মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:৩৯ অপরাহ্ন




কর্মক্ষেত্রে নৈতিকতার গুরুত্ব

আউটলুক বাংলা রিপোর্ট
  • প্রকাশের সময়: শুক্রবার, ৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১০:৩২ am
বেকার Office অফিস কার্যালয় দপ্তর exam jobs bd jobs bdjobs Career Circular chakrir khobor recruitment Candidate বেতন চাকরি খবর চাকুরি বাকরি চাকরিজীবী চাকুরে আবেদন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি চাকরী মৌখিক পরীক্ষা প্রার্থী ক্যারিয়ার বিজ্ঞাপন পদ জব সার্কুলার কোম্পানি BCS Examination Bangladesh Public Service Commission বিসিএস পরীক্ষা বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন Bangladesh Public Service Commission psc বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন পিএসসি BCS Examination Bangladesh Public Service Commission বিসিএস পরীক্ষা বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন Bangladesh Public Service Commission psc বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন পিএসসি JOB
file pic

ইসলামে কর্মক্ষেত্রে নৈতিকতার গুরুত্ব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বিবেচিত। একজন মুসলিম কর্মক্ষেত্রে নৈতিকতার উচ্চমান বজায় রাখতে ও সৎভাবে কাজ করতে বাধ্য। ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে প্রতিটি কাজেই আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের চেষ্টা থাকা উচিত। কুরআন ও হাদিসে কর্মক্ষেত্রের নৈতিকতার বিভিন্ন দিক আলোচনা করা হয়েছে, যা একটি সফল ও উন্নত সমাজ গঠনে সহায়ক।

সত্যবাদিতা ও সততা

ইসলামে সত্যবাদিতা ও সততার প্রতি বিশেষ গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। কর্মক্ষেত্রে সৎ হওয়া, মিথ্যা না বলা এবং প্রতারণা না করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আল্লাহ বলেন, ‘আর তোমরা সত্যবাদীদের সঙ্গে থাক’-(সূরা আত-তাওবা, ৯:১১৯)। এছাড়া রাসূল বলেছেন, ‘সত্যবাদিতা নেক কাজের দিকে নিয়ে যায়, আর নেক কাজ জান্নাতের দিকে নিয়ে যায়’-(সহিহ বুখারি)।

সুতরাং কর্মক্ষেত্রে সততা ও সত্যবাদিতা একজন মুসলিমের আদর্শ হওয়া উচিত।

অঙ্গীকার পূরণ

কর্মক্ষেত্রে দেওয়া অঙ্গীকার ও দায়িত্ব পূরণ করা ইসলামি নৈতিকতার অপরিহার্য অংশ। কুরআনে আল্লাহ বলেন, ‘এবং অঙ্গীকার পূরণ কর; নিশ্চয়ই অঙ্গীকার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হবে’-(সূরা আল-ইসরা, ১৭:৩৪)। রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘যার মধ্যে আমানতদারী নেই, তার মধ্যে ইমান নেই’-(সহিহ মুসলিম)।

ন্যায়বিচার ও ইনসাফ

ইসলামে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার প্রতি বিশেষ গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। কর্মক্ষেত্রে ইনসাফ ও ন্যায়বিচার মেনে কাজ করা আল্লাহর নির্দেশ। কুরআনে বলা হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ ন্যায়বিচার এবং সদাচারণের আদেশ দেন…’-(সূরা আন-নাহল, ১৬:৯০)। এছাড়া কর্মক্ষেত্রে পক্ষপাতিত্ব ও অবিচার করা ইসলামে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

কঠোর পরিশ্রম ও আন্তরিকতা

ইসলামে কাজকে ইবাদত হিসাবে গণ্য করা হয়, যদি তা সৎ উদ্দেশ্যে ও আন্তরিকতার সঙ্গে করা হয়। কুরআনে আল্লাহ বলেছেন : ‘আর মানুষ তার চেষ্টা-প্রচেষ্টার ওপরেই নির্ভরশীল…’-(সূরা আন-নাজম, ৫৩:৩৯)। রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহতায়ালা এমন কর্মীকে ভালোবাসেন, যে কাজ করে তা যথাযথভাবে সম্পন্ন করে’-(সহিহ মুসলিম)।

সহানুভূতি ও সহযোগিতা

কর্মক্ষেত্রে সহকর্মীদের প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়া এবং একে অপরকে সাহায্য করা ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ একটি নির্দেশনা। মুসলিমদের আল্লাহ একে অপরের ভাই হিসাবে বিবেচনা করতে বলেছেন। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা পরস্পরকে সাহায্য কর ন্যায় ও তাকওয়ার কাজে’-(সূরা মায়েদা, ৫:২)। রাসূল (সা.) আরও বলেছে, ‘মুসলিম মুসলিমের ভাই, সে তার প্রতি অত্যাচার করবে না এবং তাকে বিপদে ফেলে দেবে না’-(সহিহ বুখারি)। কর্মক্ষেত্রে এ নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করলে পারস্পরিক সহানুভূতি ও সহযোগিতা বৃদ্ধির মাধ্যমে কর্মক্ষেত্রের পরিবেশ আরও উন্নত ও সৌহার্দ্যময় হয়।

আমানতদারী ও দায়িত্ববোধ

কর্মক্ষেত্রে আমানতদারী এবং নিজের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করা ইসলামে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমানতদারী ইসলামে বিশ্বাসের একটি অঙ্গ হিসাবে বিবেচিত হয়। আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদেরকে আদেশ করেছেন যে, তোমরা আমানতগুলো তাদের উপযুক্তদের নিকট ফিরিয়ে দিবে…’- (সূরা নিসা, ৪:৫৮), রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘প্রত্যেক তোমাদের দায়িত্বশীল এবং তোমাদের প্রত্যেকের কাছে তার অধীনস্থদের ব্যাপারে প্রশ্ন করা হবে’-(সহিহ বুখারি)।

এ থেকে বোঝা যায়, কর্মক্ষেত্রে দায়িত্ববোধ এবং আমানতদারী থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিজের কাজের প্রতি দায়িত্বশীল থাকা, আমানতের মর্যাদা রক্ষা করা এবং অনৈতিক কাজ থেকে বিরত থাকা ইসলামের মূল শিক্ষা।

ধনী-গরিব বৈষম্য না করা

ইসলাম সব মানুষের মধ্যে সাম্যের ওপর গুরুত্ব দেয় এবং শ্রেণি বা সম্পদের ভিত্তিতে পার্থক্য করতে নিষেধ করে। কর্মক্ষেত্রেও ইসলাম সব ধরনের বৈষম্য পরিহারের শিক্ষা দেয়। আল্লাহ বলেন, ‘হে মানবজাতি! আমি তোমাদেরকে এক পুরুষ এবং এক নারী থেকে সৃষ্টি করেছি এবং তোমাদেরকে বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে বিভক্ত করেছি, যাতে তোমরা একে অপরকে চিনতে পার।…’-(সূরা হুজুরাত, ৪৯:১৩)। অন্যদিকে রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহর কাছে সব থেকে মর্যাদাশীল হলো সে, যে আল্লাহকে বেশি ভয় করে’- (সহিহ বুখারি)। সুতরাং, কর্মক্ষেত্রে মর্যাদা ও দায়িত্ব প্রদানে কোনো ব্যক্তির আর্থিক অবস্থা বা জাতি-গোত্রের ভিত্তিতে বৈষম্য না করে কাজ করতে হবে।

দায়িত্ব পালনে ভারসাম্য

ইসলামে কর্মক্ষেত্রের সঙ্গে পারিবারিক ও সামাজিক দায়িত্ব পালনের ভারসাম্য বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আল্লাহর প্রতি দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি পারিবারিক ও সামাজিক কর্তব্যও সমানভাবে গুরুত্ব বহন করে। কুরআনে বলা হয়েছে, ‘তোমরা তোমাদের আপনজনদের আগুন থেকে রক্ষা কর…’- (সূরা তাহরিম, ৬৬:৬)। এছাড়া রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের প্রত্যেককে তার পরিবার ও অধীনস্থদের দায়িত্ব নিতে হবে’-(সহিহ বুখারি)। এ শিক্ষাগুলো একজন মুসলিমকে কর্মক্ষেত্রে যেমন তার দায়িত্ব পালন করতে উৎসাহিত করে, তেমনি পরিবার এবং সমাজের প্রতি তার দায়িত্ব স্মরণ করিয়ে দেয়।
(যুগান্তর)




আরো






© All rights reserved © outlookbangla

Developer Design Host BD