শনিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:১৫ অপরাহ্ন




ভোলায় ১০৭ ডিলার পলাতক, ৫০ হাজার দরিদ্রের চাল পড়ে আছে গুদামে

আউটলুক বাংলা রিপোর্ট
  • প্রকাশের সময়: শুক্রবার, ৪ অক্টোবর, ২০২৪ ৫:১৮ pm
rice বস্তা rice Cooked rice steaming boiling boiled rice চাল চাউল ধান ভাত অন্ন চাল খাবার প্রধান খাদ্য রান্না সিদ্ধ সেদ্ধ Panta Ilish Panta_Ilish Cooked rice steaming boiling boiled rice Panta bhat Hilsa Fish Fried পান্তা ইলিশ চাল চাউল ধান ভাত অন্ন চাল খাবার প্রধান খাদ্য রান্না সিদ্ধ সেদ্ধ পান্তা ভাত পহেলা বৈশাখ বাংলা নববর্ষ ইলিশ ভাজা মাছ
file pic

ভোলায় সুলভ মূল্যে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল কিনতে পারেনি প্রায় ৫০ হাজার হতদরিদ্র পরিবার। ১৫ টাকা কেজি দরে মাসে ৩০ কেজি চাল কিনতে পারতেন তারা। চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে সেই চাল কিনতে না পারায় অনাহারে-অর্ধহারে দিন কাটছে এসব পরিবারের।

গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ভোলা থেকে পালিয়ে আত্মগোপন চলে গেছেন খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ১০৭ জন ডিলার। এর পর জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক দপ্তর সেসব শূন্য পদে নতুন ডিলার নিয়োগ দিতে ব্যর্থ হয়। এ কারণে ১৫ টাকা কেজি দরে চাল কিনতে পারেনি খাদ্যবান্ধবের কার্ডধারী পরিবারগুলো।

সরেজমিনে জেলা শহরের আলীয়া মাদরাসা সংলগ্ন ভোলার সরকারি খাদ্য গুদামে গিয়ে যায়, ডিলার না থাকায় বিতরণ করা হয়নি খাদ্যবান্ধবের কয়েক হাজার টন চাল। অথচ গুদামে পড়ে থাকা এসব চাল যাওয়ার কথা ছিল দরিদ্রদের ঘরে।

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, খাদ্যবান্ধবের ডিলারদের মধ্যে ভোলার সদর উপজেলার ৩৪ জন ডিলারের মধ্যে ২৩ জন পলাতক। লালমোহনের ২৬ জনের মধ্যে ২৬ জনই পলাতক, চরফ্যাশন উপজেলার ৫০ জনের মধ্যে ৫০ জন, এবং মনপুরা উপজেলার ৮ জনের সবাই পলাতক আছেন।

ভোলা সদর উপজেলার দক্ষিণ দিঘলদী ইউনিয়নের বালিয়া গ্রামের খাদ্যবান্ধবের কার্ডধারী আয়েশা খাতুন জানান, স্বামী মইররা গেছে গত বছর। আমার এক ছেলে ২ দুই মেয়ে। ছেলে দিনমজুর, একদিন কামাই করলে অন্যদিন কাজ পায় না। সরকারিভাবে ১৫ টাকা দামে ৩০ কেজি চাল কিনে আগে এক থেকে দেড়মাস পার করতে পারতাম। কিন্তু গত মাসে আমাগরে চাল দেওয়ার ডিলার চলে যাওয়াতে তার কাছ থেকে চাল কিনতে পারিনি। অনেক কষ্টে ৩ পোলাইন লইয়া খাইয়ে না খাইয়ে দিন কাটাইতাছি। বাজারে চালের দাম অনেক বেশি। বাজার থেইকা কিইন্না খাওয়ার সামর্থ্য নাই আমাদের।

ভেদুরিয়া ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের চরভেদুরিয়া গ্রামের খাদ্যবান্ধবের কার্ডধারী বৃদ্ধ মো. আব্দুল কাদের জানান, সরকারি ঘরে বৃদ্ধ স্ত্রী ও দুই নাতীন নিয়ে বসবাস করেন তিনি। তার কোনো ইনকাম নেই। খাদ্য বান্ধবের ১৫ টাকা কেজি দরে চাল কেনার একটা কার্ড আছে তার। ওই কার্ড দিয়ে ডিলারের কাছ থেকে প্রতি দুই মাসের মাথায় একবার চাল কিনতেন তিনি। কিন্তু গতমাসে তা কিনতে পারেননি তিনি। তার ছেলে জেলের কাজ করে। তার নিজেরাই চলতে কষ্ট হয়। তারপরেও বাবাকে যা দেন সেটুকু নিয়েই কোনোরকম চলছেন আব্দুল কাদের।

ভেদুরিয়া ইউনিয়নের শারীরিক প্রতিবন্ধী মো. সামসুদ্দিন জানান, আগে ১৫ টাকা কেজি করে রেশন কার্ডের চাল পাইতাম। গতমাসে চাল না পাওয়ায় ডিলারের বাড়িতে গেছিলাম। তারে জিজ্ঞেস করছি আমাগরে চাল দেন না কেন। বলে এখন আর আমরা চাল দিমু না। নতুন যারা আসবে তারা দিবে। ডিলার না থাকার কারণে এখন আর চাল কিনতে পারছি না।

কার্ডধারী ইয়ানুর বেগম জানান, ছেলেরা বিয়াসাদি কইররা ভিন্ন হইয়া গেছে। আমাগরে খাওনখোড়াক দেয় না। আগে রেশন কার্ডের চাল পাইতাম। এখন সেই চাল দেয়াও বন্ধ করে দিছে। চাল না পাওয়ায় খাইতে আমাদের অনেক কষ্ট হইতাছে।

সুরমা বেগম নামে আরেক কার্ডধারী জানান, আমরা যে চাল পাই তা যেন তাড়াতাড়ি দেয় এটাই আমাগো দাবি।

ভোলা জেলা খাদ্য অধিদপ্তরের খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. এহসানুল হক জানান, খালি থাকা ১০৭ জন নতুন করে ডিলার নিয়োগের কাজ চলছে। দ্রুত ডিলার নিয়োগ প্রক্রিয়া কাজ শেষ হবে। নিয়োগ পাওয়া নতুন ডিলাররা খাদ্যবান্ধব কার্ডধারীদের কাছে সেপ্টেম্বর মাসের চাল অক্টোবর মাসে তুলে বিক্রি করতে পারবেন।

তিনি আরও জানান, ১৭২ জন ডিলারের মাধ্যমে ১৫ টাকা কেজি দরে ৩০ কেজি করে চাল পেতেন ৮২ হাজার ৫৪৭ জন। তাদের মধ্যে গত সেপ্টেম্বর মাসের চাল কিনতে পারেনি প্রায় ৫০ হাজার দরিদ্র পরিবার। ঢাকা পোস্ট




আরো






© All rights reserved © outlookbangla

Developer Design Host BD