবছর অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। ব্যবসা, বিনোদন, ক্রীড়া, রাজনীতি, বিজ্ঞান, স্বাস্থ্য এবং আরো অনেক বিষয়ে ভবিষ্যৎ গঠনকারী ১০০ জন উঠতি প্রভাবশালীকে তুলে ধরা হয় এই তালিকায়। ২০১৯ সাল থেকে প্রতিবছর এটি প্রকাশ করা হচ্ছে। বিশ্বের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের নিয়ে করা টাইম-১০০ তালিকারই এটি একটি সম্প্রসারণ।
টাইম ম্যাগাজিন নাহিদের সম্পর্কে লিখেছে, আন্দোলনের অনেক নেতার মধ্যে নাহিদ অন্যতম, বাংলাদেশের কুখ্যাত গোয়েন্দা সংস্থার দ্বারা নির্যাতনের শিকার হওয়ার পরে জনমানুষের কাছে তার পরিচিতি আরো বাড়তে থাকে।
নাহিদ ইসলাম যেভাবে ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র হয়ে উঠলেন
সেই নাহিদই ৩ আগস্ট জাতীয় শহীদ মিনারে লাখো জনতার সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের হয়ে এক দফা দাবি ঘোষণা করেন। কী ছিল ঐতিহাসিক একদফা, আজ কারো অজানা নয়। ওইদিন বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে নাহিদ ইসলাম মাইকে সমবেত মানুষের উদ্দেশে বলেন, ‘মানুষের জীবনের নিরাপত্তা ও সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা এক দফা দাবির সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছি। এক দফাটি হলো, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ এই সরকারের পতন ও ফ্যাসিবাদের বিলোপ।’
টাইমকে নাহিদ বলেছেন, ‘কেউ ভাবতেও পারেনি তাকে (হাসিনাকে) উৎখাত করা সম্ভব হবে।’ কিন্তু তাই করে দেখায় মুক্তিকামী জনতা, দেশব্যাপী তীব্র বিক্ষোভের মুখে ৫ আগস্ট ভারতে পালিয়ে যান হাসিনা।
তবে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জগুলোই এখন সামনে। নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকারে জেন জি’র দুই উপদেষ্টার একজন নাহিদ। অন্যজন হচ্ছেন আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। টাইম বলেছে, ১৫ বছরের কর্তৃত্ববাদী শাসনে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা যেভাবে ভেঙে পড়েছে, এখন তাকে মেরামতের চ্যালেঞ্জ নিতে হচ্ছে নতুন সরকারকে।
এবিষয়ে নাহিদের ভাষ্য, ‘আমাদের নতুন প্রজন্মের পালস বুঝতে হবে। বাংলাদশে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সহিংসতার যে পালাক্রম– অবশ্যই তার অবসান হতে হবে। আমাদের সামনে এগিয়ে যেতে হবে।’