বুধবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:০১ পূর্বাহ্ন




সংযত জিহ্বা আল্লাহর নেয়ামত

আউটলুক বাংলা রিপোর্ট
  • প্রকাশের সময়: শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১১:১৪ am
namaz namaj salat নামাজ সালাত Baitul Mukarram National Mosque-বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদ-Outlookbangla.com-আউটলুকবাংলা ডটকম গুলশানে মুহিতের প্রথম জানাজা সম্পন্ন dua দোয়া দু'আ doa dua দোয়া দুআ masjid masazid maszid islam azan dua doa ajan আজান দোয়া আযান মাসজিদ মাসাজিদ ইসলাম
file pic

আল্লাহতায়ালার প্রিয় বান্দাদের একটা বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো, যখন কোনো অপরিণামদর্শী মূর্খ ব্যক্তি তাদের অহেতুক কাজকর্ম, কথাবার্তা কিংবা ঝগড়াঝাঁটির দিকে আহ্বান করে, তারা এতে সাড়া দেয় না। বরং উত্তম পন্থায় এগুলো এড়িয়ে চলে। নিজের আঁচলকে মূর্খতাসুলভ বিষয় থেকে বাঁচিয়ে রাখে। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘তাদের যখন কোনো মূর্খ ব্যক্তিরা সম্বোধন করে, তখন তারা বলে সালাম।’ (সূরা ফুরকান, আয়াত: ৬৩)। এখানে ‘সালাম’ বলে প্রচলিত সালাম উদ্দেশ্য নেওয়া হয়নি, বরং নিরাপত্তার কথাবার্তা বোঝানো হয়েছে। অর্থাৎ মূর্খদের জবাবে তারা নিরাপত্তার কথা বলে, যেন অন্যরা কষ্ট না পায় এবং নিজেরা গুনাহগার না হয়।

প্রকৃতপক্ষে সবকিছুর সম্পর্ক জবানের সঙ্গে। জবানকে হেফাজত করতে পারলে নিজেকে সব ধরনের পাপ-পঙ্কিলতা, বিপদাপদ ও বালা-মুসিবত থেকে বাঁচিয়ে রাখা যায়। এজন্য রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘নাজাত পায় সে, চুপ থাকে যে।’ (জামে তিরমিজি, হাদিস : ২৫০১)।

হজরত আয়েশা সিদ্দিকা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা.) বলেন, ‘মানুষের প্রতিটি কথা তার জন্য অপকারী, উপকারী নয়। কেবল সৎকাজের আদেশ, অসৎ কাজ থেকে নিষেধ এবং আল্লাহর জিকির তার জন্য লাভজনক।’ (জামে তিরমিজি, হাদিস : ২৪১২)। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি স্বীয় জিহ্বা সংযত রাখে, আল্লাহ তার দোষত্রুটি ঢেকে দেন। যে নিজের রাগ নিয়ন্ত্রণ করে, আল্লাহ তাকে শাস্তি থেকে রক্ষা করেন। আর যে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে, আল্লাহ তাকে ক্ষমা করেন।’ (মুসনাদে আবি ইয়ালা, হাদিস : ৪৩৩৮)। হজরত আনাস ইবনে মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা.) বলেন, ‘সুসংবাদ ওই ব্যক্তির জন্য, যে তার প্রয়োজনাতিরিক্ত সম্পদ আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় করে এবং অনর্থক কথাবার্তা থেকে বিরত থাকে।’ (মুসনাদে বাজ্জার, হাদিস : ৬২৩৭)। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা.) বলেন, ‘কোনো ব্যক্তির ইসলামের সৌন্দর্য হলো অনর্থক আচরণ পরিত্যাগ করা।’ (জামে তিরমিজি, হাদিস : ২৩১৭)।

সাহাবায়ে কেরামের বক্তব্য : জিহ্বা সংযত রাখার ব্যাপারে সাহাবায়ে কেরাম থেকে অনেক বক্তব্য বর্ণিত হয়েছে। কয়েকটি উল্লেখ করা হলো, হজরত আনাস ইবনে মালেক (রা.) বলেন, ‘কোনো ব্যক্তি যতক্ষণ না স্বীয় জিহ্বা সংযত রাখতে পারবে, খোদাভীতির হক আদায় করতে পারবে না।’ হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, ‘সব সময় উত্তম কথা বলো, তাহলে উপকৃত হবে। অহেতুক কথাবার্তা বর্জন করো, তাহলে লজ্জা ও বিপদাপদ থেকে রক্ষা পাবে।’ হজরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) বলেন, ‘স্বীয় জিহ্বা এমনভাবে সংযত রাখ, যেমন টাকা-পয়সা সযত্নে রাখ।’ হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, ‘কোনো ব্যক্তির জন্য পাঁচটি স্বভাব স্বর্ণ রুপার চেয়ে বেশি মূল্যবান। ১. অপ্রয়োজনীয় কথা না বলা। ২. প্রয়োজনীয় বিষয়ে অহেতুক কথা না বলা। ৩. কোনো মূর্খের সঙ্গে বিতর্কে লিপ্ত না হওয়া। ৪. অনুপস্থিত কারও ব্যাপারে এমন কথা বলা, যা সে নিজের ব্যাপারে শুনতে চায়। ৫. এমনভাবে কাজ করা, যেন এ বিশ্বাস থাকে যে, ভালো কাজের প্রতিদান দেওয়া হবে এবং মন্দ কাজের জন্য শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে।’ (মাউসুয়াতু রাসায়েল)।

উপর্যুক্ত হাদিস ও সাহাবায়ে কেরামের বক্তব্য থেকে এটাই প্রমাণিত হয়, সে ব্যক্তিই জগতের বিপদাপদ ও বালা-মুসিবত থেকে রক্ষা পায়, যে তার জিহ্বা সংযত রাখতে পারে। আল্লাহতায়ালা আমাদের সবাইকে জবানের হেফাজত করার তওফিক দান করুন। আমিন।(যুগান্তর)




আরো






© All rights reserved © outlookbangla

Developer Design Host BD